জলপাইগুড়িতে এডিএমের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ স্ত্রীর, তদন্তে হাসপাতালের কাছে ইনজুরি রিপোর্ট চাইল পুলিস
বর্তমান | ৩১ জুলাই ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: এক অতিরিক্ত জেলাশাসকের বিরুদ্ধে তাঁর স্ত্রীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে জলপাইগুড়ি মেডিক্যালের কাছে ইনজুরি রিপোর্ট চাইল পুলিস। কোতোয়ালি থানা সূত্রে খবর, অভিযোগকারী (যিনি নিজেও ডব্লুবিসিএস অফিসার) পুলিসের কাছে যে অভিযোগ করেছেন, তাতে বলা হয়েছে তাঁর স্বামী অর্থাৎ ওই এডিএম মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন চালিয়েছেন। এমনকী তাঁর শ্বাসরোধ করার চেষ্টা হয়েছে।
পুলিস সূত্রে খবর, থানায় আসার আগে জলপাইগুড়ি মেডিক্যালের অধীন সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে গিয়ে ওই এডিএমের স্ত্রী যে বয়ান দিয়েছেন, তাতেও তেমনই উল্লেখ করেছেন তিনি। এরই পরিপ্রেক্ষিতে জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের কাছে তাঁর ইনজুরি রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। ওই রিপোর্ট দেখেই মামলায় পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে বলে জেলা পুলিসের এক কর্তা জানিয়েছেন। যদিও বুধবার রাত পর্যন্ত জলপাইগুড়ি মেডিক্যালের তরফে ওই ইনজুরি রিপোর্ট পুলিসের হাতে এসে পৌঁছয়নি।
জলপাইগুড়ি মেডিক্যালের সুপার ডাঃ কল্যাণ খাঁ বলেন, পুলিস ইনজুরি রিপোর্ট চেয়েছে কি না, সেই বিষয়টি আমার জানা নেই। যদি পুলিসের তরফে তেমন কিছু চাওয়া হয়ে থাকে, সরকারি নিয়ম মেনে নিশ্চয়ই সবরকম সহযোগিতা করা হবে। জেলা পুলিসের এক কর্তা এদিন বলেন, অভিযোগকারীর মেডিক্যাল হিস্ট্রি আমরা পেয়েছি। কিন্তু তার সঙ্গে ইনজুরি রিপোর্টের কতটা মিল রয়েছে, সেটা দেখার জন্যই হাসপাতালের কাছে ওই রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। যদি ইনজুরি রিপোর্টে দেখা যায়, অভিযোগকারীর বয়ান অনুযায়ী তাঁকে সত্যিই শ্বাসরোধের চেষ্টা হয়েছে, সেক্ষেত্রে মামলায় ‘খুনের চেষ্টা’র ধারা যুক্ত করা হবে। তবে পুলিসের হাতে এদিন রাত পর্যন্ত ইনজুরি রিপোর্ট না এলেও তদন্ত শুরু হয়ে গিয়েছে।
ঘটনাটি নিয়ে প্রশাসনিক মহলে ব্যাপক আলোড়ন ছড়িয়েছে। কারণ, দু’জনেই জলপাইগুড়িতে জেলাশাসকের কার্যালয়ে কর্মরত। স্বাভাবিকভাবেই বিষয়টি নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন জেলা প্রশাসনের কর্তারা। তবে ওই এডিএমও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে পাল্টা একাধিক অভিযোগ করেছেন বলে পুলিস সূত্রে খবর। একইসঙ্গে তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগ উড়িয়ে ওই এডিএম বলেছেন, কেন স্ত্রী আমার বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ আনলেন বুঝতে পারছি না। এর পিছনে কারও ইন্ধন বা উস্কানি রয়েছে কি না সেটা নিয়েও সন্দেহ রয়েছে আমার।
এদিকে, অভিযোগকারী বিষয়টি নিয়ে এখনও পর্যন্ত প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্য করেননি। চেষ্টা করেও তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।