• পাড়ার সব সমস্যার সমাধান, আজ সূচনা মমতার প্রকল্পের, নাগরিক পরিষেবার সঙ্গে কর্মসংস্থানও
    বর্তমান | ০২ আগস্ট ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: প্রাইমারি স্কুলের দেওয়ালে অনেকদিন পড়েনি রঙের পোঁচ। অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের ছাদ ফুটো। বর্ষায় জল পড়ে। পঞ্চায়েত থেকে পাড়ায় একটি নলকূপ আগেই করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বেশ কয়েক মাস ধরে সেটি বিকল। এরকম অজস্র ছোটোখাটো সমস্যার দ্রুত সমাধান করে রাজ্যবাসীকে সুরাহা দিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছেন নয়া প্রকল্প ‘আমাদের পাড়া, আমাদের সমাধান’। আজ, শনিবার বাংলাজুড়ে শুরু হচ্ছে এই কর্মসূচি। তিনটি বুথের জন্য একটি করে শিবির আয়োজিত হবে। প্রথম দিনেই পাঁচশোর বেশি শিবির হতে চলেছে রাজ্যে। কলকাতায় এদিন হবে চারটি শিবির। ৩ নভেম্বর পর্যন্ত চলবে এই কর্মসূচি। তবে দুর্গাপুজো ও কালীপুজোর ছুটিতে শিবির বন্ধ থাকবে। নবান্ন সূত্রে খবর, এই সময়কালের মধ্যে ২৮ হাজারের বেশি শিবির আয়োজনের টার্গেট নিয়েছে রাজ্য। 

    প্রকল্পের কাজ সুচারুভাবে পরিচালনা করতে বৃহস্পতিবার নবান্নে জেলাশাসকদের সঙ্গে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। সেখানে আলোচনার ভিত্তিতে শুক্রবার নির্দেশিকা জারি করেছে নবান্ন। ‘আমাদের পাড়া, আমাদের সমাধান’ শিবির থেকে কোন কোন কাজ হাতে নেওয়া যাবে, তা নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে ওই নির্দেশিকায়। মোট ১৬ ধরনের কাজের কথা বলা হয়েছে। আগের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী ১৪ ধরনের কাজের উল্লেখ ছিল। বৈঠকের পর সেই তালিকায় যুক্ত হয়েছে রাস্তা মেরামতি ও বিগত দিনে ‘পাড়ায় সমাধান’ ও অন্যান্য পোর্টালের মাধ্যমে আসা বিভিন্ন সমস্যা। নলকূপ বসানো বা মেরামতি, পাইপের মাধ্যমে বাড়িতে জল পৌঁছনো, রাস্তায় এলইডি লাইট লাগানো বা মেরামতি, সোলার লাইট ও হাইমাস্ট বসানো বা মেরামতি, শৌচালয় নির্মাণ (বিশেষ করে বাজার এলাকায়), অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের ছাদ নির্মাণ বা মেরামতি, পর্যাপ্ত পানীয় জলের ব্যবস্থা, প্রাইমারি স্কুলের রঙ, শৌচালয় সংস্কার, স্কুলে পর্যাপ্ত বেঞ্চের ব্যবস্থা, পুকুর সংস্কার, ঘাট পরিষ্কার বা বাঁধানোর কাজ, বুজিয়ে দেওয়া পুকুর পুনরুদ্ধার, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, বাজারের ড্রেনের ব্যবস্থা, কমিউনিটি সেন্টার মেরামতি, বাসস্টপের শেড তৈরি, অটো বা রিক্সার স্ট্যান্ড, ফুটপাত তৈরি বা সংস্কার, এলাকায় অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা, পার্কে বেঞ্চের ব্যবস্থা, গাছ লাগানো, এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ সংক্রান্ত যাবতীয় সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া যাবে এই প্রকল্পের মাধ্যমে। আগামী জানুয়ারি মাসের মধ্যে এই প্রকল্পের আওতায় গৃহীত কাজগুলি শেষের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এর জন্য বুথ পিছু ১০ লক্ষ টাকা করে মোট ৮,০০০ কোটি টাকা খরচ করবে রাজ্য। সেক্ষেত্রে দপ্তর এবং জেলার হাতে থাকা এগজিস্টিং ফান্ড, নিজস্ব রাজস্ব এবং অর্থদপ্তরের বরাদ্দ কাজে লাগানোর পরিকল্পনা রয়েছে বলে সূত্রের খবর। 

    উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, এর মাধ্যমে নাগরিক সমস্যার সমাধান শুধু নয়, হবে বিপুল সংখ্যক কর্মসংস্থানও। গত সাড়ে তিন বছর ধরে ‘১০০ দিনের কাজ’-এর টাকা বন্ধ রেখেছে কেন্দ্র। ফলে কেন্দ্রীয় সহায়তাপ্রাপ্ত এই প্রকল্পের অধীনে পুকুর কাটা, রাস্তা মেরামতির মতো কাজগুলি দীর্ঘদিন বন্ধ। তার জন্য রাজ্য সরকারের বিকল্প প্রকল্প চালু রয়েছে। তারপরও কোনও ফাঁকফোকর থাকলে ‘আমাদের পাড়া, আমাদের সমাধান’ কর্মসূচির মাধ্যমেই তা পূরণ হবে বলে মত প্রশাসনিক মহলের।
  • Link to this news (বর্তমান)