আলুচাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হলে ছাড়া হবে না! হিমঘর মালিক এবং আলু ব্যবসায়ীদের কড়া হুঁশিয়ারি মন্ত্রী বেচারামের
আনন্দবাজার | ৩০ জুলাই ২০২৫
‘রাজ্যের আলু চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হলে ষড়যন্ত্রকারীদের ছেড়ে কথা বলব না।’ এ ভাবেই হুঁশিয়ারি দিলেন রাজ্যের কৃষি বিপণনমন্ত্রী বেচারাম মান্না। সম্প্রতি তাঁর দফতর জানতে পারে, হিমঘর মালিক এবং আলু ব্যবসায়ীদের একাংশ অসত্য এবং বিকৃত তথ্য ছড়িয়ে দিয়ে আলুচাষিদের ক্ষতি করে রাজ্য সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে চাইছে। বিষয়টি দ্রুতই জানানো হয় রাজ্যের কৃষি বিপণনমন্ত্রীকে। এই প্রচারের বিরুদ্ধে পাল্টা প্রচারের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি, হিমঘর মালিক এবং আলু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কোনও প্রমাণ পাওয়া গেলে, তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
কৃষি বিপণন দফতরের একটি সূত্র জানাচ্ছে, এ বছর পশ্চিমবঙ্গে আলুর ফলন খুব বেশি হয়নি বলে অপপ্রচার চলছে। তাই বিবৃতি জারি করে কৃষি বিপণন দফতর জানিয়েছে, এ বছর শুধু পশ্চিমবঙ্গেই নয়, উত্তরপ্রদেশ, পঞ্জাবের মতো রাজ্যগুলিতে রেকর্ড পরিমাণে উৎপাদন হয়েছে। ফলে এ বছর মার্চ মাসে মাঠ থেকে আলু তোলার সময়ই আলুর দাম কমে যায়। পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, উত্তরপ্রদেশ ও পঞ্জাবে গত মার্চ মাস থেকে গড়ে আলুর দর কুইন্টালপিছু ৯০০ থেকে ১১০০ টাকা এবং ৬০০ থেকে ৯০০ টাকা ছিল। পশ্চিমবঙ্গে সেই দাম ছিল ৯৫০ টাকা থেকে ১১৪০ টাকা। কৃষকরা যাতে আলুর ন্যায্য দাম পান, সেই কারণে কৃষি বিপণন দফতর জ্যোতি আলুর সংগ্রহমূল্য হিসাবে প্রতি কেজিতে ৯ টাকা ধার্য করে। যদিও কৃষি বিপণন দফতরের দাবি, বাজারে আলুর দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় চাষিরা ধার্য করে দেওয়া দামের থেকেও বেশি দরে বিক্রি করতে পেরেছেন।
এ বছর রাজ্যের ৫১৯টি হিমঘরে ৭০ লক্ষ ৮৫ হাজার মেট্রিক টন আলু সংরক্ষিত করা হয়েছিল। যা বিগত বছরের তুলনায় ১২ লক্ষ মেট্রিক টন বেশি। ফলে কলকাতার বাজারে এ বছর আলুর দাম প্রতি কেজি ২০ টাকা। আর জেলায় জেলায় সেই দর ১৬-১৮ টাকা। কৃষি বিপণন দফতরের অভিযোগ, হিমঘর মালিক এবং আলু ব্যবসায়ীদের একাংশ দাম সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে সরকারপক্ষকে তাঁদের কাছ থেকে আলু কিনতে হবে বলে প্রচার করছে। বাস্তবের সঙ্গে যার কোনও মিল নেই বলেই দাবি রাজ্য সরকারের। পাশাপাশি, ওই অংশ এমনও প্রচার করছেন যে হিমঘর থেকে আশানুরূপ আলু বার হচ্ছে না। যদিও পরিসংখ্যান দিয়ে সরকারের দাবি, এখনও পর্যন্ত ২১ লক্ষ মেট্রিক টন আলু হিমঘর থেকে বাজারে পাঠানো হয়েছে। তাই এই ধরনের প্রচারে যাতে রাজ্যের আলু চাষিরা প্রভাবিত না হন, সেই বিষয়টি নিশ্চিত করতে চাইছে কৃষি বিপণন দফতর।
মন্ত্রী বেচারাম বলেন, ‘‘মিড ডে মিল-সহ সরকারি প্রকল্পগুলিতে সুফল বাংলার মাধ্যমে বেশি করে আলু বিক্রি করা হচ্ছে, যাতে কৃষকেরা লাভের মুখ দেখাতে পারেন।’’