আরামবাগে বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন, বাড়িতে ঢুকছে জল, ভাসছে গোঘাটের রাজ্য সড়ক
বর্তমান | ০১ আগস্ট ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, আরামবাগ: নাগাড়ে বৃষ্টিতে নতুন করে প্লাবিত হল আরামবাগ মহকুমার বিস্তীর্ণ অঞ্চল। ইতিমধ্যেই খানাকুলের বন্দরে রূপনারায়ণ নদ প্রাথমিক বিপদসীমা অতিক্রম করে বইছে। দ্বারকেশ্বর, মুন্ডেশ্বরী ও দামোদরেও জলস্তর বাড়ছে। জলে ভরেছে খালগুলিও। তার ফলে বিভিন্ন এলাকায় রাস্তাঘাট ডুবেছে। অনেক ঘরবাড়িতেও জল ঢুকে পড়েছে। তার জেরে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন বাসিন্দারা। সদ্য রোপণ করা ধানজমিতেও জল দাঁড়িয়েছে। যা চাষিদের কপালেও চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে। আরামবাগ ব্লকের বেশ কয়েকটি পঞ্চায়েতের একাধিক গ্রামে জল ঢুকেছে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবারও ডিভিসি প্রায় ৪৩ হাজার কিউসেক হারে জল ছেড়েছে। রূপনারায়ণ নদের প্রাথমিক বিপদসীমা ধরা হয় ৬.২৪ মিটার। বর্তমানে সেখানকার জলস্তর বেড়ে হয়েছে ৬.৩১ মিটার। এদিন সকাল পর্যন্ত আরামবাগে বৃষ্টি হয়েছে ৪১.১৫ মিলিমিটার। এদিন টানা কয়েক ঘণ্টা ধরে বৃষ্টি হয় মহকুমার বিভিন্ন এলাকায়। জুলাই মাসে আরামবাগে বৃষ্টি হয়েছে ৩৯৫.৮ মিলিমিটার।
কৃষিদপ্তরের এক আধিকারিক বলেন, মহকুমায় প্রায় ৬০ শতাংশের বেশি জমিতে ধানবীজ রোপণের কাজ হয়ে গিয়েছে। তবে যেসব নিচু এলাকায় জমিতে জল দাঁড়িয়েছে, সেখানে ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। কিছু এলাকায় বীজতলাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা হচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আরামবাগ ব্লকের প্রায় চারটি পঞ্চায়েত এলাকার একাধিক গ্রামে জল ঢুকেছে। রাস্তায় জল বইতে থাকায় যান চলাচল বিঘ্নিত হয়। অনেকের ঘরবাড়িতে জল ঢুকেছে। বিভিন্ন জায়গায় একহাঁটু জল দাঁড়িয়েছে। কোথাও আবার কোমর সমান জলও দাঁড়িয়েছে। আরামবাগের মাধবপুরে একটি খালের উপর থাকা বাঁশের সাঁকো ভেঙে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে। প্রশাসনের তরফে সেখানে নৌকার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। পুরশুড়ার একাংশেও জল দাঁড়িয়ে পড়েছে।
আরামবাগের মায়াপুর ১ পঞ্চায়েতের শুসনিপাড়ার বাসিন্দা আমিরুল ইসলাম বলেন, এদিন সকাল থেকে নিচু এলাকার রাস্তাঘাট জলে ডুবে গিয়েছে। হেঁটে জল পেরিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে। সদ্য আমনের বীজ রোপণ করা হয়েছিল। সেগুলি জলের তলায় চলে যাওয়ায় নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। আরামবাগের বলুন্ডির দেওয়ানপাড়ার বাসিন্দা শ্যামলী দেওয়ান বলেন, বুধবার বিকেল থেকে জল ঘরে ঢুকে গিয়েছে। খুবই সমস্যার মধ্যে কাটাতে হচ্ছে। রান্না করার মতোও পরিস্থিতি নেই।
আরামবাগের বিডিও সুব্রত মল্লিক বলেন, কয়েকটি পঞ্চায়েতের কিছু গ্রামে জল ঢুকেছে। জল নামতেও শুরু করেছে। পরিস্থিতির খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের এক আধিকারিক বলেন, নতুন করে বৃষ্টির পূর্বাভাস নেই জেলায়। ফলে আজ, শুক্রবার থেকে জল নামতেও পারে।