নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: মা-বাবা চা-বাগানে কাজ করেন। বাড়িতে শিশুদের দেখাশোনার কেউ নেই। এমন বাচ্চাদের প্রলোভন দেখিয়ে পাচার করে দেওয়া, শিশুশ্রমের মতো ঘটনা ডুয়ার্স অঞ্চলে হামেশাই ঘটে। তবে সম্প্রতি তা কিছুটা কমেছে। সৌজন্যে ঋষিকা সাবার, খুশবু মুন্ডা, শশীকান্ত গোয়ালার মতো কিছু নির্ভীক কিশোর-কিশোরী। ভিলেজ লেভেল চাইল্ড প্রোটেকশন কমিটির মাধ্যমে ছোট ছেলেমেয়েদের অত্যাচারের হাত থেকে রক্ষা করছে তারা। কখনও পাচার, শিশুশ্রম বা বাল্যবিবাহ রোখার ঘটনাও রয়েছে। ৩০ জুলাই, মানব পাচার বিরোধী দিবসে এমন নির্ভীক তিন ছেলেমেয়েকে বিশেষ সম্মান জানাল পশ্চিমবঙ্গ শিশু অধিকার সুরক্ষা আয়োগ। বুধবার ঋষিকা সাবারকে একদিনের জন্য আয়োগের চেয়ারপার্সন এবং খুশবু মুন্ডা ও শশীকান্ত গোয়ালাকে সদস্যের মর্যাদা দেওয়া হল। এদিন আয়োগের অফিসে দৈনন্দিন কাজকর্ম খতিয়ে দেখার পাশাপাশি ফাইলেও সই করেন ঋষিকা।
জলপাইগুড়ির নাগরাকাটার ঘাটিয়া চা বাগানের মেয়ে ঋষিকা। একাদশ শ্রেণির ছাত্রী। বীরাঙ্গনার কথায়, ‘চা-বাগানের মানুষের অনেক কষ্ট। আর্থিক সমস্যা, স্কুলছুট তো আছেই। অনেকের পরিচয়পত্রও নেই। তাই সরকারি সুযোগ সুবিধা থেকেও বঞ্চিত হয়। তাছাড়া ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে পাচার করে দেয়। তার বিরুদ্ধে আমরা লড়ছি। আমাদের কমিটির ছেলেমেয়েরা বিভিন্ন গ্রামে গ্রামে ঘুরে বাচ্চা, অভিভাবকদের সচেতন করি। পাচারও রুখেছি। শশীকান্তও বলছিল, কীভাবে সে সাত বছরের এক বাচ্চাকে শিশুশ্রমের হাত থেকে রক্ষা করে। পাশাপাশি খুশবু, ঋষিকেশরা চা বাগানের মানুষদের বিভিন্ন দাবির কথাও আয়োগের সামনে তুলে ধরে। ডব্লুবিসিপিসিআরের চেয়ারপার্সন তুলিকা দাস বলেন, ‘এই তিনজনকে সম্মানিত করে আমরা গর্বিত। এই বয়সেই ওরা অনেক বাল্যবিবাহ, শিশুশ্রম, পাচার রুখেছে। ওদের সঙ্গে সময় কাটাতে পেরে প্রতেক্যের খুব ভালো লেগেছে।’ নিজস্ব চিত্র