• জমিবিবাদে মাসছয়েক উদ্বেগে কেটেছে দিন! খুনের আঁচ পেয়েছিলেন কোন্নগরের তৃণমূল নেতা?
    প্রতিদিন | ০২ আগস্ট ২০২৫
  • সুমন করাতি, হুগলি: মাসছয়েক কেমন যেন অন্যরকম হয়ে গিয়েছিলেন। বেশ উদ্বেগে যে দিন কাটছে, তা বোঝা যাচ্ছিল। ইতিমধ্যে আবার জমিজমা নিয়ে সমস্যা চলছিল। অবশ্য সেই টানাপোড়েনের কারণ জমিজমাই ছিল কিনা, সে বিষয়ে কাউকে কিছু বলেননি। একথাই জানান তৃণমূল নেতা পিন্টু চক্রবর্তী ওরফে মুন্না ‘ঘনিষ্ঠ’ ইস্টবেঙ্গল কর্মকর্তা মানস রায়। প্রশ্ন উঠছে, তবে কি আগেই এই অঘটনের আঁচ পেয়েছিলেন তৃণমূল নেতা। এদিকে, এই ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ তৃণমূল নেতার অফিসের পাশের পানশালায় দুই সন্দেহভাজনের ছবি ধরা পড়েছে। খুব শীঘ্রই ঘটনার কিনারা হবে বলেই আশাবাদী তদন্তকারীরা।

    প্রায় ১৫ বছর ধরে মানস রায়ের চেনা পরিচিতি। তিনি জানান, “পারিবারিক যে কোন অনুষ্ঠানে ডাক পড়ত পিন্টুর। অনেক সময় নিজের দাদা মনে করে মনের কথা শেয়ার করত। সবসময় আমাকে সম্মান দিয়ে কথা বলত। খুব ভালো ছেলে ছিল। ঘটনার দিন ঘন্টাখানেক আগে আমি ওই রাস্তা দিয়ে ফিরেছি। এখনও বিশ্বাস করতে পারছি না সে আর আমাদের মধ্যে নেই। তার মধ্যে আমি কোনও রাজনৈতিক দলাদলি বা কোনও খারাপ কাজ দেখতে পাইনি। দেড়মাস আগে আমার এক ভাইয়ের বিয়ের অনুষ্ঠানে তার সঙ্গে দেখা হয়েছিল। তবে জানুয়ারি মাসের পর থেকে ওকে দেখে আমার মনে হয়েছে একটু চিন্তিত ছিল। যাকে আমি সবসময় হাসিখুশি দেখে এসেছি তার মধ্যে একটা চিন্তার ছাপ ছিল। তিন-চার বছর আগে আমাকে একবার বলেছিল মুন্না-সহ কানাইপুরের কয়েকজন মিলে ডানকুনিতে একটা জমি কিনেছে। সেখানে টাকাপয়সা নিয়ে একটা অশান্তি হয়েছিল। প্রায় ৪-৫ বছর আগের ঘটনা। তারপর থেকেই মুন্নার সাথে গত দু-তিন বছরে এ বিষয়ে আর কোনও কথা হয়নি। বিভিন্ন সামাজিক কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকত মুন্না। কোন গরিব মানুষ তার কাছে সাহায্যের জন্য আসলে তাঁকে উপকার করত। আমি চাই দোষীদের কঠোর থেকে কঠোরতম শাস্তি হোক।”

    গত ৩০ জুলাই খুন হন তৃণমূল নেতা পিন্টু চক্রবর্তী ওরফে মুন্না। গ্যাস অফিস থেকে বেরনোর পর দুষ্কৃতীর এলোপাথাড়ি কোপে হাত বাদ যায় তাঁর। পরে এসএসকেএম হাসপাতালে মৃত্যু। এই ঘটনার পর দু’দিন পার। এখনও অধরা অভিযুক্তরা। বিশেষ টিম তৈরি করে দুষ্কৃতীদের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। কেউ খুনের সুপারি দিয়েছিল কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্তকারীদের দাবি, আততায়ীরা বহিরাগত। খুনের আগে দুষ্কৃতীরা রেকি করেছিল বলে অনুমান। সিসিটিভি ফুটেজে তৃণমূল নেতার গ্যাসের অফিসের পাশে পানশালায় সন্দেহভাজন দু’জনের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গিয়েছে। ঘটনার দিন সন্ধেয় ঝিমঝিম বৃষ্টিতে রাস্তা ফাঁকা থাকার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা বলেই মনে করছে পুলিশ।
  • Link to this news (প্রতিদিন)