• বাংলাদেশি মডেলের মা-বাবার নথিও পুলিশি নজরে
    আনন্দবাজার | ০১ আগস্ট ২০২৫
  • বাংলাদেশি মডেল তথা নায়িকা শান্তা পাল একা নন, তাঁর মা-বাবাও কলকাতায় বসবাস করছেন। ধৃত ওই মডেলের মা-বাবা ২০২১ সালের পরে কলকাতায় চলে আসেন বলে পুলিশ প্রাথমিক ভাবে জেনেছে। লালবাজারের দাবি, শান্তার মা-বাবার কাছে কোনও বাংলাদেশি পরিচয়পত্র বা নথি মেলেনি। মিলেছে ভারতীয় পরিচয়পত্র। তদন্তকারীরা ওই পরিচয়পত্রগুলি পরীক্ষা করে দেখছেন। প্রাথমিক ভাবে শান্তার মা-বাবার বিরুদ্ধে তথ্যপ্রমাণ না মেলায় তাঁদের গ্রেফতার করা হয়নি।

    এক তদন্তকারী জানান, ভারতীয় ওই পরিচয়পত্রগুলি সঠিক কিনা, তা সংশ্লিষ্ট দফতরের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে, ধৃত শান্তা কলকাতায় কাদের সঙ্গে মেলামেশা করতেন, তার খোঁজ চলছে। প্রাথমিক তদন্তের পরে গোয়েন্দারা জেনেছেন, কলকাতার এক বাসিন্দা শান্তাকে ভারতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করতে সাহায্য করেছিলেন। তিনি কে, তা জানার চেষ্টা চলছে। এর পিছনে আধার, ভোটার কার্ড তৈরির চক্র আছে বলে গোয়েন্দারা মনে করছেন।

    লালবাজারের গুন্ডা দমন শাখার তদন্তকারীরা সোমবার গল্ফ গ্রিন থানার বিক্রমগড়ের একটি ভাড়া বাড়ি থেকে গ্রেফতার করেন বাংলাদেশের মডেল শান্তাকে। তাঁর থেকে মেয়াদ উত্তীর্ণ পাসপোর্ট ও ভিসা ছাড়াও মিলেছে এ দেশের দু’টি আধার, ভোটার ও রেশন কার্ড। উদ্ধার হওয়া দু’টি আধার কার্ডের একটির ঠিকানা কলকাতার, অন্যটি বর্ধমানের। এ ছাড়াও মিলেছে মেয়াদ উত্তীর্ণ একটি বাংলাদেশি পাসপোর্ট, মাধ্যমিক পরীক্ষার অ্যাডমিট কার্ড এবং একটি বিমান সংস্থার পরিচয়পত্র। ওই বিমান সংস্থায় তিনি কাজ করতেন বলে দাবি করেছেন শান্তা। তবে তাঁর কাছ থেকে ভারতে আসার ভিসা মেলেনি। পুলিশের দাবি, ধৃতের থেকে উদ্ধার হওয়া ভারতীয় পরিচয়পত্রের প্রতিটির ঠিকানা ভিন্ন। কোনওটায় ঠিকানা বিক্রমগড়, কোনওটিতে নিউ আলিপুর বা বর্ধমান বলে দেখানো হয়েছে।

    প্রাথমিক ভাবে পুলিশ জেনেছে, ২০২৩ সাল থেকে বিক্রমগড়ের ফ্ল্যাটে ভাড়া ছিলেন শান্তা। বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন ঠিকানা ব্যবহার করতেন। সম্প্রতি তিনি পর্যটনের ব্যবসা শুরু করবেন বলে কয়েক জনের সঙ্গে যোগাযোগও করেন। গোয়েন্দারা জানান, পার্ক স্ট্রিট থানা এলাকার এক বাসিন্দার সঙ্গে সেই সূত্রে পরিচয় হয় শান্তার। ওই ব্যক্তিই পরে অভিযোগ করেন যে, বাংলাদেশের নাগরিক শান্তা সে দেশের পাসপোর্ট নিয়ে ভারতে এলেও ভারতীয় পরিচয়পত্র বানিয়ে শহরে থাকছেন। এর পরেই শান্তাকে গ্রেফতার করেন তদন্তকারীরা।

    লালবাজার জানিয়েছে, এ দেশে এসে তেলুগু ছবিতে কাজ করেন শান্তা। কী ভাবে সেই সুযোগ মিলেছিল, তা পুলিশ খতিয়ে দেখছে। বাংলাদেশে শান্তা দু’টি নামী প্রতিষ্ঠানে মডেল হিসাবে কাজ করেন। বাংলাদেশি সিনেমাতেও কাজ করেছেন বলে দাবি। ২০১৯ সালে সুন্দরী প্রতিযোগিতায় অংশ নেন।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)