চলতি মাসেই সিউড়িতে শুরু ‘দুয়ারে চেয়ারম্যান’, ২১টি ওয়ার্ডে ঘুরে মানুষের সঙ্গে কথা বলবেন
বর্তমান | ০১ আগস্ট ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, সিউড়ি: ‘টক টু মেয়রে’র ধাঁচে এবার চালু হতে চলেছে ‘দুয়ারে চেয়ারম্যান’। সাধারণ মানুষের সুবিধা-অসুবিধার কথা জানতে এবার সিউড়ি পুরসভার চেয়ারম্যান উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায় বিভিন্ন পাড়ায় পৌঁছে যাবেন। ছাব্বিশের নির্বাচনের প্রাক্কালে নিবিড় জনসংযোগ বৃদ্ধির পাশাপাশি পুর এলাকার ছোট-বড় সমস্যার সমাধান খুঁজতেই এহেন উদ্যোগ চেয়ারম্যানের। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, স্বাধীনতা দিবসের পরপরই অভিনব এই কর্মসূচিকে সামনে রেখে চেয়ারম্যান রাস্তায় নামতে চলেছেন। নির্দিষ্ট এই কর্মসূচি শহরের উন্নয়নের রূপরেখা তৈরির ক্ষেত্রেও বিশেষ ভূমিকা নেবে।
উজ্জ্বলবাবু বলেন, চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই শহরের উন্নয়নে জোর দিয়েছি। বেশকিছু ক্ষেত্রে একাধিক উন্নয়নমূলক কাজও করা হয়েছে। শহরের যানজট সমস্যার সমাধানে টোটোর গতিতে রাশও টানা হয়েছে। তবে, এসব ছাড়াও শহরবাসীর আর কী কী সমস্যা রয়েছে, তা জানার চেষ্টা করা হবে। এছাড়াও তাঁরা রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পগুলির সুবিধা পাচ্ছেন কি না, সেই বিষয়েও খোঁজ নিতে পাড়ায় পাড়ায় যাব। সকলের সঙ্গে কথা বলে সাধ্যমতো সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হবে।
শহরের বিভিন্ন এলাকার সমস্যার সমাধানে কলকাতা এবং শিলিগুড়ি পুরনিগমে ‘টক টু মেয়র’ কর্মসূচি চলছে। সেখানে ফোন করে নির্দিষ্ট এলাকার মানুষ তাঁদের সমস্যার কথা জানিয়ে থাকেন। অভিযোগ পেলে পুর কর্তৃপক্ষ দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে সমস্যা সমাধানের পথে হাঁটে। ইতিমধ্যে টক টু মেয়র কর্মসূচিতে ফোন করে দুই পুরনিগম এলাকার বহু মানুষের একাধিক সমস্যার সমাধান হয়েছে। সিউড়ি পুরসভার চেয়ারম্যান একপ্রকার সেই রাস্তাতেই হাঁটতে চলেছেন। তবে, কোনও ফোনের অপেক্ষায় না থেকে তিনি সরাসরি সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলে সমস্ত কিছু সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে চান। এক্ষেত্রে প্রতিটি ওয়ার্ডে কমবেশি দু’দিন করে ঘুরবেন চেয়ারম্যান। নির্দিষ্ট ওয়ার্ডের কাউন্সিলারদের সঙ্গে নিয়ে পরিদর্শন চলবে। সেক্ষেত্রে নিদেনপক্ষে একটানা ৪২দিন ধরে এই কর্মসূচি জারি থাকবে। আগামীতে প্রয়োজন অনুসারে ফের নতুন করে নির্দিষ্ট কর্মসূচির রূপরেখা তৈরি করা হবে।
সিউড়ি শহরের ২১টি ওয়ার্ডের প্রতিটিতেই কমবেশি পানীয় জল থেকে শুরু করে রাস্তা, পথবাতি সহ একাধিক বিষয়ে সমস্যা রয়েছে। নির্দিষ্ট কোনও এলাকায় কী ধরনের সমস্যা রয়েছে, তা সরেজমিনে খতিয়ে দেখতেই এহেন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পুরসভার এই উদ্যোগে আখেরে শহরের উন্নয়ন কতটা তরান্বিত হবে, তা নিয়ে অবশ্য প্রশ্ন রয়েছে।
শহরের বাসিন্দারা পুরসভার এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন। পুরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের সেহেড়াপাড়ার বাসিন্দা সৌমেন্দ্রনাথ দাস বলেন, বহুক্ষেত্রে আমাদের অনেক দাবি-দাওয়া সঠিক জায়গায় পৌঁছয় না। বিশেষ করে বয়স্করা সচরাচর পুরসভায় পৌঁছতে পারেন না। স্বাভাবিকভাবেই স্থানীয় এলাকার বহু সমস্যা পুরসভার চেয়ারম্যানের কাছে পৌঁছতে পারে না। এক্ষেত্রে পুরসভার চেয়ারম্যান নিজেই এলাকায় এলে আমরা উপকৃত হব। আশা করছি, পুরসভার এহেন উদ্যোগে শহরের উন্নয়ন আরও কিছুটা তরান্বিত হবে।