• ট্রেনে ‘সহযাত্রী’ আরশোলা, জরুরি নম্বরে কল করেও মিলল না সাড়া
    এই সময় | ০২ আগস্ট ২০২৫
  • এই সময়, মালদা: মোটা টাকা ভাড়া দিয়েও পরিষেবার নামে লবডঙ্কা। এসি কামরায় কিলবিল করছে আরশোলা! গত বুধবার রাতে মালদা টাউন স্টেশনে রেল পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান যাত্রীরা। সেই বিক্ষোভের ভিডিয়ো (সত্যতা যাচাই করেনি 'এই সময়') ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল। তাতে দেখা যাচ্ছে, মালদা টাউন স্টেশনে গভীর রাতে এক নম্বর প্ল্যাটফর্মে এক রেল পুলিশের কর্তার সামনে চিৎকার করে নিজেদের ক্ষোভ জাহির করছেন এসি কামরার বেশ কয়েকজন যাত্রী। তাঁদের প্রশ্ন করতে শোনা যায়, 'এই সমস্যার সমাধান কে করবে? এত রাতে কোথায় পাব রেল কর্মীদের, কোথায় রেলের অফিসার?'

    ঘটনাটি ঘটে এনজেপি থেকে শিয়ালদহগামী ডাউন উত্তরবঙ্গ এক্সপ্রেসের একটি এসি কামরায়। যাত্রীদের অভিযোগ, এনজেপি থেকে ট্রেনটি ছাড়ার পরেই কামরায় অসংখ্য আরশোলা ঘোরাঘুরি করছিল। আরশোলার উপদ্রবে তাঁরা ঠিকমতো বসতেই পারছিলেন না। এই অবস্থার মধ্যেই ট্রেনটি মালদা টাউন স্টেশনে পৌঁছয়। মাঝের কোনও স্টেশনে ট্রেনটি এক-দেড় মিনিটের বেশি না-দাঁড়ানোয় কোনও প্ল্যাটফর্মে নেমে অভিযোগ জানানোর সুযোগ পাননি যাত্রীরা।

    টাউন স্টেশনে ১০ মিনিট স্টপেজ টাইম থাকায় তাঁরা আরশোলার 'অত্যাচার' সয়ে এতদূর মুখ বুজে আসেন। প্ল্যাটফর্মে ট্রেন ঢুকতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন যাত্রীরা। অনেকেই ভিডিয়ো রেকর্ড করে অব্যবস্থার ছবি তুলে ধরেন সামাজিক মাধ্যমে। প্ল্যাটফর্মে ওই রেল পুলিশের কর্তাকে সামনে পেয়ে ক্ষোভ উগড়ে দেন যাত্রীরা। তাঁরা ওই কর্তাকে বলেন, 'গভীর রাতে স্টেশনে রেলকর্মীদের পাওয়া যায় না। তা হলে অভিযোগ জানাব কোথায়! আর যদিও বা অভিযোগ জানানো হলো, সেই সমস্যার সমাধান তো করা হচ্ছে না।' তখন অসন্তোষ প্রকাশ করা যাত্রীদের বোঝানোর চেষ্টা করতে দেখা যায় ওই রেল পুলিশের আধিকারিককে। পরে ট্রেন ছাড়ার সময় হলে সবাই ক্ষোভ নিয়ে উঠে পড়েন।

    উত্তরবঙ্গ এক্সপ্রেসের ওই এসি কামরার এক যাত্রী শুভজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'মোটা টাকা দিয়ে তৎকালে টিকিট কাটতে হয়েছে। এর মধ্যে যদি এসি কামরায় আরশোলার উপদ্রব সইতে হয়, তা হলে কার ভালো লাগে!' তার পরেই কেন্দ্রীয় সরকারের দিকে আঙুল তুলে তিনি বলেন, 'এক দিকে স্বচ্ছ ভারত অভিযানের ডাক দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে কীটপতঙ্গের উপদ্রব। এটা মেনে নেওয়া যায় না।' এনজেপি থেকে মালদা পৌঁছনো অবধি আরপিএফ, টিটির কাছে অভিযোগ জানানো হয়। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি বলে দাবি যাত্রীদের। এমনকী জরুরি ভিত্তিতে দেওয়া রেলের যোগাযোগ নম্বরে ফোন করেও কাউকে পাওয়া যায়নি বলে অভিযোগ। তার পরেই একপ্রকার বাধ্য হয়ে যাত্রীরা স্টেশনে নেমে বিক্ষোভ দেখান।

    পূর্ব রেলের জনসংযোগ দপ্তরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, ওই ট্রেনটি এনএফআরের অধীন। কামরায় নিয়মিত কীটনাশক স্প্রে করা হয়। তার পরেও আরশোলার অত্যাচার কী ভাবে বন্ধ করা যায় সে বিষয়ে পদক্ষেপ করা হচ্ছে। পূর্ব রেলের মালদার ডিআরএম মণীশকুমার গুপ্তা বলেন, 'যে কোনও সমস্যায় রেলের কামরাতেই নম্বর দেওয়া আছে। সেখানে যোগাযোগ করলেই দ্রুত সমস্যার সমাধান করে ফেলা হয়।' কিন্তু যাত্রীদের অভিযোগ ছিল, সেই নম্বরে ফোন করে কাউকে পাওয়া যায়নি। এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি ডিআরএম।

  • Link to this news (এই সময়)