জলে ডুবল একাধিক সেতু ও কজওয়ে, বিচ্ছিন্ন বাঁকুড়া, দুর্গত এলাকায় ত্রাণ বিলি শুরু প্রশাসনের
বর্তমান | ০১ আগস্ট ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, বাঁকুড়া: নিম্নচাপের বৃষ্টির জেরে বাঁকুড়ার নদনদীগুলি ফুলেফেঁপে উঠেছে। দ্বারকেশ্বর, দামোদর, কংসাবতীর পাশাপাশি গন্ধেশ্বরী, শিলাবতী, শালির মতো ছোট নদী নালাও ফুঁসছে। জলস্তর বৃদ্ধি পাওয়ায় বাঁকুড়া-১ ও ২, সিমলাপাল, শালতোড়া, বড়জোড়া ব্লকের একাধিক কজওয়ে ও কালভার্ট জলের তলায় চলে গিয়েছে। বড়জোড়া ও বেলিয়াতোড়ে বেশকিছু মাটির বাড়ির ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এদিন বিভিন্ন ব্লকে ত্রাণ নিয়ে দুর্গতদের পাশে দাঁড়িয়েছে প্রশাসন। ব্লক প্রশাসনের কর্মী-আধিকারিকদের বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরও এদিন ময়দানে নামে। বড়জোড়ায় ত্রাণ বণ্টনে স্থানীয় বিধায়ক অলোক মুখোপাধ্যায় ও ব্লক তৃণমূল সভাপতি কালিদাস মুখোপাধ্যায় সহ অন্যান্যরা প্রশাসনের সঙ্গে হাতে হাত লাগিয়েছেন।
বাঁকুড়ার মানকানালি ও বাঁশি এলাকার বাসিন্দা দশরথ রানা, গৌরাঙ্গ মণ্ডল বলেন, গন্ধেশ্বরী ও দ্বারকেশ্বরের জলস্তর বৃদ্ধি পাওয়ায় কজওয়ে ডুবে গিয়েছে। তারফলে বাঁকুড়া শহরের সঙ্গে অন্তত ২০টি গ্রামের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। অনেকে ঘুরপথে যাতায়াত করছে।
উল্লেখ্য, গত এক মাস ধরে বাঁকুড়ায় নিম্নচাপের জেরে কার্যত টানা বর্ষণ হচ্ছে। জুন মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে শুরু হওয়া নিম্নচাপের জেরে জেলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। প্রায় এক হাজার বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রথম দফায় মোট ১৬ কোটি টাকার ক্ষতির হিসেব জেলা প্রশাসনের তরফে রাজ্যে পাঠানো হয়। জুলাই মাসজুড়ে বৃষ্টির কারণে জেলায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে। বাড়িঘরের পাশাপাশি সরকারি সম্পত্তিরও ক্ষতি হয়েছে। জেলার বেশকিছু প্রাথমিক বিদ্যালয়, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের সিলিং চুঁইয়ে জল ভিতরে পড়েছে। বিদ্যুৎ দপ্তরের খুঁটি, কৃষি সেচদপ্তরের আরএলআই প্রকল্পও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে বৃহস্পতিবার থেকে বিষ্ণুপুর মহকুমা সহ জেলার অন্যান্য ব্লকে আবহাওয়া পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। এদিন ভারী বৃষ্টি তেমন হয়নি। তাতে কংসাবতী নদীর মুকুটমণিপুর জলাধার, শালি নদীর গাংদুয়া ড্যাম সহ অন্যান্য জলাধার থেকে জল ছাড়ার পরিমাণও সেক্ষেত্রে কমতে পারে। তবে নতুন করে ফের বৃষ্টি হলে পরিস্থিতি ঘোরালো হয়ে উঠতে পারে।
জেলা বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের এক আধিকারিক বলেন, বৃহস্পতিবার বাঁকুড়া শহর সংলগ্ন কিছু কজওয়ে জলে ডুবেছে। সিমলাপাল, রাইপুর বড়জোড়া, শালতোড়াতেও একই চিত্র নজরে পড়েছে। বিপজ্জনক নদীঘাট, কজওয়ে, নিচু সেতু, কালভার্টগুলির উপর নজর রাখা হয়েছে। ওইসব জায়গায় কেউ যাতে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার না করেন, তারজন্য সকলকে সতর্ক করা হচ্ছে। পুলিস, সিভিক ভলান্টিয়ার ও বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর জওয়ানরা উপদ্রুত এলাকায় পাহারা দিচ্ছেন। • নিজস্ব চিত্র