নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: এখন অচেনা জায়গায় যেতে রাস্তা চেনার অন্যতম ভরসা স্মার্ট ফোনে থাকা ম্যাপ। সে ম্যাপ গণ পরিবহণের রুটও দেখিয়ে দেয়। সেই ম্যাপে এখনও দেখাচ্ছে কবি সুভাষ মেট্রো স্টেশন সচল। ফলে বুধবার চরম বিপত্তি।
ম্যাপ দেখাচ্ছে নিউ গড়িয়া থেকে আলিপুর যাওয়ার সহজ পথ হল, প্রথমে মেট্রো, তারপর বাস। তা দেখে কবি সুভাষ মেট্রো স্টেশনে চলে আসছেন অনেকে। তারপর স্টেশনে থাকা (রেলওয়ে প্রোটেকশন ফোর্স) আরপিএফ আঙুল তুলে দেখিয়ে দিচ্ছে নোটিশ। সেখানে লেখা ‘স্টেশন বন্ধ’। আরপিএফ কর্মীরা তারপর বলছেন, ‘শহিদ ক্ষুদিরাম স্টেশন চলে যান।’ বৃষ্টিবাদলার মধ্যে স্টেশন থেকে বেরিয়ে রিকশ ধরতে গিয়ে তাঁদের শুনতে হচ্ছে ভাড়া ৬০ টাকা।
নিউ গড়িয়া, গড়িয়া স্টেশন সহ সংলগ্ন এলাকাগুলি থেকে কোথাও যেতে হলে চটজলদি উপায় হল মেট্রো রেল। কম ভাড়ায় শান্তির যাতায়াত মেট্রোর তুলনায় ভালো কিছু নেই, বলে থাকেন যাত্রীরা। কিন্তু স্টেশনে থাকা স্তম্ভে (পিলার) চিড় ধরা পড়ায় স্টেশন আপাতত বন্ধ। ফলে সমস্যায় হাজার হাজার যাত্রী। কবি সুভাষ বন্ধের দ্বিতীয় দিনে চরম বিভ্রান্তি ছড়াল ডিজিট্যাল ম্যাপ। ফলে নতুন করে বিপত্তিতে পড়ল মানুষ। বুধবার দুপুরে দু’জন গিয়েছিলেন কবি সুভাষ স্টেশনে। হাতে স্মার্ট ফোন। তাতে মেট্রো ধরে যাওয়ার পরামর্শ লেখা। তাঁরা পৌঁছে দেখলেন কোলাপসেবল গেট প্রায় বন্ধ। একটু মাত্র ফাঁক। তা গলে ঢুকতে গেলেন। আটকালেন এক মহিলা আরপিএফ কর্মী। বললেন, ‘নোটিশ দেখুন। চলে যান শহিদ ক্ষুদিরাম স্টেশন।’ এই দু’জনের একজন সৌমার্য্য রায়। বললেন, ‘শুনছিলাম মেট্রো বন্ধ। কিন্তু ফোনে যখন দেখাল তখন ভাবলাম নিশ্চয় আবার চালু হয়েছে। কিন্তু এখন এসে দেখি বন্ধই রয়েছে। কি হয়রানিই না হল। এখন আবার একগাদা টাকা খরচ করে শহিদ ক্ষুদিরাম স্টেশন যেতে হবে।’
এদিন অনেকে লোকাল ট্রেনেই কলকাতার কোনও স্টেশনে নামার পরিকল্পনা করেন। কিন্তু বহু জায়গায় টিকিট কাউন্টারের সামনে জল জমে। ফলে সেখানেও সমস্যা। এদিন লোকাল ট্রেনের যাত্রীদের হল অন্যরকম এক অভিজ্ঞতা। শিয়ালদহগামী ট্রেন নিউ গড়িয়া স্টেশনে প্রবেশ করার পর দেখা গিয়েছে, গেটে দাঁড়িয়ে থাকা যাত্রীরা চিত্কার করে প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে থাকা যাত্রীদের জিজ্ঞেস করছেন, ‘মেট্রো কি চলছে?’ উত্তরে ‘না’ শুনেই ট্রেন থেকে নামলেন না।
তবে এদিন সবথেকে ‘অদ্ভুত ব্যাপার! ম্যাপে দেখাচ্ছে মেট্রো সচল। কৃষ্ণেন্দু পানিগ্রাহী নামে নামকরা এক তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার কর্মী বলেন, ‘মেট্রোর অবিলম্বে উচিত বিষয়টি সরকারিভাবে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে জানানো। না হলে ম্যাপ অনন্তকাল ধরে ভুল তথ্য দেখিয়েই যাবে। আর আমাদের মতো সাধারণ মানুষকে ভুগতে হবে।’