আবাসের টাকা পেয়েই অনেকে মারা গিয়েছেন, রয়েছেন পরিযায়ী শ্রমিকও
বর্তমান | ৩০ জুলাই ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কৃষ্ণনগর: টাকা পাওয়ার পরেই মারা গিয়েছেন বাংলার বাড়ি প্রকল্পের বহু উপভোক্তা। কেউ আবার পরিযায়ী শ্রমিক হিসেবে বাইরের রাজ্য কাজ করছেন। যার ফলে অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকলেও বাড়ি তৈরির কাজে হাত দিতে পারেননি। এছাড়া জমি জটিলতার কারণেও বাংলার বাড়ি প্রকল্পের বহু উপভোক্তা বাড়ি শুরু করতে পারেননি। নদীয়া জেলাজুড়ে এরকম উপভোক্তার সংখ্যা ৯১। এঁদের চিহ্নিত করেছে নদীয়া জেলা প্রশাসন। তাঁরা যাতে কাজ শুরু করেন, তা বলা হচ্ছে। পাশাপাশি উপভোক্তাদের সমস্যার সমাধানও করা হচ্ছে। যদিও এই তালিকায় টাকা পেয়ে মারা যাওয়া উপভোক্তার সংখ্যাই বেশি। সেইসব ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট উপভোক্তার পরিবর্তে কে ঘরের মালিক হবেন, তা ঠিক করা হচ্ছে। সেইসঙ্গে তিন শতাধিক উপভোক্তা রয়েছেন, যাঁরা বাড়ির তৈরির প্রাথমিক কাজ শেষ করতে পারেননি। তাঁদেরও শোকজ করে বাড়ি তৈরি করতে বলছে প্রশাসন। উল্লেখ্য, আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই দ্বিতীয় দফার বাংলার বাড়ি প্রকল্পের টাকা ঢুকতে শুরু করবে। তার আগে প্রথম দফার সকল উপভোক্তাই যাতে বাড়ি তৈরির কাজ সুনিশ্চিত করতে পারে সেই দিকেই নজর দেওয়া হচ্ছে।
নদীয়ার অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) অনুপকুমার দত্ত বলেন, বেশি কিছু উপভোক্তা এখনও বাড়ি তৈরি শুরু করেননি। তাঁদের সমস্যার সমাধান করা হচ্ছে। পাশাপাশি তাঁরা যাতে দ্রুত বাড়ি শুরু করতে পারেন, সেই দিকেও নজর দেওয়া হচ্ছে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ৯১ জন উপভোক্তার মধ্যে ৪৫ জন টাকা পাওয়ার পর মারা গিয়েছেন। যার ফলে টাকা তাঁদের অ্যাকাউন্টেই পড়ে রয়েছে। সে ক্ষেত্রে অনেক সময়ে টাকা তোলা নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হচ্ছে। যার ফলে বাড়ি তৈরির কাজ শুরু করতে পারেননি। এছাড়াও অনেক উপভোক্তা টাকা পাওয়ার পর অন্য রাজ্যে কাজে চলে গিয়েছেন। স্ত্রীর পক্ষে বাড়ি তৈরির কাজে হাত দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এছাড়াও আট-ন’টি ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, উপভোক্তার জমি জটিলতা রয়েছে। তাঁদের পাট্টা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে ৩৮৮ জন উপভোক্তা বাড়ি তৈরি শুরু করলেও, প্রাথমিক ধাপ অতিক্রম করেননি।
উল্লেখ্য, বাংলার বাড়ির কাজে রাজ্যের মধ্যে শীর্ষস্থানে নদীয়া জেলা। দ্বিতীয় কিস্তির টাকা পাওয়া প্রায় ৬৩ শতাংশ উপভোক্তাই বাড়ি শেষ করেছেন। জেলার এই পারফরম্যান্সে খুশি প্রশাসনের আধিকারিকরা। নদীয়া জেলায় বাংলার বাড়ি প্রকল্পে প্রথম কিস্তির টাকা পেয়েছিলেন ৪৬ হাজার ৩৭৬ জন। ২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসে সেই টাকা দেওয়া হয়েছিল। ২০২৫ সালের মে মাসে দ্বিতীয় কিস্তির টাকা পেয়েছেন ৪৫ হাজার ৮১৮ জন। যার মধ্যে এখনও পর্যন্ত ২৯ হাজার ১৯০ জন উপভোক্তা বাড়ি শেষ করছেন।