ভুয়ো চেক দিয়ে ১৪ লক্ষ টাকার গয়না নিয়ে ফেরার, গ্রেপ্তার এক, পার্ক সার্কাসের হোটেল থেকে উদ্ধার অলংকার
বর্তমান | ৩০ জুলাই ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: ‘বোনের বিয়ের জন্য সোনার হার দেখান’। এই বলে বউবাজারে নামকরা এক স্বর্ণ বিপণির কর্তাদের ফাঁদে ফেলে এক যুবক। প্রায় ১৪ লক্ষ টাকার সোনার গয়না কিনে চেক ধরিয়ে দেয় ঝাড়খণ্ডের ওই বাসিন্দা। সেই চেক ব্যাঙ্কে দিতেই চক্ষু চড়কগাছ স্বর্ণ ব্যবসায়ীর। চেকটি ভুয়ো। প্রতারণার অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত নেমে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করল লালবাজার। সল্টলেকের একটি রেস্তরাঁর ওয়াইফাই কানেক্ট করতেই গোয়েন্দাদের র্যাডারে চলে আসে অভিযুক্ত। দ্রুত অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে লালবাজারের ব্যাঙ্ক জালিয়াতি দমন শাখার অফিসাররা। ধৃতের নাম বিজয়ন্ত কুমার সিং (২৯)। ঝাড়খণ্ডের দেওঘরের বাসিন্দা সে।
৩ জুলাই ঘটনার সূত্রপাত। মুচিপাড়া থানা এলাকার একটি স্বর্ণ বিপণিতে গিয়েছিল বিজয়ন্ত। একটি সোনার হার, একটি বালা ও রুপোর কয়েন নেয় সে। বদলে নকল চেক দিয়ে ফেরার হয় অভিযুক্ত। চেকটি জাল জানতে পেরে মুচিপাড়া থানার দ্বারস্থ হন স্বর্ণ বিপণির কর্তারা। মামলার তদন্তভার হাতে নেয় কলকাতা পুলিসের গোয়েন্দা বিভাগ। দোকানের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে অভিযুক্তকে চিহ্নিত করেন তদন্তকারীরা। ভুয়ো চেক দিলেও বিল করার সময় নিজের আসল মোবাইল নম্বর দিয়েছিল অভিযুক্ত। সেই তথ্য ঘেঁটে তদন্তকারীরা জানতে পারেন অভিযুক্ত ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা। কিন্তু সেই মোবাইলের লোকেশন দেখাচ্ছে কখনও সল্টলেক, আবার কখনও কেষ্টপুর অঞ্চলে। এরপর ঘটনার দিন এবং তার আগের কয়েকদিনের কল ডিটেইলস বের করেন তদন্তকারীরা। দেখা যায়, ঝাড়খণ্ড থেকে এসে মধ্য কলকাতার একটি হোটেলে উঠেছিল বিজয়ন্ত। এরপর সংশ্লিষ্ট হোটেলে হানা দেয় পুলিস। সেখানকার রেজিস্ট্রার ঘেঁটে গোয়েন্দারা জানতে পারেন, ঘটনার দিনই হোটেল থেকে চেক আউট করে অভিযুক্ত যুবক। সেই সময় তার লোকেশন ছিল কেষ্টপুর ও সল্টলেক চত্বর। কিন্তু নির্দিষ্টভাবে কোনও অবস্থান স্থির করতে পারেননি তদন্তকারীরা। কারণ মাঝেমধ্যেই মোবাইল ফোন বন্ধ করে দিত অভিযুক্ত।
মোবাইল নম্বরটি ট্র্যাক করতে থাকেন ব্যাঙ্ক জালিয়াতি শাখার তদন্তকারী অফিসাররা। তার সুবাদেই পুলিস জানতে পারে, সল্টলেকের একটি রেস্তরাঁয় অভিযুক্তের মোবাইল ফোনটি ওয়াইফাইতে কানেক্ট হয়েছে। দ্রুত লালবাজারের গোয়েন্দারা ঘটনাস্থলে যান। সেখান থেকেই গ্রেপ্তার করা হয় বিজয়ন্তকে। অভিযুক্তের দেহ তল্লাশি করে আরও একটি হোটেলের চাবি পান পুলিস অফিসাররা। পার্ক সার্কাস এলাকার ওই হোটেলে অভিযান চালিয়ে গোয়েন্দারা সোনার গয়নাগুলি উদ্ধার করেন। সেগুলি আদালতের নির্দেশে স্বর্ণ বিপণির মালিকের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে বলে লালবাজার সূত্রে খবর।