চক্রান্ত করেই না জানিয়ে জলাধার থেকে জল ছাড়া হচ্ছে, দাবি মন্ত্রী সুজিত বসুর
বর্তমান | ০২ আগস্ট ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, বহরমপুর ও সংবাদদাতা, কান্দি: বাংলার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করেই না জানিয়ে বিভিন্ন জলাধার থেকে জল ছাড়া হচ্ছে। মুর্শিদাবাদের বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে এসে কেন্দ্রীয় সরকারকে এভাবেই একহাত নিলেন রাজ্যের মন্ত্রী সুজিত বসু। শুক্রবার দুপুরে তিনি বহরমপুর সার্কিট হাউসে এসে ওঠেন। সেখানে জেলাশাসকের সঙ্গে সংক্ষিপ্ত বৈঠকের পর মন্ত্রী কান্দি মহকুমার ভরতপুরে গিয়ে জলমগ্ন এলাকা পরিদর্শন করেন। সেখানে বেশ কিছু মানুষের হাতে খাদ্য ও ত্রাণসামগ্রী তুলে দেন। তারপর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ অনুযায়ী তিনি সূতি ও সামশেরগঞ্জের ভাঙন-কবলিত এলাকা পরিদর্শনে যান।
মন্ত্রী বলেন, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে মালদহ ও মুর্শিদাবাদ পরিদর্শন করছি। বিভিন্ন জলাধার থেকে মাত্রাতিরিক্ত জল ছাড়া হচ্ছে। বাংলার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করেই বারবার না জানিয়ে এমনটা করা চলছে। এর জেরে নিচু এলাকা ডুবে যাচ্ছে। রাজ্য সরকার মানুষের পাশে রয়েছে। ভরতপুরের বন্যাকবলিত এলাকা ছাড়াও সূতি ও সামশেরগঞ্জের যে সমস্ত এলাকায় ভাঙন হয়েছে, সেসব জায়গা পরিদর্শন করা হল। এলাকার মানুষকে কিছু শুকনো খাবার বিতরণ করেছি।
মন্ত্রীর অভিযোগ, বাংলার বিরুদ্ধে চক্রান্ত অনেকদিন ধরেই চলছে। কেন্দ্রীয় সরকার নানাভাবে বাংলাকে খাটো করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কখনও ডিভিসি, কখনও ম্যাসাঞ্জোর জলাধার থেকে জল ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। রাজ্য সরকার সবসময় সদর্থক চিন্তাভাবনা নিয়ে চলে।
এদিন দুপুর পৌঁনে ৩টে নাগাদ দমকলমন্ত্রী ভরতপুর-১ ব্লকের ইব্রাহিমপুরে পৌঁছন। সেখানে মন্ত্রীর অপেক্ষায় দুপুর ১২টা থেকেই প্রচুর বাসিন্দা অপেক্ষা করছিলেন। মন্ত্রীর হাত থেকে ত্রাণ নেওয়ার জন্য বাসিন্দাদের মধ্যে ঠেলাঠেলি শুরু হয়। মন্ত্রী কয়েকজনের হাতে ত্রাণ তুলে দেন। বাকি ত্রাণ অন্যরা বিলি করেন। এদিন বন্যাকবলিত ইব্রাহিমপুর, কোল্লা ও যজাখিনা গ্রামের বিভিন্ন দুঃস্থ পরিবারকে মুড়ি, চাল, চিনি ও শুকনো দুধ বিলি করা হয়েছে।
মন্ত্রী এদিন স্থানীয় এক বাসিন্দার সঙ্গেও কথা বলেন। ওই প্রৌঢ় মন্ত্রীর কাছে গ্রামের রাস্তা ও একটি কালভার্ট তৈরির জন্য আবেদন করেন। মন্ত্রী বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রীকে জানাবেন বলে জানিয়েছেন। মন্ত্রী বলেন, আগে অনেক গ্রামে ত্রাণ পৌঁছে দিতে নৌকায় যেতে হতো। মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে কান্দি মাস্টারপ্ল্যানের পর সেই সমস্যা থেকে নিস্তার মিলেছে। এখন বাঁধের রাস্তা দিয়ে গাড়ি নিয়ে সোজা ওই সমস্ত গ্রামে পৌঁছে যাওয়া যাচ্ছে। কান্দির বিধায়ক অপূর্ব সরকার বলেন, কান্দি মাস্টারপ্ল্যানের দৌলতে এই এলাকায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ সফল হয়েছে। কয়েকবছর ধরে কান্দি বন্যার হাত থেকে রেহাই পেয়েছে। কিন্তু এবছর তিলপাড়া ব্যারেজের ছাড়া জল ও অতিবর্ষণের জেরে এই এলাকা প্লাবিত হয়। মুখ্যমন্ত্রী এখবর পেয়ে দমকলমন্ত্রী পাঠিয়েছেন। তিনি পরিদর্শন করে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে রিপোর্ট দেবেন। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশমতো এদিন তিনি কিছু ত্রাণসামগ্রীও বিলি করেছেন। আমাদের মুখ্যমন্ত্রী দলমত-নির্বিশেষে মানুষের কথা চিন্তা করছেন। -নিজস্ব চিত্র