• পর পর ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় উদ্বিগ্ন আইআইটি খড়্গপুর! সুপ্রিম কোর্টের কড়া পর্যবেক্ষণের পর কী কী সিদ্ধান্ত নিলেন কর্তৃপক্ষ?
    আনন্দবাজার | ০১ আগস্ট ২০২৫
  • একের পর এক পড়ুয়ার অস্বাভাবিক মৃত্যু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে! গত সাত মাসে পাঁচ পড়ুয়ার অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। তা নিয়ে উদ্বিগ্ন আইআইটি খড়্গপুর। পর পর ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টও কড়া পর্যবেক্ষণের কথা জানিয়েছে। সেই আবহে এ বার কয়েকটি সিদ্ধান্ত নিলেন আইআইটি খড়্গপুর কর্তৃপক্ষ।

    পড়ুয়ারা যাতে পরিবারের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতে পারেন, ইতিমধ্যেই তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পাশাপাশি, কর্তৃপক্ষের তরফেও পড়ুয়াদের পরিবারের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখার কথা ভাবা হয়েছে। কর্তৃপক্ষ সূত্রের বক্তব্য, অনেক সময় নানা রকম পারিবারিক চাপ পড়ুয়াদের মাথায় ঘোরে। এতে তাঁদের মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতিও হয়। পড়ুয়াদের উপর অন্য কোনও বিষয় যাতে চাপিয়ে না-দেওয়া হয়, তা নিয়েই পরিবারের লোকেদের সঙ্গে সময় সময়ে কথা বলবেন কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি, পড়ুয়াদের জন্য পূর্ণ সময়ের মনোবিদ নিয়োগ করার কথাও ঘোষণা করেছেন ডিরেক্টর সুমন চক্রবর্তী। তিনি বলেন, ‘‘কয়েক দিনের মধ্যে মনোবিদ নিয়োগ করা হবে।’’ পড়ুয়াদের মানসিক চাপ কমাতে এবং তাঁদের মনোবল চাঙ্গা করতে বিভিন্ন কর্মসূচিও নেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন ডিরেক্টর।

    নিয়মিত পড়ুয়াদের সঙ্গে দেখা করার পরিকল্পনাও নিয়েছেন সুমন। সম্প্রতি আইআইটি খড়্গপুরের বিভিন্ন হল ঘুরে নতুন বর্ষের পড়ুয়া এবং তাঁদের অভিভাবকদের সঙ্গে দেখা করেছেন তিনি। কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিয়েছে, পড়ুয়াদের থাকার হলগুলিতে সিলিং ফ্যানের পরিবর্তে এ বার স্প্রিং ফ্যান লাগানো হবে। আইআইটি খড়্গপুরে ২১টি হলে প্রায় ১৬ হাজার পড়ুয়া ‌থাকে। প্রতিটি হলে একাধিক ঘর। সিঙ্গল, ডাবল এবং ট্রিপল বেড রয়েছে ঘরগুলিতে।

    কর্তৃপক্ষ সূত্রের খবর, সব ক’টি হল থেকে সিলিং ফ্যান কিনে স্প্রিং ফ্যান লাগাতে মাস তিনেক সময় লেগে যাবে। রাজস্থানের কোটাতেও একাধিক কোচিং সেন্টারেও এ রকম স্প্রিং ফ্যান লাগানো হয়েছে। সেই ব্যবস্থাই কার্যকর করতে চাইছেন আইআইটি খড়্গপুর কর্তৃপক্ষ। সূত্রের খবর, স্প্রিং ফ্যানে অ্যালার্ম লাগানোর কথাও ভাবা হয়েছে। যাতে স্প্রিং ফ্যান নীচের দিকে নামলেই টের পান কর্তৃপক্ষ। তাতে দ্রুত সংশ্লিষ্ট হলে পৌঁছোনো সম্ভব হবে। ডিরেক্টর বলেন, ‘‘পড়ুয়াদের জন্য যা কিছু ভাল, তা বাস্তবায়িত করা হবে।’’

    প্রসঙ্গত, আইআইটি খড়্গপুর এবং নয়ডার এক বিশ্ববিদ্যালয়ে চলতি মাসে এক পড়ুয়ার মৃত্যুর ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত পদক্ষেপ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। আইআইটি খড়্গপুরে চতুর্থ বর্ষের এক পড়ুয়ার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় দিন কয়েক আগেই। অনুমান, ওই পড়ুয়া আত্মহত্যা করেছেন। উত্তরপ্রদেশের নয়ডাতেও এক বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেল থেকে ছাত্রীর দেহ উদ্ধার হয় গত সপ্তাহে। উদ্ধার হয় সুইসাইড নোটও। সেই মামলায় বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা এবং বিচারপতি আর মহাদেবনের বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ ছিল, নিশ্চয়ই কিছু একটা গলদ রয়েছে শিক্ষাব্যবস্থায়। বিচারপতিরা প্রশ্নও তুলেছিলেন, “আইআইটি খড়্গপুরে সমস্যা কোথায়? কেন পড়ুয়ারা আত্মহত্যা করছেন? আপনারা কি এটি ভেবে দেখেছেন?”
  • Link to this news (আনন্দবাজার)