• উত্তপ্ত বোর্ড মিটিং, বের করে দেওয়া হল বিদ্রোহী মেয়র পারিষদ দিলীপকে
    বর্তমান | ৩১ জুলাই ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: পুর চেয়ারম্যানের আপত্তি। তা সত্ত্বেও বুধবার শিলিগুড়ি পুরসভার বোর্ড মিটিংয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করে বিতর্কে ‘বিদ্রোহী’ মেয়র পারিষদ দিলীপ বর্মন। তাঁকে বোর্ড মিটিং থেকে বের করে দেওয়া হয়। এতে আরও বিস্ফোরক হন এমআইসি। তাঁর মন্তব্য, আমাকে কোণঠাসা করার ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। যা নিয়ে অস্বস্তি বেড়েছে তৃণমূল শাসিত বোর্ডের। যদিও মেয়র গৌতম দেব ও ডেপুটি মেয়র রঞ্জন সরকার এমআইসির অভিযোগকে গুরুত্ব দিতে নারাজ। তাঁরা ওই এমআইসির বিরুদ্ধে যথাযথ জায়গায় নালিশ জানাবেন বলে জানিয়ে দিয়েছেন। এনিয়ে শহরের রাজনীতিতে শোরগোল। 

    এদিন পুরভবনে বোর্ড মিটিং শুরুর কিছুক্ষণের মধ্যেই প্রশ্ন উত্থাপনের চেষ্টা করেন ট্রেড লাইসেন্স, ক্রীড়া ও আবাসন বিভাগের এমআইসি তথা ৪৬ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলার দিলীপ। দলীয়স্তরে তিনি বিদ্রোহী কাউন্সিলার হিসেবেই পরিচিত। তাঁর প্রশ্ন নিয়ে আপত্তি তোলেন চেয়ারম্যান প্রতুল চক্রবর্তী। অগ্রাহ্য করেই সভায় খাটাল ও বেআইনি নির্মাণ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। এনিয়ে মেয়র, ডেপুটি মেয়র সহ অন্য এমআইসিরা একযোগে জোরালো আপত্তি তোলেন। এমনকী, তাঁরা দিলীপকে সভা থেকে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেন। তারপর এমআইসি সভা থেকে বেরিয়েও যান। 

    চেয়ারম্যান বলেন, সাধারণত কাউন্সিলারদের প্রশ্নের জবাব দেওয়াই দায়িত্ব এমআইসির। তাই ওই এমআইসির প্রশ্ন প্রত্যাখ্যান করি। তাঁকে এমআইসি মিটিং কিংবা পরিষদীয় দলের মিটিংয়ে প্রশ্ন তোলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। তা না মানায় তাঁকে সভা থেকে ‘সাসপেন্ড’ করা হয়েছে। যদিও দিলীপের দাবি, বোর্ড মিটিংয়ের ২৪ ঘণ্টা আগে প্রশ্ন তোলার অনুমতি চেয়েছিলাম। তা অনুমোদনও হয়েছিল। 

    শিলিগুড়িতে পুরসভার বোর্ড মিটিংয়ে এমআইসিকে সাসপেন্ড করার ঘটনা নজিরবিহীন। পুর চেয়ারম্যান বলেন, অধিকাংশ কাউন্সিলার নতুন। বোর্ড মিটিংয়ের প্রশ্ন ও উত্তর, মোশন, কলিং অ্যাটেনশন প্রভৃতি পর্ব সম্পর্কে অনেকেই অবহিত নন। কোনও বিষয় নিয়ে প্রশ্ন করা যাবে, কোনও বিষয়গুলি পুরসভার অধীনে এসব অনেকে জানেন না। তাই একদিনের কর্মশালা করা হবে। 

    এদিকে, বোর্ড মিটিং থেকে সাসপেন্ড হয়েই বিস্ফোরক মন্তব্য করেন দিলীপ। তাঁর অভিযোগ, পরিষদীয় দল এবং এমআইসি মিটিংয়ে আমায় বলতে দেওয়া হয় না। দল ও পুরসভাকে সামনে রেখে কয়েকজন কামানোর রাজনীতি করছেন। রাজবংশী হওয়ায় আমাকে কোণঠাসা করার চেষ্টা করা হচ্ছে।  

    মেয়র বলেন, ৫১ বছর ধরে রাজনীতি করছি। এতদিন পর্যন্ত কেউ দুর্নীতির অভিযোগ তুলতে পারেননি। কাজেই বাইরে কে কী বলছে, মাথা ঘামাচ্ছি না। একই বক্তব্য ডেপুটি মেয়রেরও। এদিকে, বোর্ড মিটিংয়ে পুরসভার এক্তিয়ার বহির্ভূত প্রশ্ন তোলার চেষ্টা করেন বিরোধী দলনেতা বিজেপির অমিত জৈন। চেয়ারম্যানের আপত্তিতে তিনিও প্রশ্ন উত্থাপন করতে পারেননি।
  • Link to this news (বর্তমান)