বৃষ্টি কমলেও জাতীয় সড়কে নতুন করে ভূমিধস, শিলিগুড়ি-সিকিম যোগাযোগে তীব্র যানজট
প্রতিদিন | ৩১ জুলাই ২০২৫
বিশ্বজ্যোতি ভট্টাচার্য, শিলিগুড়ি: মঙ্গলবার রাতে ভারী বৃষ্টি না হলেও ১০ নম্বর জাতীয় সড়কে একাধিক জায়গায় ফের ভূমিধস নেমেছে। ফলে জাতীয় সড়কে পরিস্থিতি ক্রমশ জটিল হচ্ছে। শিলিগুড়ি-কালিম্পং যাতায়াত শুরু হলেও চালু হয়নি শিলিগুড়ি-সিকিম সড়ক যোগাযোগ। বুধবার ঘুরপথে চলাচল করেছে যানবাহন। এদিকে ভূমিধস ও হড়পা বানের ধাক্কায় পানীয়জল সরবরাহ ব্যবস্থা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সিকিমে। তীব্র জলকষ্টে ভুগছে গ্যাংটক। এর মধ্যেই আজ, বুধবার সকালে মৃদু ভূমিকম্পে কেপে ওঠে সিকিম পাহাড়।
মঙ্গলবার সিকিমে ভারী বর্ষণের ‘কমলা’ সতর্কতা জারি হয়েছিল। তবে রাত থেকে বৃষ্টির পরিমাণ কিছুটা কমে। আজ বুধবার দুপুর থেকে তিস্তার জলস্তর নামতে শুরু করেছে বলে খবর। ফলে জাতীয় মহাসড়ক ও পরিকাঠামো উন্নয়ন কর্পোরেশন লিমিটেড (এনএইচআইডিসিএল) তিস্তা বাজার পর্যন্ত ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক খুলে দেয়। এরপর তীব্র যানজটের ফলে সকাল থেকে যানবাহন ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকে। তবে কালিম্পং যাতায়াতের রাস্তা খুলে গেলেও এদিন সকাল সাড়ে ন’টা নাগাদ চিত্রে ও রংপোর মাঝামাঝি তারখোলায় ভূমিধস নামে। পাহাড়ের ঢাল থেকে পাথর, মাটি গড়িয়ে জাতীয় সড়ক অবরুদ্ধ হয়। লিখুভিরের কাছেও ভূমিধস নামে।
এনএইচআইডিসিএল সূত্রে জানা গিয়েছে, ধস সরানোর কাজ চলছে। সন্ধ্যার মধ্যে সিকিমগামী জাতীয় সড়ক খুলে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। এনএইচআইডিসিএলের জেনারেল ম্যানেজার রাহুল কুমার গুপ্ত জানান, এখন পর্যন্ত ১০ নম্বর জাতীয় সড়কে দার্জিলিং-কালিম্পং রুটে যানবাহন চলাচল চালু হয়েছে। তবে স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, জাতীয় সড়কে অস্থায়ী ডাইভারশন কালিম্পংগামী যানবাহন চলাচলে বড় অসুবিধার কারণ হয়েছে। এদিকে ভূমিধসে সিকিমের গ্যাংটক শহর সহ বিস্তীর্ণ এলাকায় পাইপ লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় পানীয় জলকষ্ট তীব্র হয়েছে। গ্যাংটক শহরে একাধিক জায়গায় জলের পাইপ লাইন ফেটেছে। বুধবার সকাল থেকে হালকা বৃষ্টি চলছে সেখানে। তারই মধ্যে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় জলের পাইপ লাইন মেরামতের কাজ শুরু করেছেন জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তরের কর্মীরা।
মঙ্গলবার রাতে মানবীর কলোনির লোয়ার বুরতুকে ভূমিধস নেমে উন্নয়ন এলাকা অবরুদ্ধ হয়েছে। এছাড়াও দক্ষিণ সিকিমের ফোংলায় নামথাং থেকে নামচি পর্যন্ত রাস্তা অবরুদ্ধ হয়েছে। তবে ধরগাঁও, লেগশিপ, হিংডাম, কেউজিং, রাভাংলা রুটে রাস্তা খুলেছে। চোঙ্গায় ভূমিধসের কয়েকটি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভূমিধসে মিরুং গ্রাম থেকে বুসুক সেতুর মধ্যে সড়কের কিছু অবরুদ্ধ হয়েছে। নান্দোকে জল সরবরাহ পাইপ লাইন বিচ্ছিন্ন হয়েছে। এগারো মাইলে পিএমজিএসওয়াই রাস্তা ভূমিধসে অবরুদ্ধ হয়েছে। নাইতামেও পিএমজিএসওয়াই রাস্তা তিন জায়গায় অবরুদ্ধ হয়েছে। এছাড়াও গ্যাংটক শহর সহ বিভিন্ন এলাকায় নিকাশি ব্যবস্থা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিভিন্ন সড়ক অবরুদ্ধ থাকায় পড়ুয়ারা স্কুল-কলেজে যেতে পারছে না। হাটবাজারে যাতায়াত কঠিন হয়েছে। এরই মধ্যে বুধবার সকালে মৃদু ভূমিকম্পে সিকিম কেপে উঠতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল তাদং থেকে ১৪৬ কিলোমিটার দূরে। রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ছিল ৪.২।