সুব্রত বিশ্বাস: যাত্রী চলাচল আরও সুবিধাজনক করতে এবার শিয়ালদহ স্টেশন চত্বরে দেওয়া হবে ব্যারিকেড। আগামী ১৫ আগস্টের মধ্যে এই ব্যারিকেড পরীক্ষামূলকভাবে চালু করবে রেল। শিয়ালদহ ডিভিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, দৈনিক ১৫ লক্ষ যাত্রী যাতায়াত করে এই স্টেশন দিয়ে। তাঁদের সুবিধার জন্য এই ব্যারিকেড দেওয়ার পরিকল্পনা।
জানা যাচ্ছে, পরিকল্পনা যেভাবে নেওয়া হয়েছে তা, বিআর সিং হাসপাতাল ও শিয়ালদহ আদালতের সামনের রাস্তা যেখানে রেল চত্বরে মিলে গিয়েছে, সেখান থেকে শুরু হবে চারটি লেন। ব্যারিকেড দিয়ে নির্ধারিত হবে সেই লেন। স্টেশনের দিকে ঢুকতে একেবারে বাঁ-দিকের লেনটি যাত্রীদের যাতায়াতের জন্য, তার পাশেই হবে ভিআইপি লেন। ভিআইপিদের গাড়ি যাতায়াতের জন্য ব্যবহার হবে এই লেনটি। তার পাশের লেনটি অ্যাপ ক্যাবের জন্য। যাত্রীদের স্টেশন চত্বর থেকে তুলে বা নামিয়ে সরাসরি বেরিয়ে যাবে এই গাড়িগুলি। আর একেবারে ডান দিকে অটো, টোটোর লেন।
ডিআরএম সম্প্রতি সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলিকে নির্দেশ দিয়েছেন, ১৫ আগস্টের আগেই পরীক্ষামূলকভাবে এই লেন তৈরি করে তা কাজে লাগানোর জন্য। প্রয়োজনে বাঁশ দিয়ে ব্যারিকেড তৈরি করে পরীক্ষামূলকভাবে কাজ শুরু করার জন্য। চার লেনের ব্যবস্থার পাশাপাশি কোলে মার্কেটে যাতায়াতকারী ঠেলা, ট্রলি ও মানুষজনের জন্য একটিমাত্র রাস্তা থাকবে, যা দিয়ে মার্কেটের দিকে যাওয়া গেলেও মার্কেটের দিক থেকে ঢোকা যাবে না সেই রাস্তা দিয়ে। ফলে তাঁদের স্টেশনে ঢুকতে হবে প্রফুল্ল দ্বার দিয়েই। সংশ্লিষ্ট গেটটি দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে। ওই বিভক্ত ৪ লেনে মিলবে সাফল্য অঞ্চলে স্টেশনের একাধিক উন্নয়নমূলক কাজ হচ্ছে। তবে ডিভিশন সূত্রে বলা হয়েছে, আগামী পুজোর আগেই এই দ্বার জনসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হবে। সেখানে থাকবে বুকিং কাউন্টার থেকে পণ্য বুকিংয়ের ব্যবস্থা।
শিয়ালদহ স্টেশনে দৈনিক গড়ে ১৫ লক্ষ যাত্রী চলাচল করেন। পুজোর সময় তা আঠারোতে গিয়ে দাঁড়ায়। বিপুল সংখ্যক মানুষজনের যাতায়াতের নির্ধারিত কোনও স্থান নেই বলে আধিকারিকদের মত। এমনকী অটো, ক্যাব, মানুষ সবই মিলেমিশে যাওয়ায় সবারই অসুবিধা হয়। বিশেষ করে যাত্রীদের। সামনাসামনি ধাক্কা বহু ক্ষেত্রে চলাফেরার বিঘ্ন ঘটায়, ট্রেন মিস করে বসেন তাঁরা। এমন অভিযোগ বারবার উঠছিল। তাই প্রতিটি বিষয়কে বিভক্ত করার এই পরিকল্পনা। এ নিয়ে কলকাতা পুলিশের ট্র্যাফিক বিভাগের মতও নেবে রেল। পরীক্ষা সফল হলে তা বাস্তবায়িত হবে। একেবারে স্থায়ী বেড়া লাগিয়ে চলাফেরায় আনা হবে মসৃণতা বলে রেল কর্তাদের মত।
একই পদ্ধতিতে ট্রেন চালানোর পরিকল্পনা ডিভিশনের। এনিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষাও চালানো শুরু করেছে রেল। বিভিন্ন শাখার ট্রেনগুলিকে এমনভাবে চালানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে যাতে, এক দিকের ট্রেনগুলি নির্ধারিত প্ল্যাটফর্ম থেকে ছাড়বে। যেমন বনগাঁ, বারাসত, বসিরহাটের ট্রেন নির্ধারিত দিকের প্ল্যাটফর্ম থেকে ছাড়বে। রানাঘাট, কল্যাণী, কৃষ্ণনগর প্রভৃতি ট্রেনগুলিও অন্যদিকের প্ল্যাটফর্মের থেকে ছাড়বে। যাতে নির্দিষ্ট দিকের যাত্রীদের ঘুরে বেড়াতে না হয়, স্টেশনে ঢুকে নিজেদের প্ল্যাটফর্মে চলে যাবেন। ফলে তাঁদের বিশেষ সুবিধার সঙ্গে ভিড়ও এড়ানো সম্ভব হবে। তবে এনিয়ে একাধিক পরিবর্তন আনতে হবে। তা কতটা ফলপ্রসূ হবে, এখনও সেই বিষয়টা নিশ্চিত নয় বলে অপারেশন বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে।