খালের গার্ডওয়াল ধসে ভাঙল বাড়ি, একাধিক বাড়িতে ফাটল, আতঙ্ক হাওড়ায়
প্রতিদিন | ০২ আগস্ট ২০২৫
অরিজিৎ গুপ্ত, হাওড়া: খালের গার্ডওয়াল ভেঙে মাটিতে গঙ্গার জল ঢুকে ধসে গেলে রাস্তা ও বস্তির একাধিক ঘর। ঘটনায় ৮টি একতলা পাকা ঘর একেবারে ভেঙে পড়েছে। এছাড়াও প্রায় ৫৭টি ঘরে ফাটল দেখা গিয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে হাওড়ার শালিমারের ফরশোর রোডের বালুঘাট এলাকায়। প্রবল বৃষ্টির জেরে এলাকার স্বর্ণময়ী খালের গার্ডওয়ালে ফাটল ধরতে শুরু করেছিল বৃহস্পতিবার। শুক্রবার সকালে সেই গার্ডোয়াল একেবারে ভেঙে পড়ে। ফলে ওই বস্তির প্রচুর বাসিন্দা গৃহহীন হয়ে পড়েছেন। খবর পেয়েই জেলা প্রশাসন ও হাওড়া পুরসভা বাসিন্দাদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। মহিলা, শিশু-সহ বাসিন্দারা ক্লাব ঘরে আশ্রয় নিয়েছেন। জেলা প্রশাসনের তরফে খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবারই ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন দক্ষিণ হাওড়ার বিধায়ক নন্দিতা চৌধুরি। শুক্রবার সকালে ঘটনাস্থলে ছুটে যান হাওড়ার জেলাশাসক পি দীপাপ্রিয়া ও হাওড়া পুরসভার মুখ্য প্রশাসক সুজয় চক্রবর্তী। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন রাজ্য সরকারের সেচ দপ্তর ও পুরসভার ইঞ্জিনিয়াররা। গৃহহীন বাসিন্দাদের এলাকার ফাঁকা জায়গা ও ক্লাবে অস্থায়ীভাবে থাকার ব্যবস্থা করা হয়। হাওড়া পুরসভার মুখ্য প্রশাসক সুজয় চক্রবর্তী বলেন, ‘‘গত কয়েক দিনের ভারি বৃষ্টির জন্যই খালের গার্ডওয়াল ধসে মাটিতে জল ঢুকে রাস্তা ধসিয়ে বস্তির ঘরগুলিতে ফাটল ধরিয়ে দিয়েছে। সেচ দপ্তর আপাতত শালবল্লা দিয়ে গার্ডওয়ালটিকে দাঁড় করাবে তার পর ধীরে ধীরে তা মেরামত করা হবে।’’ তিনি প্রতিশ্রুতি দেন, যদি ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দারা নতুন করে তাঁদের ঘর তৈরি করে দিতে বলেন, তাহলেও জেলা প্রশাসন সেই নতুন ঘর তৈরি করে দিতে প্রস্তুত। জেলা প্রশাসনের তরফে বাসিন্দাদের নিরাপত্তার বিষয়টিও বিশেষভাবে নজর দেওয়া হচ্ছে জানানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, প্রায় আড়াই কিলোমিটার লম্বা স্বর্ণময়ী খালটি আন্দুল রোড থেকে শুরু হয়ে শালিমারের ভিতর দিয়ে গিয়ে পদ্মপুকুর এলাকায় গিয়ে মিশেছে। এই খালের মাঝখানে একটি লকগেটও রয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন বস্তির বাসিন্দারা। স্থানীয় বাসিন্দা শেখ জলিল বলেন, ‘‘একদিকে লকগেট খারাপ হয়ে যাওয়ায় খালে প্রচুর জল হয়ে মাটি ধসে যাচ্ছে। অন্যদিকে খালের পাশেই একটি বেসরকারি সংস্থা বড় আবাসন তৈরির কাজ শুরু করেছে। সেখানে ফাঁকা জমিতে দিনের পর দিন পাইলিংয়ের কাজ হওয়ার জন্যও মাটি বসে গিয়ে এই বিপত্তি হয়েছে।’’ স্থানীয়দের এই অভিযোগ খতিয়ে দেখছেন প্রশাসনের আধিকারিকরা।ধস নামার জন্য ভারি বৃষ্টিকেও দায়ী করছেন বাসিন্দারা।