ভোটারদের নাম বাদ এবং ঘুরপথে এনআরসি বাস্তবায়িত করার চক্রান্ত করছে বিজেপি! দীর্ঘদিন ধরেই এই অভিযোগে সরব হয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার বীরভূমের ইলামবাজারে সরকারি পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে ভোটার তালিকা থেকে শুরু করে বাঙালি নির্যাতন, কেন্দ্রীয় বঞ্চনা নিয়ে সরব হন মমতা। তাঁর অভিযোগ, ‘অসম, ওড়িশা, গুজরাত, মধ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ-সহ সমস্ত বিজেপিশাসিত রাজ্যে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের নির্দেশে বাঙালিদের উপর অত্যাচার হচ্ছে! আসলে বাংলায় প্রতিভা, পরিশ্রমের সঙ্গে পেরে উঠছে না বলেই এত অত্যাচার। হিংসার তো কোনও ওষুধ নেই।’
মমতা জানান, ‘এই সকল পরিযায়ী শ্রমিকরা দীর্ঘ ২০-২৫ বছর ধরে অন্যান্য রাজ্যে কাজ করছেন। তাদের সব বৈধ নথি রয়েছে। তা সত্ত্বেও ডিটেনশন ক্যাম্পে আটকে রাখা হচ্ছে, থানায় ঘোরানো হচ্ছে। আমি বলছি, তাঁরা সবাই ফিরে আসুক। চাইলে রাজ্য সরকার গাড়িভাড়াও দেবে। তারপরই বোঝা যাবে, কে সত্যি বলছে, কে মিথ্যে।’ মমতার বার্তা, ‘সবাই নতুন করে ভোটার তালিকায় নাম তুলবেন। আসল লোকের নাম যেন বাদ না যায়। পেছনের দরজা দিয়ে বাংলাতেও এনআরসি চালুর ষড়যন্ত্র করছে বিজেপি। অসমেও হয়েছে, বাংলাতেও ওরা চেষ্টা করছে। কিন্তু প্রাণ থাকতে আমরা বাংলায় এনআরসি হতে দেব না, রুখে দেব। কারও নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ গেলে প্রতিবাদ করবেন, বিএলও-কে বলবেন। এটা আপনার সাংবিধানিক অধিকার, আপনার রক্ষাকবচ। যেসব সংখ্যালঘুরা বাইরে কাজ করেন, তাঁরাও নাম তুলুন।’
এরপরই মঞ্চে উপস্থিত সাংসদ শতাব্দী রায়, অসিত মাল, কোর কমিটির সদস্য অনুব্রত মণ্ডল, কাজল শেখ-সহ জেলার দলীয় নেতৃত্বের উদ্দেশে মমতার বার্তা, রাজনৈতিক স্তরে না হলেও নিজের এলাকায় নাগরিকদের নিয়ে, বিশিষ্টদের নিয়ে প্রতিবাদ গড়ে তুলতে হবে। পাশাপাশি নিজের নিজের এলাকায় নজরদারির নির্দেশও দিয়েছেন দলনেত্রী মমতা। মুখ্যমন্ত্রীর পরামর্শ একটাই, ভোটার তালিকা থেকে একজন প্রকৃত ভোটারও যেন বাদ না যান। সোমবারও বিএলও-দের নিজের দায়িত্ব বুঝিয়ে মুখ্যমন্ত্রী উপদেশ দিয়েছিলেন, ‘খেয়াল রাখবেন যেন একজনও প্রকৃত ভোটারের নাম বাদ না যায়। জনসাধারণকে অযথা হেনস্থা করবেন না।’ মঙ্গলবারের সভা থেকেও একই সুর শোনা গেল মুখ্যমন্ত্রীর গলায়।