‘মাস্টার প্ল্যান হচ্ছে। হবেই। ২০২৭-এর মার্চের পর আমরা বিরোধীদের ডাকব। যাঁরা এত সমালোচনা করছেন। দেখে যাবেন এসে নতুন ঘাটাল।’ শুক্রবার দুপুরে ঘাটালে অনুষ্ঠিত মনিটরিং কমিটির বৈঠকে ঠিক এমনটাই বললেন রাজ্যের সেচমন্ত্রী মানসরঞ্জন ভূঁইয়া।
বৃহস্পতিবার সাংসদ দেবের ঘাটাল সফরের পরই শুক্রবার জরুরি বৈঠকে বসেন রাজ্যের মন্ত্রী। ছিলেন দপ্তরের সচিব মণীশ জৈন, প্রতিমন্ত্রী শিউলি সাহা, জেলাশাসক খুরশিদ আলি কাদেরি, জেলা পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকার, মুখ্য স্বাস্থ্য অধিকারিক সৌম্যশঙ্কর ষড়ঙ্গী-সহ প্রশাসনের আধিকারিক ও ঘাটাল মহকুমার জনপ্রতিনিধিরা। সেখানেই মন্ত্রীর নির্দেশ, ‘মনে রাখবেন, আমাদের মুখ্যমন্ত্রীর নাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আমরা সবাই তাঁর সৈনিক।...রোগটা চিহ্নিত হয়ে গিয়েছে। ওষুধ, স্যালাইন সব রেডি।’
তবে এ দিন দাসপুর নিয়ে উদ্বেগ ঝরে পড়ল সেচমন্ত্রীর গলায়। তিনি বলেন, ‘দাসপুর-১ আর ২-টা নিয়েই শুধু চিন্তাই আছি। আশিস বাবু (জেলা পরিষদের প্রতিনিধি ও সেচ কর্মাধ্যক্ষ), সুকুমার পাত্র (দাসপুর-১ এর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি), সুনীল ভোমিক (দাসপুর-২ এর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি), মমতা ভূঁইয়া (দাসপুরের বিধায়ক)-রা সকলে মিলে ঝাঁপিয়ে পড়ুন।’
উল্লেখ্য যে, সেচ দপ্তরের প্রস্তাব অনুযায়ী, বন্যার জল বের করতে হলে দাসপুর-১ ব্লকের বৈকুন্ঠপুর থেকে সুরতপুর পর্যন্ত ৫.৮ কিলোমিটার দীর্ঘ চন্দ্রেশ্বর খাল খনন করতে হবে। অর্থাৎ, চন্দ্রেশ্বর নদী বা খালের সম্প্রসারণ করা হবে দাসপুর ১নং ব্লকের উপর দিয়ে। এক্ষেত্রে প্রায় দশ হাজার কৃষকের কাছ থেকে আনুমানিক ১০৫ একর জমি কিনতে হবে রাজ্য সরকারের সেচ দপ্তরকে।
এতেই বেঁকে বসেছেন ওই এলাকার একাংশ কৃষক। প্রতিবাদী কমিটি গড়ে তাঁরা এর প্রতিবাদ করছেন। তাঁদের দাবি, এই খাল খননের ফলে ঘাটালের জলে ডুববে দাসপুর। প্লাবিত হবে ঘরবাড়ি এবং একরের পর একর কৃষিজমি। যদিও, জেলা প্রশাসনের আধিকারিক ও জনপ্রতিনিধিদের দাবি, সম্পূর্ণ অমূলক এই আশঙ্কা। তাঁরা দাসপুরবাসীকে বুঝিয়ে জমি নিতে বদ্ধপরিকর।
শুক্রবার রাতে মাস্টার প্ল্যান মনাটরিং কমিটির সদস্য তথা দাসপুরের জেলা পরিষদ সদস্য আশিস হুদাইত বলেন, ‘ইতিমধ্যেই প্রথম ২ কিমি খাল খননের জন্য যে জমি প্রয়োজন, তা নিয়ে আমরা কৃষকদের সম্মতি পেয়েছি। বাকিটাও ধীরে ধীরে হবে। আমরা সকলে মিলে একযোগে মানুষকে সঙ্গে নিয়ে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান রূপায়ণে বদ্ধপরিকর।’
অন্যদিকে,মঙ্গলবার, ৫ জুলাই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘাটাল সফরে আসতে চলেছেন বলে প্রশাসন ও দলীয় সূত্রে খবর। ৬ জুলাই তাঁর ঝাড়গ্রামে একাধিক কর্মসূচি রয়েছে। তার আগে ৫ জুলাই হুগলি হয়ে পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটালে পৌঁছতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী। ওই দিন রাতে মেদিনীপুর শহরে সার্কিট হাউসে তিনি থাকবেন বলে জানা গিয়েছে।
বুধবার, ৬ জুলাই সকালে সেখান থেকেই ঝাড়গ্রামের উদ্দেশে রওনা দেবেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রাথমিকভাবে এমনটাই জানা গিয়েছে শুক্রবার। যদিও, এনিয়ে রাজ্যের মন্ত্রী মানসরঞ্জন ভূঁইয়া জানিয়েছেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী ঘাটালে আসবেন কিনা, তা নিয়ে এখনও আমাদের কাছে অফিসিয়াল কোন তথ্য আসেনি।’