• রচনার আচরণ নিয়ে সেনাপতি অভিষেকের কাছে নালিশ তৃণমূল বিধায়কের! জবাবও দিলেন সাংসদের হুঁশিয়ারির
    আনন্দবাজার | ০১ আগস্ট ২০২৫
  • রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আচরণ নিয়ে দলের সেনাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে নালিশ ঠুকেছেন অসিত মজুমদার। শুক্রবার এ কথা নিজেই জানিয়েছেন চুঁচুড়ার তৃণমূল বিধায়ক অসিত। শুধু অভিষেকই নয়, দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী, রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের কাছেও অভিযোগ করেছেন বলে জানান বিধায়ক।

    চুঁচুড়ার বাণীমন্দির স্কুলে স্মার্টক্লাস তৈরিকে কেন্দ্র করে হুগলির সাংসদ রচনার সঙ্গে অসিতের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এসেছে। সাংসদ তহবিলের টাকায় স্মার্টক্লাস তৈরি হচ্ছে দেখে তা নিয়ে স্কুলে গিয়ে তাণ্ডব, প্রধানশিক্ষিকাকে গালিগালাজ করার অভিযোগ উঠেছে বিধায়কের বিরুদ্ধে। তা নিয়ে ক্ষোভ উগরে বিধায়ককে পাল্টা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন রচনা। বলেছেন, ‘‘আগামী দিনেও আমি স্মার্ট ক্লাসরুম করব। স্কুলের পাশে থাকব। মানুষের পাশে থাকব। কথা দিলাম। কার কত দম আছে আমাকে আটকে দেখাক।’’

    দলের কারও সম্পর্কে এ ভাবে প্রকাশ্যে ক্ষোভ উগরে দেওয়া নিয়েই আপত্তি তুলেছেন অসিত। তাঁর বক্তব্য, প্রথমত তিনি স্কুলে কাউকে গালিগালাজ করেননি। দ্বিতীয়ত, সাংসদের যদি সত্যিই কোনও অভিযোগ থেকে থাকে, তা হলে তিনি তা বিধায়ককে ফোন করেও জানাতে পারতেন। কিংবা দলীয় নেতৃত্বকে বলতে পারতেন। এ ভাবে প্রকাশ্যে বলা ঠিক হয়নি।

    অসিতের কথায়, ‘‘সাংসদ কেন আমার সঙ্গে কথা না-বলে সাংবাদিকদের জানালেন, সেটা উনিই বলতে পারবেন। উনি দলের সাংসদ। আর আমি দীর্ঘ দিন ধরে দল করি। উনি আমার মেয়ের মতো। উনি কী করলেন, কী বললেন, তাতে কিছু আমার যায়-আসে না। ঈশ্বরের কাছে কামনা করি, উনি ভাল কাজ করুন।’’

    বিধায়কের দাবি, সাংসদকে কেউ ভুল বুঝিয়েছেন। তাই তিনি এ ধরনের কথা বলেছেন। রাজ্য নেতৃত্বের পাশাপাশি জেলা নেতৃত্বকেও বিষয়টি সম্পর্কে অবগত করেছেন বলে জানান অসিত। তিনি বলেন, ‘‘আমার সামনে কেউ যদি বেআইনি কিছু কাজ করে, অনিয়ম করে, তা হলে আমি ১০০ বার তার প্রতিবাদ করব।’’

    প্রসঙ্গত, অসিতের বিরুদ্ধে স্কুলে গিয়ে ঝামেলা করার অভিযোগ ওঠার পরেই বৃহস্পতিবার স্কুল পরিদর্শনে গিয়েছিলেন রচনা। সেখানে তাঁর কাছে বিধায়কের আচরণ নিয়ে ক্ষোভ উগরে দেন শিক্ষিকারা। তার পরেই রচনা বলেন, ‘‘আমার কাছে এটা আশ্চর্যজনক একটা ঘটনা। আমি বাক্‌রুদ্ধ। কিছু বলার ভাষা পাচ্ছি না। আমি অবাক হয়ে গেলাম এটা শুনে যে, তৃণমূল বিধায়ক এখানে এসে শিক্ষিকাদের অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করেছেন! কেন সাংসদ তহবিলের টাকায় এই স্মার্ট ক্লাসরুম দেওয়া হল, তা নিয়ে উনি চিৎকার চেঁচামেচি করেছেন। কাগজ দেখাতে বলেছেন। কে অনুমতি দিয়েছে, জানতে চেয়েছেন।’’

    অসিতের অবশ্য বক্তব্য, তিনি স্কুলের পরিচালন সমিতির সদস্য। অথচ তাঁকে না-জানিয়েই স্কুলে কাজ চলছে। স্কুলের সভাপতিও সে বিষয়ে কিছু জানতেন না। বিধায়কের কথায়, ‘‘আমাকে এক অভিভাবক ফোন করেছিলেন। বাইরে থেকে চারটে ছেলে এসে কাজ করছে। যদি কিছু ঘটে যায়, তখন নিরাপত্তার দায় কে নেবে? যারা কাজ করছিল, তাদের পরিচয়পত্র জমা রাখা হয়েছে কি না, জিজ্ঞেস করেছিলাম।’’

    অসিতের বক্তব্য, তিনি কাউকে গালিগালাজ করেননি। উচ্চস্বরে কথা বলেছেন মাত্র। প্রধানশিক্ষিকার উদ্দেশেও তিনি বলেন, ‘‘স্কুলের কোনও মেয়ের যদি কিছু হয়ে যায়, তা হলে সরকারের মুখ পুড়বে। আপনার মাইনে এক টাকাও কমবে না। এটা বলা যদি আমার অন্যায় হয়, তা হলে এই অন্যায় বার বার করব।’’
  • Link to this news (আনন্দবাজার)