সংবাদদাতা, নাগরাকাটা: বাড়িঘর সহ কৃষিজমি এখন তিস্তা নদীর জলের তলায়। কারও কাজকর্ম নেই। এদিকে কেন্দ্রীয় সরকারের ১০০ দিনের কাজও বন্ধ। তাই মমতা সরকারের রেশন দিয়েই পেট চলছে ক্রান্তি ব্লকের চ্যাংমারি গ্রাম পঞ্চায়েতের সাহেববাড়ি, পূর্ব দলাইগাঁও ও পশ্চিম দলাইগাঁওয়ের ৮০টি কৃষক পরিবারের।
দু’মাস আগেই সংশ্লিষ্ট গ্রামগুলির কৃষকদের চাষের জমি তিস্তা নদী গ্রাস করেছে। ফসল ফলানো তো দূরে থাক, সেই কৃষিজমির সামনে পর্যন্ত তাঁরা যেতে পারছেন না। কারণে সেখানে কোমর সমান জল। বর্তমানে তাঁদের ঠাঁই হয়েছে তিস্তা নদীর বাঁ হাতি বাঁধের উপর। প্রথম কয়েক সপ্তাহ বানভাসি পরিবাররগুলির তিনবেলা খাওয়ার ব্যবস্থা করেছিল পঞ্চায়েত প্রশাসন। তারপর থেকে তাঁদের বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের মাধ্যমে চাল, ডাল, তেল, নুন দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়াও সম্প্রতি শিলিগুড়ির মেয়র নিজে এসে পরিবারগুলির হাতে চাল, ডাল সহ বিভিন্ন সামগ্রী দিয়ে গিয়েছেন। সব মিলিয়ে মমতা সরকারই বানভাসিদের বেঁচে থাকার ভরসা এখন।
এলাকার কৃষক কফিজুদ্দিন আহমেদ, আবু সালেম বলেন, ১০ বিঘা জমি রয়েছে। শীতকালে জমিতে সব্জি চাষ করি। ওই সব্জি বেচে সংসার চলে। বর্তমানে তিস্তার জল বেড়ে গিয়ে সমস্ত জমি এখন জলের তলায়। এতটাই জল জমে আছে যে, জমিতে যাওয়া যাচ্ছে না। আমাদের রোজগার বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ১০০ দিনের কাজ যদি থাকত তাহলে অনেকটা উপকার হতো। এখন আমাদের রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের রেশন দিয়েই পেট চলছে। দিদি না থাকলে হয়তো না খেয়েই দিন কাটাতে হতো।
ক্রান্তি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি পঞ্চানন রায় বলেন, আমরা বানভাসিদের সবসময় পাশে আছি। স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান আব্দুল সামাদ প্রায় দিনই বানভাসিদের তাঁবুতে আসেন। তাঁদের খোঁজখবর নিয়ে যান। তিনি বলেন, খাদ্যসাথী-১ ও ২ প্রকল্পের চাল এমনকী জিআরের চাল দেওয়া হয় পরিবারগুলিকে। আমরা বানভাসিদের পাশে আছি।
উল্লেখ্য, মাথাপিছু পাঁচ কেজি করে চাল রেশন থেকে দেওয়া হয়। জিআরের চাল পরিবার প্রতি ১২ কেজি করে দেওয়া হচ্ছে। ওই তিন গ্রামের প্রায় ৩০০ বিঘা চাষের জমি এখন জলের তলায়। নিজস্ব চিত্র।