• জাল নথি দিয়ে তৈরি আধার ও রেশন কার্ড, বাংলাদেশি বিমান সংস্থার কেবিন ক্রু থেকে ‘ভারতীয়’! ধৃত তরুণী
    বর্তমান | ৩১ জুলাই ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: বৈধভাবে ভারতে ঢুকে এদেশের জাল রেশন কার্ড ও আধার তৈরি করার অভিযোগে বাংলাদেশের  বিমানে কর্মরত মহিলা কেবিন ক্রু’কে গ্রেপ্তার করল লালবাজার। শান্তা পাল নামে ওই মহিলার যাদবপুরের ভাড়া বাড়িতে মঙ্গলবার হানা দিয়ে উদ্ধার করা হয়েছে বাংলাদেশের পাসপোর্ট সহ একাধিক জাল ভারতীয় নথি। এইসব জাল নথির বিনিময়ে ভারতীয় পাসপোর্ট তৈরি করার চেষ্টা করছিলেন মহিলা। যে দালাল চক্রের হাত ধরে তিনি নথি জোগাড় করেছিলেন, তাদের চিহ্নিত করেছেন গোয়েন্দারা।

    পুলিস সূত্রে জানা যাচ্ছে, শান্তা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক হওয়ার পর বাংলাদেশের বিমান সংস্থায় কেবিন ক্রুর চাকরি পান। কিন্তু বাংলাদেশে অস্থির পরিবেশ তৈরি হওয়ার পর বিভিন্ন বিমান সংস্থার ব্যবসায় টান পড়ে। সূত্রের খবর, এই মহিলাকেও চাকরি ছাড়ার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছিল। এরপরই তিনি ভারতে এসে চাকরির চেষ্টা শুরু করেন। চলতি বছরের জুন মাসে শান্তা বৈধ পাসপোর্ট নিয়ে কলকাতায় আসেন। চিকিৎসা সংক্রান্ত ভিসা নিয়ে তিনি এদেশে এসেছিলেন। তবে ভিসার মেয়াদ পেরিয়ে গেলেও তিনি ফিরে যাননি। এরমাঝে তিনি ভারতীয় পাসপোর্ট তৈরির জন্য আবেদন করেন। সেই নথি পুলিসের কাছে আসে যাচাইয়ের জন্য। তাঁর জমা দেওয়া রেশন কার্ড পরীক্ষা করতে গিয়ে অফিসাররা দেখেন, এটি পার্ক স্ট্রিটের একটি ভুয়ো ঠিকানায় তৈরি করা হয়েছে। দালালের মাধ্যমে তিনি রেশন কার্ড পেয়েছেন। তার ভিত্তিতেই ভারতীয় সিম নিয়েছেন। এরপর ওই রেশন কার্ড দেখিয়েই আধার কেন্দ্রে গিয়ে কার্ড তৈরি করেছেন। সেখানেও ওই ভুয়ো ঠিকানা রয়েছে। আধার কেন্দ্র থেকে দালাল সেটি সংগ্রহ করে শান্তার কাছে পৌঁছে দিয়েছে। এই রিপোর্ট আসার পরই পার্ক স্ট্রিট থানায় শান্তার বিরুদ্ধে জালিয়াতি, প্রতারণা সহ একাধিক ধারায় কেস রুজু হয়। তদন্তে নেমে পুলিস জানতে পারে, ওই কেবিন ক্রু যাদবপুর এলাকায় একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকেন। এরপরই পুলিস মঙ্গলবার সেখানে হানা দিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করে। সেখান থেকে উদ্ধার হয় ভারতীয় রেশন কার্ড, আধার ও বাংলাদেশি পাসপোর্ট। পুলিস জেনেছে, ওই পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হচ্ছে এ মাসেই। 

    শান্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তদন্তকারীরা জেনেছেন, চাকরিতে সংকটের কারণে ভারতীয় নথি জোগাড় করেছিলেন। তাঁর ধারণা ছিল, ভারতের পাসপোর্ট করাতে পারলে ভারত সহ যে কোনও দেশের বিমান সংস্থায় চাকরি মিলবে। বাংলাদেশি পাসপোর্ট থাকায় এই সুবিধা পাচ্ছিলেন না। তাই  ভারতে এসে এই দেশের আধার রেশন কার্ড তৈরি করে পাসপোর্ট তৈরির চেষ্টা করছিলেন। এখানে আসার পর পার্ক স্ট্রিট এলাকায় ওঠেন। সেখানে এক দালালের সঙ্গে পরিচয় হয়। ওই দালালই তাঁকে এই নথি তৈরি করে দেন ৩০ হাজার টাকার বিনিময়ে। শান্তার কথার সূত্র ধরেই দালাল চক্রের পান্ডাদের নাম জেনেছে পুলিস। তাদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।
  • Link to this news (বর্তমান)