• ভারী বৃষ্টির মধ্যেই ফের জল ছাড়তে চায় ডিভিসি, উদ্বেগ
    বর্তমান | ৩১ জুলাই ২০২৫
  • সুমন তেওয়ারি  আসানসোল

    শিল্পাঞ্চলজুড়ে বৃষ্টি হয়েই চলেছে। টানা বৃষ্টির জেরে ফুঁসছে স্থানীয় নদীগুলি। সেই সব নদী গিয়ে মিশেছে দামোদরে। একই অবস্থা পাশ্বর্বর্তী বাঁকুড়া, পুরুলিয়া জেলাতেও। বিপুল জলরাশির ভার বইতে হচ্ছে দামোদরকে। নদে জল বাড়ায় খানাকুলের মতো নিম্নদামোদর এলাকায় উদ্বেগ রয়েছে। তার উপর অশনি সংকেত এসেছে ঝাড়খণ্ড থেকে। বুধবার সকাল ৬টায় ডিভিসি একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। সেখানে দাবি করা হয়েছে, শেষ ২৪ ঘণ্টায় মাইথন জলাধারে ৯২ হাজার ৬০৬ একর ফুট জল ঢুকেছে। সোমবার বাঁধের জলস্তর ছিল ৪৬৬.৪৭ ফুট। সেখানে বুধবার সকালে জলস্তর বেড়ে হয়েছে ৪৭৬.৩৮ ফুট। এখনও বিপুল জল বাঁধে ঢুকছে বলে দাবি করা হয়েছে। শুধু মাইথন নয়, পাঞ্চেতেও শেষ ২৪ ঘণ্টায় ৬৫ হাজার ৭১৫ একর ফুট জল ঢুকেছে বলে জানানো হয়েছে। এতে সেই বাঁধের জলস্তরও ৪০৪.৭৫ ফুট উচ্চতায় উঠে এসেছে।

    বিষয়টি নিয়ে রাজ্য সরকারকে চাপ দেওয়ার খেলা শুরু হয়েছে। বাঁধ বাঁচানোর অজুহাতে বিপুল পরিমাণ জল ছাড়ার প্রস্তুতি নিয়েছে ডিভিসি। ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকারকে চিঠি দিয়ে ছাড়া জলের পরিমাণ বৃদ্ধি করার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। পাল্টা রা‌জ্য সরকারও চিঠি লিখেছে। বাংলায় প্রবল বর্ষণ হচ্ছে। তাই দু’দিন পর বেশি জল ছাড়ার আর্জি জানানো হয়েছে। ডিভিসির মনোভাব থেকে স্পষ্ট, বাঁধগুলিতে জল ঢোকার পরিমাণ না কমলে রাজ্যের আপত্তি উড়িয়েই বিপুল পরিমাণ জল ছাড়া হবে।

    দামোদর ভ্যালি রির্জাভার রেগুলেটরি কমিটির মেম্বার সেক্রেটারি সঞ্জীব কুমার বলেন, বাঁধগুলিতে বিপুল পরিমাণ জল ঢুকছে। বিশেষ করে মাইথনে জলস্তর ১০ ফুট বেড়ে গিয়েছে। এই অবস্থাতেও বাংলার সরকার আর্জি করছে, যেন দু’দিন জল ছাড়া না হয়। আমরাও তাঁদের কাছে বাঁধের পরিস্থিতি উল্লেখ করেছি। বাড়তি জল ছাড়ার ভাবনা-চিন্তা শুরু হয়েছে।

    জানা গিয়েছে, এখনও একেবারে জল ছাড়া বন্ধ করেনি ডিভিসি। তবে, মুখ্যমন্ত্রী সহ রাজ্য প্রশাসনের চূড়ান্ত হুঁশিয়ারির পর জল ছাড়ার পরিমাণ কমিয়েছে। এখনও মাইথন ও পাঞ্চেত মিলিয়ে ৩১ হাজার কিউসেক হারে জল ছাড়া হচ্ছে। মাইথন থেকে সাড়ে ছ’হাজার ও পাঞ্চেত থেকে সাড়ে ২৫ হাজার কিউসেক হারে জল ছাড়া হচ্ছে। সেই পরিমাণটা আরও বাড়াতে চাইছে ডিভিসি। বৃহস্পতিবার ভোর থেকেই বিপুল জল বাঁধ থেকে ছাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এর ফলে বেশকিছু জেলায় জটিল পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এদিন সন্ধ্যা ৬টায় দুর্গাপুর ব্যারেজ ঘেকে ৪০ হাজার ৫৫০ কিউসেক হারে জল ছাড়া হয়েছে। কিন্তু, মাইথন জল ছাড়া বাড়ালে ব্যারেজের পরিস্থিতিও দ্রুত পাল্টে যাবে।
  • Link to this news (বর্তমান)