শিলিগুড়িতে দলীয় ও সংসদীয় রাজনীতিতে বেলাগাম তৃণমূল কংগ্রেস নেতা দিলীপ বর্মন। তিনি ‘ডোন্ট কেয়ার’ মনোভাব নিয়ে চলছেন। কখনও দলের জেলা সভানেত্রী, আবার শ্রমিক সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে বিবাদে জড়িয়েছেন। এবার পুরসভার অন্দরে মেয়র ও ডেপুটি মেয়রকে আক্রমণ শানিয়েছেন তিনি। কার মদতে এতটা বেপরোয়া দিলীপ? এনিয়ে দলের অন্দরে শুরু হয়েছে চর্চা। যার জেরে চরম অস্বস্তিতে পড়ছে জোড়াফুল শিবির।
তৃণমূল কংগ্রেসের দার্জিলিং জেলার চেয়ারম্যান (সমতল) সঞ্জয় টিবরেওয়াল বিষয়টি নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তিনি মিটিংয়ে থাকার কথা বলে বিষয়টি এড়িয়ে গিয়েছেন।
পরে মোবাইলে এসএমএস পাঠিয়েও তাঁর প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তৃণমূলের এক জেলা নেতা অবশ্য বলেন, দলের স্বার্থে এবার ওই এমআইসির কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। তা না হলে দলীয় শৃঙ্খলা নিয়ে নিচুতলার কর্মীদের মধ্যে প্রশ্ন উঠবে। সাধারণ মানুষের কাছেও দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হবে।
শিলিগুড়ি শহরের চম্পাসারি এলাকায় দিলীপের বাড়ি। তিনি পুরসভার ৪৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার। ডেকোরেটার ব্যবসায়ী। কয়েক বছর আগে দলের প্রাক্তন সভানেত্রী (সমতল) পাপিয়া ঘোষের সঙ্গে বিবাদে জড়ান ওই কাউন্সিলার। সেই সময় দলীয় নেতারা বৈঠক করে দিলীপকে শোকজ করেছিলেন। উত্তর না মেলায় দলীয় কর্মসূচি থেকে বিরত রাখা হয়েছিল তাঁকে।
সেই সময়ই মুখ্য নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতিতে কর্তৃত্ব ফলানো নিয়ে আইএনটিটিইউসি’র সঙ্গে বিবাদে জড়ান দিলীপ। পরবর্তীতে তিনি বালি পাচারের অভিযোগ তুলে জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের সঙ্গে জড়িত ডাম্পার আটকে বিতর্কে জড়ান।
গত বছর পুজো কার্নিভালের দিন তাঁর নিয়ন্ত্রিত পুজো কমিটির প্রতিমা বিসর্জন নিয়েও তৈরি হয়েছিল বিতর্ক।
এখন পুরসভার বিরুদ্ধে সুর সপ্তমে তুলেছেন ‘বিদ্রোহী’ দিলীপ। বুধবার পুরসভায় দাঁড়িয়ে তিনি মেয়র ও ডেপুটি মেয়রকে আক্রমণ করেন। এনিয়ে দলের একাংশের ধারণা, দলের প্রাক্তন সভানেত্রী পাপিয়ার সঙ্গে যখন ঝামেলা চলছিল, তখন দিলীপের ‘রক্ষাকবচ’ ছিলেন কয়েকজন প্রভাবশালী নেতা। এখন ওইসব নেতাদেরও পাত্তা দিচ্ছেন না দিলীপ। তা হলে কি তাঁর সঙ্গে দলের অন্য কোনও মাথার যোগাযোগ রয়েছে। যাঁর জোরে তিনি বেলাগাম হয়ে উঠছেন।
দিলীপ অবশ্য বলেন, কাউন্সিলার ও এমআইসি পদ ছাড়ব না। দলও ছাড়ছি না। দলে থেকেই লড়াই চালাব। কাউকে কামানোর রাজনীতি করতে দেব না।