• জেলা পরিষদের ৮২ লাখির রাস্তা বেহাল, গঙ্গাজলঘাটিতে সরব তৃণমূলই
    বর্তমান | ৩১ জুলাই ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বাঁকুড়া: নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার পর বছর না ঘুরতেই গঙ্গাজলঘাটিতে জেলা পরিষদের ঢালাই রাস্তা বেহাল হয়ে পড়েছে। গঙ্গাজলঘাটি ব্লকের কাপিষ্টা অঞ্চলে ৮২ লক্ষ টাকা খরচে ওই রাস্তা বাঁকুড়া জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষ তৈরি করেছিল। রাস্তার প্রায় দেড় কিলোমিটারজুড়ে পাথর বের হওয়ায় বাসিন্দাদের চলচলে সমস্যা হচ্ছে। নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ তুলে বাসিন্দারা গঙ্গাজলঘাটির বিডিও-র মাধ্যমে বাঁকুড়া জেলা জেলা পরিষদ ও জেলা প্রশাসনের আধিকারিকদের কাছে লিখিত অভিযোগ পাঠিয়েছেন। ঘটনায় সংশ্লিষ্ট এলাকার তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যও সরব হয়েছেন। স্থানীয় পঞ্চায়েতেও অভিযোগ জমা দেওয়া হয়েছে। অভিযোগের সঙ্গে শতাধিক বাসিন্দার সই করা কাগজও জুড়ে দেওয়া হয়েছে। 

    গঙ্গাজলঘাটি-র বিডিও মৃন্ময়ী চট্টোপাধ্যায় বলেন, রাস্তা বেহাল সংক্রান্ত স্থানীয়দের অভিযোগপত্র জেলা প্রশাসন ও জেলা পরিষদে পাঠানো হয়েছে। জেলা পরিষদের এক আধিকারিক বলেন, অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

    স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য তৃণমূলের শ্রীকান্ত মণ্ডল বলেন, কাপিষ্টা অঞ্চলের শালবেদিয়া থেকে কাঁটাবনি পর্যন্ত ১৮০০ মিটার রাস্তা আগে কাঁচা ছিল। ‘দিদিকে বলো’য় ফোন করে আমরা রাস্তার জন্য বরাদ্দ আদায় করি। পথশ্রী-৩ প্রকল্পের আওতায় ৮২ লক্ষ ৬ হাজার ৮৬ টাকায় নির্মাণ কাজ হয়। জেলা পরিষদ কাজ শেষ করার পর কয়েকমাস যেতে না যেতেই রাস্তার সিমেন্ট উঠে গিয়ে পাথর বের হয়ে যায়। শালবেদিয়া থেকে শালতোড়া গ্রাম পর্যন্ত রাস্তার দেড় কিলোমিটার অংশ বেশি বেহাল হয়ে পড়েছে। তারফলে বাসিন্দাদের চরম সমস্যা হচ্ছে। বিডিও-র মাধ্যমে পাঠানো অভিযোগপত্রে আমিও সই করেছি। কিন্তু, জেলা পরিষদের তরফে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ফলে বাধ্য হয়ে ফের ‘দিদিকে বলো’য় ফোন করে অভিযোগ জানাই। সেখান থেকে অবশ্য বেহাল রাস্তার ব্যাপারে খোঁজখবর নেওয়া হয়। 

    তিনি আরও বলেন, রাস্তা নির্মাণের পর গ্যারান্টি পিরিয়ড তিন বছর থাকে বলে শুনেছি। এক বছরের মধ্যেই তা বেহাল হয়ে পড়েছে। ফলে দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদারকে দিয়েই রাস্তার বেহাল অংশ মেরামত করানোর উদ্যোগ কর্তৃপক্ষকে নিতে হবে। 

    তৃণমূল পরিচালিত কাপিষ্টা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান শিলা বাউরি বলেন, রাস্তা বেহাল হয়ে পড়ার বিষয়টি জানি। দ্রুত রাস্তা ঠিক করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের ব্যাপারে ব্লক প্রশাসনের সঙ্গে আমরা আলোচনা করব।      

    স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করে বলেন, নির্মাণের সময় নিম্নমানের সিমেন্ট, বালি ব্যবহার করা হচ্ছিল। তখনই আপত্তি জানানো হয়েছিল। কিন্তু, কেউ তাতে কর্ণপাত করেনি। তারফলে কিছুদিন যেতে না যেতেই যানবাহনের চাকার সঙ্গে সিমেন্ট উঠে যায়। বালিও উঠে গিয়েছে। কংক্রিটের কালো পাথর বের হয়ে রাস্তা এবড়োখেবড়ো হয়ে যায়। বর্ষায় বৃষ্টিতে ওই রাস্তা আরও বেহাল হয়ে পড়বে। রাস্তার উপর দিয়ে এলাকার অন্তত ২০টি গ্রামের বাসিন্দারা যাতায়াত করেন। রাস্তাটি বাঁকুড়া-দুর্গাপুর রাজ্য সড়কের সঙ্গে মিশেছে। ফলে গুরুত্বপূর্ণ ওই রাস্তা বেহাল হয়ে পড়ায় বাসিন্দাদের ভোগান্তি চরমে উঠেছে।
  • Link to this news (বর্তমান)