• তুফানগঞ্জের মহিলাকে এনআরসি নোটিস, বাড়িতে গিয়ে পাশে থাকার বার্তা জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের
    বর্তমান | ০১ আগস্ট ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কোচবিহার ও সংবাদদাতা, তুফানগঞ্জ: দিনহাটার উত্তম ব্রজবাসী, মাথাভাঙার নিশিকান্ত দাসের পর এবার তুফানগঞ্জের শালবাড়ি-১ পঞ্চায়েতের বাঁশরাজা গ্রামের মোমিনা বিবি পেলেন এনআরসি নোটিস। অসমের ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালের পাঠানো চিঠি প্রকাশ্যে আসতেই কোচবিহার জেলাজুড়ে যেমন চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে, দুশ্চিন্তায় পড়েছেন মোমিনা ও তাঁর পরিবার। এছাড়া, রাতে তৃণমূল জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক ফেসবুক পোস্টে দাবি করেন, তুফানগঞ্জের রামপুর এলাকার দীপঙ্কর সরকারকেও এনআরসি নোটিস পাঠানো হয়েছে।

    প্রায় ৪০ বছর আগে অসমের এক ব্যক্তির সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল মোমিনার। স্বামীর সঙ্গে চলে এসেছিলেন তুফানগঞ্জে। যদিও সেই সংসার টেকেনি। দুই সন্তান নিয়ে তারপর থেকে বাঁশরাজা গ্রামেই বাস তাঁর। দুই ছেলে আছে। দীর্ঘদিন অসমে যাননি। 

    পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, এনিয়ে তিনবার মোমিনার নামে নোটিস এল। প্রথমে বিষয়টি বুঝতেই পারেননি তিনি। পুলিস এসে বলায় তাঁরা বুঝতে পারেন। এদিকে,এনআরসি নোটিস প্রকাশ্যে আসতেই রাজ্য তৃণমূল কংগ্রেসের সহ সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব হন। জেলা তৃণমূল সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক মোমিনার বাড়ি পৌঁছে যান বৃহস্পতিবার। তাঁর পাশে থাকার আশ্বাস দেন। প্রয়োজনে আন্দোলনে নামার কথাও বলেন। বিজেপি অবশ্য দাবি করেছে, এতদিন আগের পাঠানো চিঠি কেন এখন প্রকাশ্যে এল? 

    মোমিনা বলেন, আমার বয়স এখন ৫৮। প্রায় ৪০ বছর আগে অসমের আগমনীতে বিয়ে হয়েছিল। বিয়ের দেড় বছর পর স্বামীর সঙ্গেই তুফানগঞ্জে আসি। পরে স্বামী চলে যান। আমার দুই ছেলে। তিনমাস আগে একটা চিঠি এসেছিল। এবার পুলিস এসে বলে কেন হাজিরা দিইনি। কিন্তু আমি এখানেই ভোট দিই। অসমে কখনও ভোট দিইনি। কী করব বুঝতে পারছি না।

    মোমিনার ছেলে মোজাম্মেল মিয়াঁ বলেন, তিনমাস আগেও একবার চিঠি এসেছিল। আমরা কিছু বুঝিনি। বুধবার থানা থেকে এসে ধুবড়ি যেতে বলেছে। আতঙ্কে রয়েছি। যদিও জেলা পুলিস জানিয়েছে, কাউকে এরকম নোটিস দেওয়া হয়নি।

    রবি বলেন, আগেও মোমিনা বিবির নামে দু’বার নোটিস এসেছে। যিনি অসমে থাকেনই না, তাঁর নামে কীভাবে নোটিস পাঠায়? ওঁর তো এখানকার ভোটার তালিকায় নাম রয়েছে। অসম সরকার বাংলাভাষি ও বাঙালিদের হেনস্তা করতে চাইছে। জেলা তৃণমূল সভাপতির কথায়, বিজেপি জানে এখানে ওদের কী ফল হবে। তাই রাজ্য নেতাদের বাদ দিয়ে হিমন্ত বিশ্বশর্মাকে দায়িত্ব দিয়েছে। ওই নোটিসে বাংলার কেউ সাড়া দেবেন না। অন্যদিকে, বিজেপির জেলা সভাপতি অভিজিৎ বর্মন বলেন, ন’মাস আগে পাঠানো চিঠি এখন কেন প্রকাশ্যে এল? এর পিছনে কী কারণ রয়েছে, সেটা আগে সামনে আসুক। উপযুক্ত নথি দেখালেই হবে। তৃণমূল এসব নিয়ে রাজনীতি করছে।
  • Link to this news (বর্তমান)