নিজস্ব প্রতিনিধি, পুরুলিয়া: বুধবার পথ নিরাপত্তা সংক্রান্ত একটি বৈঠক হল পুরুলিয়ায়। বৈঠকে উঠল সম্প্রতি পুরুলিয়ায় জাতীয় সড়কের ধসের গর্তে পড়ে এক শিক্ষকের মৃত্যুর প্রসঙ্গও। এনিয়ে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের ভূমিকার তীব্র সমালোচনা করেন প্রশাসনের আধিকারিকরা। তবে, এই ধরনের ঘটনা যাতে না ঘটে, সে ব্যাপারে সজাগ থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বৈঠকে উপস্থিত জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের আধিকারিকরা।
গত রবিবার পুরুলিয়া-ধানবাদ ৩২ নম্বর পুরাতন জাতীয় সড়কের পুরুলিয়া শহরের জলট্যাঙ্কি মোড়ে একটি পথ দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে তোলপাড় হয় জেলা। রবিবার রাতের ওই দুর্ঘটনায় সুরজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় (৩৬) নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়। যুবকের বাড়ি পুরুলিয়ার লাগদায়। লাগদা গার্লস প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন তিনি। এই দুর্ঘটনার জন্য কাঠগড়ায় তোলা হয় জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষকে। স্থানীয়দের অভিযোগ, সপ্তাহ খানেকের বেশি সময় ধরে জলট্যাঙ্কি মোড়ের কাছে জাতীয় সড়কে ধস নেমে একটি গর্ত তৈরি হয়। বাইক নিয়ে সেই গর্তে পড়েই মৃত্যু হয় শিক্ষকের। অন্তত এক সপ্তাহ আগে ওই গর্ত তৈরি হলেও কেন তা মেরমত হয়নি? কেন তা এতদিন ধরে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের চোখে পড়ল না? এদিনের পথ নিরাপত্তা সংক্রান্ত বৈঠকে এইসব প্রশ্নে বিদ্ধ করা হয় সংশ্লিষ্ট বিভাগের আধিকারিকদের।
পুরুলিয়ার জেলা পরিবহণ আধিকারিক অর্ণব চিনা বলেন, সাম্প্রতিক দুর্ঘটনা নিয়ে রোড সেফটির বৈঠকে আলোচনা করা হয়েছে। পুরুলিয়া শহরের দুর্ঘটনাটির ব্যাপারেও জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের থেকেও এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হয়। এই ধরনের ঘটনা ভবিষ্যতে যাতে না ঘটে, সে ব্যাপারে তারা পদক্ষেপ করবে বলেও প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। বৈঠকে উপস্থিত পুরুলিয়া পুরসভার চেয়ারম্যান নবেন্দু মাহালি বলেন, এদিনের বৈঠকে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষকে চেপে ধরেন প্রশাসনের আধিকারিকরা। এনএইচএআই-এর কর্তারা যুক্তি দেওয়ার চেষ্টা করেন যে, জাইকার পাইপ লাইনের কাজ চলছে বলেই রাস্তায় ধস নেমে গর্ত তৈরি হয়েছে। যদিও সেই যুক্তি ধোপে টেকেনি। কারণ এক সপ্তাহের বেশি সময় পেলেও ওই গর্ত মেরামত করা হয়নি। এর দায় তাঁরা কোনওভাবেই এড়াতে পারেন না।
পাশাপাশি, ওভারলোডিং, বিভিন্ন খারাপ রাস্তাঘাট, শহরেরর যানজট, ফুটপাত দখল সহ একাধিক বিষয় নিয়েও আলোচনা হয় এদিনের বৈঠকে। পুরুলিয়া শহরের উপর পণ্যবাহী গাড়ির চাপ যেভাবে বাড়ছে, সেই বিষয়টিও বৈঠকে তোলেন চেয়ারম্যান। এদিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) আদিত্য বিক্রম হিরাণী, অতিরিক্ত পুলিস সুপার (হেড কোয়ার্টার) কল্যাণ সিংহ রায়, বিভিন্ন মহকুমার মহকুমা শাসক সহ পিডব্লুডির পদস্থ আধিকারিকরা।
জেলাশাসকের অফিস চত্বরে ট্রেজারি বিল্ডিংয়ে চলছে পথ নিরাপত্তা সংক্রান্ত বৈঠক। নিজস্ব চিত্র