নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি ও সংবাদদাতা, রাজগঞ্জ: বিজেপি শাসিত মহারাষ্ট্রে জলপাইগুড়ির রাজগঞ্জের পরিযায়ী শ্রমিক দীপু দাসের মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে ঘটনাস্থলে গেল পরিবার। শুক্রবার মৃত যুবকের পরিবারের দুই সদস্য বাগডোগরা থেকে সন্ধ্যার বিমানে দিল্লি হয়ে পুনে যান। তাঁদের সঙ্গে গিয়েছেন শিলিগুড়ি পুলিস কমিশনারেটের ‘ভোরের আলো’ ফাঁড়ির এক পুলিসকর্মী। প্রশাসনের তরফেই মৃতের পরিজনদের মহারাষ্ট্রে যাওয়ার ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে। ঘটনাস্থলে পৌঁছে সরেজমিনে সবটা খতিয়ে দেখে মৃতের পরিবার ও সঙ্গে থাকা এএসআই পদমর্যাদার পুলিস কর্মী গোটা বিষয়টি জেলা প্রশাসনকে জানাবেন। তারপরই এখান থেকে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
এদিন সকালে আমবাড়ি গোকুলভিটায় মৃত ওই পরিযায়ী শ্রমিকের বাড়িতে যান ব্লক প্রশাসনের পাশাপাশি শ্রমদপ্তরের আধিকারিক, পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতির প্রতিনিধি এবং রাজগঞ্জের বিধায়ক খগেশ্বর রায়। মৃত শ্রমিকের পরিবারের পাশে থাকার বার্তা দেন তাঁরা। পরে রাজগঞ্জের বিধায়ক বলেন, দীপুর মৃত্যু খুবই রহস্যজনক। বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে যেভাবে বাংলাভাষীদের উপর অত্যাচার হচ্ছে, আমাদের সন্দেহ ওই পরিযায়ী শ্রমিকের উপরও তেমনটাই হয়েছে। আমরা শুনেছি, পুনের একটি হাসপাতালে ওই শ্রমিকের দেহের ময়নাতদন্ত হয়েছে। এখান থেকে মৃতের পরিবারের দুই সদস্য এবং একজন পুলিস কর্মী গিয়েছেন। তাঁরা পোস্টমর্টেম রিপোর্ট পাঠালেই পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এদিকে, মহারাষ্ট্রে কাজে যাওয়া দীপুর রহস্যমৃত্যু নিয়ে এদিন সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা হয়। তাতে ওই পরিযায়ী শ্রমিকের মৃত্যু রহস্যজনক বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
পুনেতে এক ঠিকাদারের অধীনে নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করতেন রাজগঞ্জের বিন্নাগুড়ি পঞ্চায়েতের আমবাড়ির বাসিন্দা ২৭ বছরের দীপু। দু’দিন আগে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার ওই শ্রমিকের পরিবারের এক সদস্যের মোবাইলে হোয়াটসঅ্যাপ করে দীপুর রক্তমাখা দেহের ছবি পাঠান। ছাদ থেকে পড়ে গিয়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে জানান পুনের ওই ঠিকাদার। যদিও ছবি দেখে সন্দেহ হয় মৃতের বাড়ির লোকজনের। তাঁদের দাবি, ছবি দেখে মনে হচ্ছে, দীপুর গলায় চাকু চালানো হয়েছে। গভীর ক্ষত রয়েছে। ফলে প্রথমে ওই শ্রমিকের পরিবার বিষয়টি স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধানকে জানান। প্রধান এলাকার বিধায়ককে জানান। এরপরই প্রশাসনের নজরে আসে ঘটনাটি।
বিন্নাগুড়ি পঞ্চায়েতের প্রধান সমিজুদ্দিন আহমেদ বলেন, এদিন বাগডোগরা থেকে সন্ধ্যা ৭টার বিমানে মৃত শ্রমিকের ভাই অপু দাস, পরিবারের সদস্য গৌরাঙ্গ দাস এবং বিনোদ রাম নামে এক পুলিস কর্মী বিমানে মহারাষ্ট্রে গিয়েছেন। দিল্লি হয়ে তাঁরা পুনে পৌঁছবেন।