• ফাইনান্সের ভুয়ো অ্যাকাউন্ট দিয়ে বাইক কিনে গ্রেপ্তার দুই
    বর্তমান | ৩১ জুলাই ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কৃষ্ণনগর: অবৈধভাবে এক ব্যক্তির পরিচয়পত্র ব্যবহার করে বাইক কেনার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে দুই যুবককে। ধৃতদের নাম মিলন সাহা ও সুমন সাহা। তাদের বাড়ি কৃষ্ণনগর শহরের শক্তিনগর এলাকায়। মঙ্গলবার রাতে কোতোয়ালি থানার পুলিস তাদের গ্রেপ্তার করে। বুধবার ধৃতদের কৃষ্ণনগর আদালতে তোলা হলে বিচারক ধৃতদের চারদিনের পুলিসি হেফাজতের নির্দেশ দেন।‌ এক ব্যক্তির আধার ও ভোটার কার্ড হাতিয়ে তা ব্যবহার করে তারা বাইক কিনেছিল। এমনকী ওই ধৃত দুই যুবক ফাইনান্সে ভুয়ো অ্যাকাউন্ট খুলেছিল বলেও পুলিস মনে করছে। তবে এটি একটি পরিকল্পিত অপরাধ বলে তদন্তকারী অফিসাররা মনে করছেন। শুধু বাইক নয়, অন্যান্য গাড়ি কেনার ক্ষেত্রেও এই ধরনের পন্থা নেওয়া হচ্ছে বলে মনে করছে পুলিস। রীতিমতো চক্র তৈরি করে এই কাজ করা হচ্ছে বলে ধারণা গোয়েন্দাদের। অবৈধভাবে কেনা ওই সমস্ত গাড়ি অপরাধমূলক কাজকর্মেও ব্যবহার করা হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। 

    কৃষ্ণনগর পুলিস জেলার ডিএসপি শিল্পী পাল বলেন, কোতোয়ালি থানায় একটা অভিযোগ জমা পড়ে। ধৃতরা অভিযোগকারীর পরিচয়পত্র ব্যবহার করে বাইক কিনেছিল। আমরা বিষয়টি তদন্ত করছি। পাশাপাশি এই অপরাধের সঙ্গে কারা কারা যুক্ত তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সেইসঙ্গে বাইকটি কী কাজে তারা ব্যবহার করেছে তা দেখা হচ্ছে।‌

    পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, শক্তিনগর এলাকার কাজল দেবনাথ বলে এক ব্যক্তি কোতোয়ালি থানায় অভিযোগ করেছিলেন, সাত মাস আগে ওই তিনি মিলন ও সুমনকে ভোটার ও আধার কার্ডের জেরক্স দিয়েছিলেন। তার ঠিক দু’মাসের মাথায় কাজলবাবুর কাছে ঋণদানকারী সংস্থার কাছ থেকে ইএমআই জমা দেওয়ার আবেদন আসে, যা দেখে তিনি চমকে ওঠেন। কারণ তিনি কোনও বাইক কেনেননি। কিন্তু তিনি জানতে পারেন যে তাঁর নামে নাকি বাইক কেনা হয়েছে।‌ ফাইনান্স কোম্পানিতে অ্যাকাউন্টও খোলা হয়েছে।‌ যার জন্যই ইএমআই জমা দেওয়ার জন্য কোম্পানি, অ্যাকাউন্ট হোল্ডার হিসেবে তাঁর কাছে মেসেজ এসেছে।‌ তখনই তাঁর সন্দেহ হয় মিলন আর সুমনের উপর। কারণ তাঁদেরকে নিজের পরিচয়পত্রের জেরক্স দিয়েছিলেন। তারপরই তিনি কোতোয়ালি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। যার ভিত্তিতে পুলিস ওই দু’জনকে গ্রেপ্তার করে। 

    তবে এই অপরাধের শিকড় অনেক গভীরে বলেই মনে করছেন তদন্তকারী অফিসাররা। একটি সিন্ডিকেট বানিয়েই বিভিন্ন এলাকার মানুষের কাছ থেকে ভোটার ও আধার কার্ড সংগ্রহ করা হচ্ছে। তারপর ফাইনান্স কোম্পানিতে ওই নামে ভুয়ো অ্যাকাউন্ট খোলা হচ্ছে, যা দিয়ে বাইক কিনছে চক্রের সদস্যরা। কিন্তু আদতে সেই অ্যাকাউন্ট হোল্ডার হচ্ছেন অন্য ব্যক্তি। ফলে তাঁর নামেই ইএমআই জমা হচ্ছে ফাইনান্স কোম্পানিতে। এবার সেই বাইক দিয়ে কী করা হচ্ছে, সেই প্রশ্নই ঘুরছে তদন্তকারী অফিসারদের মাথায়। পুলিস আধিকারিকদের দাবি, সংশ্লিষ্ট বাইক সরাসরি অপরাধের কাজে ব্যবহার হতে পারে। আবার সেই নতুন বাইক অন্যত্র বিক্রিও করা হতে পারে।
  • Link to this news (বর্তমান)