আলোর পথ! সুন্দরবনের প্রত্যন্ত গ্রাম পেল পথবাতি, আনন্দে রাতেও রাস্তায় ভিড় মানুষের
আনন্দবাজার | ৩০ জুলাই ২০২৫
আগে ছিল খানাখন্দ ভরে রাস্তা। এখন অবস্থার খানিক উন্নতি হয়েছে। কিন্তু সন্ধ্যা নামার পর কার্যত শুনশান হয়ে যেত রাস্তা। অবশেষে সুন্দরবনের সেই গ্রাম পেল পথবাতি। আলোয় উদ্ভাসিত গোটা গ্রামের রাস্তা। আনন্দে গভীর রাত পর্যন্ত রাস্তায় ভিড় করলেন স্থানীয় মানুষজন। ঘটনাস্থল দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলতলি।
কুলতলির বিভিন্ন গ্রামের মানুষজন বলছেন, সন্ধ্যা নামলেই তাঁরা চরম সমস্যায় পড়তেন। খুব দরকার না-পড়লে রাতে কেউ বাড়ি থেকে বার হতেন না। মহিলারা জানাচ্ছেন, রাতে বাড়ির বাইরে পা দেওয়ার কথা তো ভাবতেই পারতেন না। এমনকি, বাড়ির অদূরে মেয়েকে টিউশনে ছাড়তেও ভয় পেতেন।
সেই কুলতলি আর এই কুলতলির তফাৎ গড়া হল রাতারাতি। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় বসানো হয়েছে পথবাতি। মঙ্গলবার কৃষ্ণা হালদার নামে স্থানীয় এক মহিলা বলেন, “আমরা ভাবতেই পারিনি সুন্দরবনের রাস্তায় রাতে কখনও আলো জ্বলবে!’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘কলকাতায় গিয়ে ‘লাইট’ দেখতাম। এখানে কখনও এমনটা হবে, ভাবিনি।” ভগবতী দাস নামে আর এক মহিলার কথায়, “মেয়েরা টিউশন থেকে ফিরতে ভয় পেত। এখন রাস্তা আলোয় ভরে গিয়েছে। অনেকটাই নিশ্চিন্ত আমরা। আমাদের নিরাপত্তা বাড়ল।” একই অভিজ্ঞতা গ্রামের পুরুষদেরও। বিশ্বনাথ রায় বলেন, “রাতে চলাচলে সমস্যা ছিল। কিছু দেখা যেত না। এখন অনেকটাই সুবিধা হচ্ছে।” আখতার গায়েন জানান, সন্ধ্যা নামলেই চুরি-ছিনতাইয়ের ভয় ছিল। সেই ভয় এ বার গেল।
প্রশাসনের এই কাজে খুশি গোটা এলাকা। তাঁদের দীর্ঘ দিনের চাওয়া আজ বাস্তবায়িত হয়েছে। সেই প্রসঙ্গে কুলতলির বিধায়ক গণেশচন্দ্র মণ্ডলের মন্তব্য, ‘‘২০১১ সালের পর থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে রাজ্য জুড়ে উন্নয়নের কাজ চলছে। কুলতলিতেও তারই প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে। আগামী দিনে আরও কাজ হবে।” তিনি আরও জনান, আলোয় ভরা রাস্তা শুধু কুলতলির নয়, সুন্দরবনের মতো পিছিয়ে থাকা বিস্তীর্ণ এলাকায় উন্নয়নের উদাহরণ।