ফের মহারাষ্ট্রে বাঙালি শ্রমিক খুন! ভাইয়ের ফোনে এল দাদার রক্তাক্ত দেহের ছবি, ভাষার জন্য হত্যা হয়তো: তৃণমূল বিধায়ক
আনন্দবাজার | ০১ আগস্ট ২০২৫
মহারাষ্ট্রে আরও এক বাঙালি পরিযায়ী শ্রমিকের রহস্যমৃত্যু! পুণেতে কাজে গিয়ে মৃত্যু হয়েছে জলপাইগুড়ির রাজগঞ্জের বিন্নাগুড়ি পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দা দীপু দাসের (২৮)। পরিবারের দাবি, দীপুকে খুন করা হয়েছে। দীপুর রক্তমাখা ছবিও এসেছে তাঁর ভাইয়ের ফোনে। তা দেখে পরিবার জানিয়েছে, দীপুর গলায় ধারালো অস্ত্রের দাগ রয়েছে।
বাংলাভাষী পরিযায়ী শ্রমিকদের বিভিন্ন রাজ্যে হেনস্থা হতে হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সেই আবহে দিন কয়েক আগে মহারাষ্ট্রের ভাসি থানা এলাকার ওয়াসিগাঁওয়ে খুন হন উত্তর ২৪ পরগনার বাদুড়িয়ার নারায়ণপুর পশ্চিমপাড়ার বাসিন্দা আবু বক্কর মণ্ডল। প্রাথমিক ভাবে দাবি করা হয়েছিল, বাংলাভাষী হওয়ার জন্যই আবু বক্করকে খুন করা হয়েছে। যদিও পরে তদন্তে দেখা যায়, আবু বক্করের খুনের নেপথ্যে সম্পর্কের টানাপড়েন সংক্রান্ত কারণই বেশি জোরালো। যদিও ঘটনার তদন্ত এখনও চলছে।
কিন্তু দীপুর মৃত্যুর নেপথ্য-কারণ নিয়ে তরজা শুরু হয়েছে। রাজগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক খগেশ্বর রায়ের দাবি, বাংলা ভাষা বলায় দীপুকে খুন করা হয়ে থাকতে পারে। এ নিয়ে উচ্চপর্যায়ের তদন্তের দাবিও তুলেছেন তিনি। বিধায়ক বলেন, ‘‘গোটা ঘটনা শুনেছি। পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গেও কথা হয়েছে। তবে একটাই সন্দেহ, বাংলা বলার জন্য মেরে ফেলা হতে পারে। ওই রাজ্যগুলোতে এটাই চলছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে না-পাওয়া পর্যন্ত কিছুই বলতে পারছি না।’’
মৃতের ভাই অপু জানান, লিভারের অসুখে আক্রান্ত হয়ে গত সোমবার মা শীলা সরকার দাস মারা গিয়েছেন। এর পরের দিনই পুণের এক ঠিকাদার ফোন করে জানান, দীপুর দুর্ঘটনা ঘটেছে। হাসপাতালে ভর্তি। অপু আরও জানান, ওই ঠিকাদারের অধীনেই দীপু কাজ করতেন। কী ভাবে দুর্ঘটনা ঘটেছে, তা নিয়ে অবশ্য কিছুই জানাননি ওই ঠিকাদার। এর পর বুধবার পরিবারকে জানানো হয়, দীপু মারা গিয়েছেন। এর পর পুণে থেকে মোবাইলে পাঠানো দাদার রক্তমাখা ছবি দেখে তাঁদের সন্দেহ হয় বলে জানিয়েছেন অপু। তাঁর কথায়, ‘‘দুর্ঘটনা ঘটলে হাত-পা ভাঙবে। মাথা ফাটবে। কিন্তু ছবি দেখে মনে হচ্ছে, দাদার গলায় ধারালো অস্ত্র চালানো হয়েছে। সঠিক ময়নাতদন্তের দাবি জানাচ্ছি।’’
পরিবার জানিয়েছে, দীপুর দেহ পুণে থেকে নিয়ে আসার মতো আর্থিক সামর্থ্য তাদের নেই। এ বিষয়ে তারা রাজ্য সরকারের সহযোগিতাও চেয়েছে। সরকারের তরফেও দীপুর দেহ রাজ্যের ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ডিসিপি (পূর্ব) রাকেশ সিংহ বলেন, ‘‘আমরা ওই শ্রমিকের পরিবারকে সব রকম সাহায্য করছি। একজন অফিসারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ওই পরিবার যাতে কোনও রকম সমস্যায় না পড়ে, সেটা দেখা হবে।’’