• ট্রেনে রং-তুলি নিয়ে ওঠেন ৬৪ বছরের প্রবোধ, ৩০০ টাকায় এঁকে দেন পোর্ট্রেট
    বর্তমান | ০২ আগস্ট ২০২৫
  • সত্যজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়  বারুইপুর

    মাথার চুল কাঁচাপাকা। কাজ করা রঙিন পাঞ্জাবি গায়ে। ধুতি পরেন। পায়ে চপ্পল। কাঁধে একটি ছোট ব্যাগ। ব্যাগে ডট পেন, সাদা কাগজ, রং, কিছু ছবি। এ সব সঙ্গে নিয়ে গোচরণের কাঁটাপুকুরের প্রবোধ হালদার ঘোরেন বারুইপুর থেকে জয়নগর, সোনারপুর থেকে কাকদ্বীপ। প্রবোধবাবুর বয়স ৬৪ বছর। নেশা হল মানুষের পোর্ট্রেট আঁকা। অখ্যাত থেকে বিখ্যাত, সুযোগ পেলে সবার ছবিই আঁকেন। খুশি হয়ে কেউ ২০০ বা ৩০০ টাকা ধরিয়ে দেন। কেউ আবার খাওয়াদাওয়া করান। এই অল্পেই খুশি বৃদ্ধ। বলেন, বইমেলায় সামনে থেকে দেখে এঁকেছেন সঙ্গীতশিল্পী রুপম ইসলামের ছবি। চণ্ডী লাহিড়ীর ছবিও এঁকেছেন।

    ইন্ডিয়ান আর্ট কলেজের কৃতী ছিলেন প্রবোধ। বর্তমানে বাড়িতে আছেন স্ত্রী, মেয়ে, ছেলে। রোজ সকাল হলে বেরিয়ে পড়েন। ফেরেন রাতে। এর ফাঁকেই স্থানীয় ছেলে-মেয়েদের আঁকা শেখান। জয়নগরের বহড়ুতে একটি মোয়ার দোকানের ভিতর দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে এক ব্যবসায়ীর ছবি আঁকছিলেন। এক ফাঁকে বললেন, ‘আঁকার নেশার জন্য স্কুলে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাশ করতে পারিনি। অপু দুর্গা, কালীর ছবি এঁকেছিলাম। তা দেখে অনেকে বাহবা জানান।’ এখন কেউ পোর্ট্রেট বাঁধিয়ে দেওয়ার কথা বললে তাও করে দেন প্রবোধবাবু। ট্রেনে চেপে ঘোরেন বিভিন্ন জায়গায়। অনেকেই নিজের আঁকা ছবি দেখতে চান। তখন ডট পেনে এঁকে দেন মুখ। প্রবোধবাবু বলেন, ‘বইমেলা সহ নানা মেলায় যাই ছবি আঁকার জন্য। এইভাবেই রূপম ইসলামের ছবি এঁকেছিলাম। একবার জয়নগর থানার আইসির ছবিও এঁকে দিয়েছিলাম। তিনি ২০০ টাকা দিয়েছিলেন। যেদিন কাজে যাই না সেদিন বাড়িতে বসে ভিজিটিং কার্ড, ব্যানার তৈরি করি। অনেকেই তা নিয়ে যায়। এইভাবে এঁকেই জীবন কাটিয়ে দিতে চাই।’   
  • Link to this news (বর্তমান)