বন্যা নিয়ে উদ্বেগ উত্তর ২৪ পরগনায় রোগীকে ভেলায় চাপিয়ে আনা হল রাস্তায়
বর্তমান | ০১ আগস্ট ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, বারাসত: উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় বন্যা পরিস্থিতি ক্রমশ ভাবাচ্ছে প্রশাসনকে। বৃষ্টির মাত্রা বাড়ায় বিভিন্ন এলাকা জলমগ্ন হচ্ছে। শহরের ক্ষেত্রে পাম্প বসিয়ে জল বের করার ব্যবস্থা করছে প্রশাসন। উদ্বেগজনক পরিস্থিতি বাদুড়িয়ার। চারিদিক জলমগ্ন। এলাকায় ঢুকতে পারছে না অ্যাম্বুলেন্স। কলার ভেলায় ভাসিয়ে রোগীকে নিয়ে গিয়ে তোলা হল অ্যাম্বুলেন্সে। ঘটনাকে ঘিরে রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছে গোটা জেলায়।
উত্তর ২৪ পরগনা জেলার ২২টি ব্লকের প্রতিটি এলাকা কমবেশি জলমগ্ন। গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় বৃষ্টির পরিমাণ ৩৩৯ এমএম। এর জেরে শহরের পাশাপাশি গ্রামীণ এলাকাতেও জল জমে গিয়েছে। সব থেকে উদ্বেগজনক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বনগাঁ, গাইঘাটা, স্বরূপনগর, বাদুড়িয়া, বারাসত, হাবড়া সহ বেশ কিছু এলাকা এখনও জল থইথই করছে। ইতিমধ্যেই বন্যা পরিস্থিতি ক্রমশ ভয়ঙ্কর আকার ধারণ করায় প্রতিটি ব্লক প্রশাসনের আধিকারিকদের নিয়ে বৃহস্পতিবার বৈঠক করেন জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলার মোট ২৮টি গ্রাম পঞ্চায়েত বিপর্যস্ত হয়েছে। ১২টি পুরসভার ১২১ ওয়ার্ড ক্ষতিগ্রস্ত। মোট ৭১টি পাম্প বসিয়ে জল নিষ্কাশন করা হচ্ছে। ১৭টি ত্রাণ শিবির ৮২৪ জন মানুষকে রাখা হয়েছে। ইতিমধ্যেই ২৭ হাজার ৮৩১টি ত্রিপল দেওয়া হয়েছে। তবে, এদিন ভার্চুয়াল বৈঠকে বিদ্যাধরী ডিভিশন জেলা প্রশাসনের তোপের মুখে পড়ে। সূত্রের খবর, ইছামতী নদী ও যমুনা খালের কচুরিপানা পরিষ্কারের জন্য সংশ্লিষ্ট এজেন্সিকে টেন্ডার দিয়েছে বিদ্যাধরী ড্রেনেজ ডিভিশন। তারপর দীর্ঘদিন কেটে গেলে সেই কাজ এখনও শুরু হয়নি। ফলে, মানুষের ভোগান্তি বাড়ছে বলেই উষ্মা প্রকাশ করেন জেলাকর্তারা। এনিয়ে সভাধিপতি নারায়ণ গোস্বামী বলেন, বিভিন্ন দপ্তরের আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন ভার্চুয়ালি। ইতিমধ্যে রাজ্য সরকার ইছামতী নদী ও যমুনা-পদ্মা খাল সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে। দ্রুত জল নিকাশির জন্য স্বরূপনগরে ইছামতীর টিপি পার্ক দ্রুত কেটে ফেলা হবে। শুক্রবার দপ্তরের আধিকারিকরা এলাকায় যাবেন। পাশাপাশি প্রতিটি ত্রাণ শিবিরে মানুষের পরিষেবা সুনিশ্চিত করার বার্তাও দেওয়া হয়েছে।
তবে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে একটি ভিডিওকে ঘিরে। বাদুড়িয়ার চাতরা পঞ্চায়েতের বিস্তীর্ণ এলাকা জনমগ্ন। শ্বাসকষ্টে ভোগা রোগীকে দেখা গিয়েছে কলার ভেলায় করে রাস্তায় আসতে। পরে তাঁকে তোলা হয় অ্যাম্বুলেন্সে। প্রায় ১০০ মিটার আনা হয়েছে ভেলায়। পরিবারের সদস্য আনোয়ার মণ্ডল বলেন, কাকা দীর্ঘদিন ধরে শ্বাসকষ্টে ভুগছে। তাই গাড়ি না আসায় ভেলায় করে অ্যাম্বুলেন্স পর্যন্ত আনা হয়েছে। নিয়ে যাব কলকাতায়। চাতরা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান আসলাম উদ্দিন বলেন, ছবিটি চক্রান্ত করে সাজানো। তবে জলযন্ত্রণার দ্রুত সমাধানের আমরা ব্যবস্থা করছি।