নিজস্ব প্রতিনিধি, বাঁকুড়া: নিম্নচাপের বৃষ্টির জেরে বাঁকুড়ায় ২০০ মাটির বাড়ির ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তারমধ্যে ৬৪টি বাড়ি পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে। দ্বারকেশ্বর ও গন্ধেশ্বরী নদী থেকে মিলিতভাবে সাড়ে ১২ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। তার ফলে নতুন করে জেলার নিচু এলাকা জলমগ্ন হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। যদি দুর্গাপুর জলাধার থেকে জল ছাড়ার পরিমাণ বৃদ্ধি না পায় তাহলে দামোদর নদ সংলগ্ন এলাকায় জল ঢোকার প্রবণতা কমবে।
বাঁকুড়া জেলা বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের এক আধিকারিক বলেন, ত্রিপল সহ পর্যাপ্ত ত্রাণ সামগ্রী জেলায় মজুত রয়েছে। তা প্রয়োজন মতো দুর্গতদের মধ্যে বণ্টন করা হচ্ছে। তবে শুক্রবার জেলায় বৃষ্টির পরিমাণ কমায় নদনদীর জলস্তর কমার সম্ভাবনা রয়েছে। ব্লকস্তর থেকে ক্ষয়ক্ষতির রিপোর্ট পেলে বিস্তারিত বলা সম্ভব হবে। বড়জোড়া ব্লকের বাসিন্দা নিমাই আখুলি, অসিত আখুলি বলেন, বৃষ্টির ফলে আমাদের এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। ফলে বাড়িঘরে জল ঢুকে যায়। চন্দনপুর উচ্চ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আশ্রয় নিতে হয়। বিধায়ক, তৃণমূল নেতৃত্ব ও ব্লক প্রশাসনের আধিকারিকরা আমাদের খোঁজখবর নিয়েছেন। ত্রাণেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে।
নিম্নচাপের বৃষ্টির জেরে বাঁকুড়ার নদনদীগুলির জলস্তর অনেকটাই বৃদ্ধি পেয়েছে। গন্ধেশ্বরী নদী ও দ্বারকেশ্বর নদের জল বেড়ে যাওয়ায় মিনাপুর, কেঞ্জাকুড়া সহ বাঁকুড়া-১ ও ২ নম্বর ব্লকের একাধিক কজওয়ে জলের তলায় চলে গিয়েছে। শালতোড়া, মেজিয়া, বড়জোড়া, ছাতনা, তালডাংরা, সিমলাপাল, রাইপুর ব্লকের একাধিক কজওয়ে, রাস্তাও জলমগ্ন রয়েছে। জেলার নদনদীতে থাকা বিভিন্ন জলাধার থেকে জল ছাড়ার পরিমাণ বৃদ্ধি হয়েছে। বুধবার রাতভর বৃষ্টি হওয়ায় বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বাঁকুড়া শহরের দু’পাশ দিয়ে বয়ে চলা গন্ধেশ্বরী, দ্বারকেশ্বর দু’কূল ছাপিয়ে বইতে শুরু করে। এদিনও ওই দুই নদনদী ফুঁসেছে।
উদ্ভুত পরিস্থিতিতে জেলা প্রশাসনের তরফে দফায় দফায় বৈঠক করা হচ্ছে। বিডিওদের পরিস্থিতির উপর নজর রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ত্রাণের জন্য যাতে কাউকে দুর্ভোগ পোহাতে না হয় তা দেখতে বলা হয়েছে। কোনও প্রয়োজন হলে দ্রুত জেলায় জানানোরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যাদের বাড়ি ভেঙেছে, তাঁরা ক্ষতিপূরণ পাবেন বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। ছান্দার অঞ্চলে চন্দনপুরে মাটির বাড়ির ফাটল দেখাচ্ছেন বিধায়ক অলোক মুখোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র