মোহনবাগান মাঠের পরিবর্তে নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়াম। জায়গা বদলে গেলেও মোহনবাগান দিবসকে কেন্দ্র করে উন্মাদনায় ছেদ পড়েনি। সেই একই রকম আবেগের বিস্ফোরণ।
বিরাট মঞ্চের স্ক্রিনে পরপর ফুটে উঠছে ১৯১১ সালের ২৯ জুলাই ইস্ট ইয়র্কশায়ার রেজিমেন্টকে হারিয়ে মোহনবাগানের প্রথম আইএফএ শিল্ড জয়ের ঐতিহাসিক মুহূর্ত থেকে চুনী গোস্বামী, শৈলেন মান্না, চিমা ওকোরি, জেমি ম্যাকলারেন, আপুইয়া, দীপেন্দু বিশ্বাসদের ছবি— সবুজ-মেরুন জনতার ‘জয় মোহনবাগান’ গর্জনে কেঁপে উঠছিল নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়াম।
মোহনবাগান দিবসের উৎসব শুরু হয়ে গিয়েছিল দুপুরেই। ময়দানের ক্লাব তাঁবুতে অমর একাদশের সদস্যদের মূর্তিতে মাল্যদান, পতাকা উত্তোলন এবং প্রাক্তন ফুটবলারদের মধ্যে প্রদর্শনী ম্যাচ। দ্বিতীয় পর্বের অনুষ্ঠান নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে শুরু হওয়ার কথা ছিল বিকেল পাঁচটায়। কিন্তু বৃষ্টি উপেক্ষা করে ঘণ্টাখানেক আগেই চলে এসেছিলেন সমর্থকেরা। কেউ সঙ্গে নিয়ে এসেছেন বৃদ্ধ বাবা-মাকে। কেউ এনেছেন শিশু সন্তানকে। কারও পরণে প্রিয় ক্লাবের জার্সি। কেউ বুকে জড়িয়ে রেখেছিলেন সবুজ-মেরুন পতাকা।
আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছিলেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ও। তিনিই মোহনবাগান রত্ন দেন প্রাক্তন সভাপতি স্বপনসাধন বসুকে (টুটু)। জীবনকৃতি সম্মান নিতে উঠে রাজু মুখোপাধ্যায় বলছিলেন, ‘‘মোহনবাগান আমার কাছে আবেগ। ১৭ বছর বয়সে এই ক্লাবে এসেছিলাম। তার পর থেকেই মোহনবাগান আমার রক্তেমিশে গিয়েছে।’’
বর্ষসেরা ফরোয়ার্ডের পুরস্কার দেওয়া হয় জেমি ম্যাকলারেনকে। বর্ষসেরা ফুটবলার হলেন আপুইয়া। যদিও দুই তারকাই অনুপস্থিত ছিলেন। সেরা প্রতিশ্রুতিমান ফুটবলারের পুরস্কার পেলেন দীপেন্দু বিশ্বাস। সেরা অ্যাথলিটের সম্মান পেলেন অর্চিতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেরা হকি খেলোয়াড়ের পুরস্কার পেলেন অর্জুন শর্মা। সেরা ক্রিকেটার হন রণজ্যোৎ সিং খাইরা। এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মোহনবাগানের সভাপতি দেবাশিস দত্ত, সচিব সৃঞ্জয় বসু, রাজ্যের পাঁচ মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, সুজিত বসু, মনোজ তিওয়ারি, স্নেহাশিস চক্রবর্তী ও বাবুল সুপ্রিয়, সিএবি সভাপতি স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায়, অভিনেতা প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ। শুভেচ্ছাবার্তা পাঠিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছিলেন অমর একাদশের পরিবারের সদস্যরাও।