• প্রসাধনী পণ্য ব্যবসার আড়ালে জাল আধার-ভোটার তৈরির কারবার, বনগাঁয় গ্রেপ্তার বিজেপি কর্মী!
    প্রতিদিন | ৩১ জুলাই ২০২৫
  • জ্যোতি চক্রবর্তী, বনগাঁ: সামনে প্রসাধনী দ্রব্যের দোকান। আড়ালে চলছিল জাল ভোটার-আধার কার্ড তৈরির কারবার! পুলিশ হানা দিয়ে গ্রেপ্তার করল ওই অভিযুক্ত ব্যবসায়ী রাজকুমার বারুইকে। ধৃত ব্যক্তি এলাকায় বিজেপি কর্মী হিসেবে পরিচিত। ফলে ঘটনা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোড়। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁয়। সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশ, জঙ্গি ঢোকার আশঙ্কা থাকছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও সীমান্ত এলাকায় পুলিশ-প্রশাসনকে কড়া নজরদারির নির্দেশ দিয়েছেন। সম্প্রতি রাজ্যে ভুয়ো ভোটার ইস্যুতে জোর হইচই হয়েছিল। সেই রাজনৈতিক আবহেই এই জাল পরিচয়পত্র তৈরির কারবারের হদিশ মিলেছে।

    বাগদা থানার বাণেশ্বরপুর বাজার এলাকায় ওই ব্যবসায়ীর প্রসাধনী দ্রব্যের দোকান। অভিযোগ, ওই দোকানের আড়ালেই চলত জাল ভোটার ও আধার কার্ড তৈরির কাজকর্ম। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে বাগদা থানার পুলিশ সেখানে হানা দেয়। তল্লাশি চালিয়ে বেশ কিছু জাল আধার কার্ড পাওয়া গিয়েছে। জাল আধার-ভোটার কার্ড তৈরির মেশিনও মিলেছে সেখানে। এরপরই গ্রেপ্তার করা হয় ব্যবসায়ীকে। তদন্তে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দালাল মারফত বাংলাদেশ থেকে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশকারীরা এলাকায় আসে বলে অভিযোগ। সেসব অনুপ্রবেশকারীদের দেশের নকল পরিচয়পত্র তৈরি করে দিত সে। মোটা টাকার বিনিময়ে এই ভুয়ো পরিচয়পত্র তৈরি হত। অভিযোগ, সেইসব নকল পরিচয়পত্র নিয়ে বাংলাদেশিরা ভিন রাজ্যে কাজ করতে চলে যেত।

    কত দিন ধরে এই কারবার চলছিল? কত জাল পরিচয়পত্র ওই ব্যবসায়ীর মাধ্যমে তৈরি হয়েছে? এই চক্রের সঙ্গে কারা জড়িয়ে আছে? একাধিক প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন তদন্তকারীরা। আজ বুধবার ধৃতকে বনগাঁ মহকুমা আদালতে তোলা হয়। ধৃতকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে জেরা করা হবে বলে পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে। এদিকে এই ঘটনায় এলাকায় রাজনৈতিক মহলে জোর গুঞ্জন ছড়িয়েছে। ধৃত ব্যক্তি এলাকায় বিজেপি কর্মী বলে পরিচিত বলে খবর। বিজেপির মিটিং-মিছিলেও তাঁকে দেখা যেত বলে অভিযোগ। বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার তৃণমূল সভাপতি বিশ্বজিৎ দাস বলেন, “বিজেপির লোকজন বিভিন্ন বেআইনি কাজবাজের সঙ্গে যুক্ত। এটাই তার প্রমাণ। এর পিছনে ওদের বড় মাথা আছে৷” অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বিজেপি নেতা স্বপন হাওলাদার। তিনি বলেন, “এর সঙ্গে আমাদের দলের কোনও সম্পর্ক নেই। কেউ যদি অন্যায় করে থাকে, তাহলে আইন আইনের পথে চলবে। বিজেপি কোনও দিন অন্যায়কে প্রশ্রয় দেয় না৷”
  • Link to this news (প্রতিদিন)