• মুষলধারে বৃষ্টি, জল জমে চরম দুর্ভোগ আরামবাগে, তীব্র ক্ষোভ
    বর্তমান | ৩১ জুলাই ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, আরামবাগ: বুধবার মুষলধারে বৃষ্টির জেরে জল থইথই পরিস্থিতি আরামবাগ শহর সহ মহকুমার বিভিন্ন এলাকায়। আরামবাগ শহরে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শাখায় বৃষ্টির জল ঢুকে পড়ে। বৃষ্টির জেরে দিনভর ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হয়েছে বাসিন্দাদের। পাশাপাশি ব্যাঙ্কে গ্রাহক পরিষেবাও ব্যাহত হয়েছে। বিকেল পর্যন্ত পাম্প লাগিয়ে সেখানে জল বের করা হয়। ঘটনার খবর পেয়ে আরামবাগ পুরসভার একটি দল সেখানে যায়। তবে নিকাশি নিয়ে ফের ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শহরের বাসিন্দারা। কটাক্ষ করেছে বিজেপিও। আরামবাগ পুরসভার চেয়ারম্যান সমীর ভাণ্ডারী বলেন, ব্যাঙ্কে জলমগ্ন হয়ে পড়েছে শুনে প্রতিনিধি পাঠানো হয়। নিকাশি নালা পরিষ্কার করা হয়েছে। বসন্তপুর থেকে আমতলা পর্যন্ত ভুগর্ভস্থ ড্রেন পরিষ্কার করা হচ্ছে। 

    আরামবাগের ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার বিজেপির বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেন, আমার ওয়ার্ডে বিবেকানন্দ পল্লির রাস্তা পুকুরের আকার ধারণ করেছে। অন্যান্য ওয়ার্ডেও জল জমে গিয়েছে। নিকাশি ব্যবস্থা না থাকার ফলেই বাসিন্দাদের দুর্ভোগের মধ্যে পড়তে হয়েছে। আরামবাগ শহরের লিংক রোডের উপরেই রয়েছে ওই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কটি। সেখানের ম্যানেজার কিশোর আচার্য বলেন, প্রত্যেক বছর বর্ষায় বেশি সময় ধরে বৃষ্টি হলেই অফিসে জল ঢুকে যায়। এদিনও ব্যাঙ্ক খোলার আগে থেকেই জল ঢুকে পড়ে। তার ফলে সমস্যায় পড়তে হয় প্রত্যেককেই। পাম্প চালিয়ে আমরা সেই জল বের করার চেষ্টা করেছি। এর ফলে এদিন পরিষেবাও ব্যাহত হয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আরামবাগ শহরে নিকাশির সমস্যা দীর্ঘদিন ধরেই রয়েছে। বহু জায়গায় আবার নিকাশি নালাই তৈরি হয়নি। অনেক জায়গায় আবার ড্রেন থাকলেও তার আউটলেট করা হয়নি। ফলে রাস্তা সহ ঘর বাড়িতে বৃষ্টির জল ঢুকে পড়ছে। এদিনও আরামবাগ পুরসভা এলাকার বিভিন্ন  ওয়ার্ডে সেরকমই জল যন্ত্রণায় ভুগতে হয়েছে বাসিন্দাদের একাংশকে। পুরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কিছু এলাকায় এদিন রাস্তায় জল জমে যায়। সেখানে ওই ওয়ার্ডে কাউন্সিলার স্বপন নন্দী যান। তিনি বলেন, ব্লকপাড়া এলাকায় কিছু বাড়িতে বৃষ্টির জল ঢুকে পড়ে। পুরসভার কর্মীদের নিয়ে গিয়ে সেখানে জল নিকাশ করা হয়।  এদিন বৃষ্টির জেরে আরামবাগের মলয়পুর, রাজাবাজার এলাকায় রাস্তায় জল জমে যায়। বাড়ির মধ্যেও জল ঢুকে যায় বলে দাবি। ওখানকার বাসিন্দা শেখ মুকুল বলেন, দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে বৃষ্টি হলেই আমাদের এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ে। এদিনও বেশকিছু বাড়িতে জল ঢুকে যায়। ব্যাপক ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হচ্ছে বাসিন্দাদের। পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি। সাপের উপদ্রবও বাড়ছে। আরামবাগের বলুন্ডি এলাকাতেও বৃষ্টির জল রাস্তার উপর বইতে থাকে। মায়াপুর-২ পঞ্চায়েতের প্রধান অলোক সাঁতরা বলেন, গ্রামের কিছু শাখা রাস্তা জলমগ্ন হয়ে পড়ে। পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছি। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, নিম্নচাপের জেরে নদীগুলিতেও আগের তুলনায় জলস্তর বেড়েছে। তবে এখনও বিপদ সীমায় পৌছয়নি। সেচদপ্তরের চাঁপাডাঙা ডিভিশনের আধিকারিক মণিশঙ্কর দত্ত বলেন, ডিভিসি প্রায় ৪৩ হাজার কিউসেক জল ছেড়েছে। মুণ্ডেশ্বরী, দামোদরের জল আপাতত নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। 
  • Link to this news (বর্তমান)