• গোরু পাচারের ভুয়ো দাবিতে মারধর, ধৃত দুই বিজেপি কর্মী
    এই সময় | ০২ আগস্ট ২০২৫
  • এই সময়, দুর্গাপুর:

    গোরু পাচারকারী বলে কয়েকজন বয়স্ক মানুষকে হাতে ও গলায় দড়ি বেঁধে লাঠি দিয়ে মারধর করা হচ্ছে। তাঁদের কান ধরে ওঠবস করানো হচ্ছে। কান ধরে রাস্তায় হাঁটানো হচ্ছে। কোক-ওভেন থানার ডুমরতলা এলাকার এই ঘটনার ভিডিয়ো (যার সত্যতা যাচাই করেনি ‘এই সময় অনলাইন’) সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে বৃহস্পতিবার।

    ঘটনার খবর পেয়ে কোক-ওভেন থানায় আসেন পশ্চিম বর্ধমান জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী। তিনি অভিযোগ করেন, পুরো ঘটনার পিছনে রয়েছে বিজেপির যুব নেতা পারিজাত গঙ্গোপাধ্যায় ও তাঁর অনুগামীরা। থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। অবশেষে অভিযুক্তদের মধ্যে দু’জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

    ঘটনা প্রসঙ্গে শুক্রবার একটি সাংবাদিক সম্মেলন করেন আসানসোল–দুর্গাপুরের পুলিশ কমিশনার সুনীল চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘বৃহস্পতিবার কোক-ওভেন থানা এলাকার একটি ঘটনায় কয়েকজন বয়স্ক লোককে অন্যায় ভাবে মারধর করা হয়েছে। তাঁদের থেকে বেশ কয়েকটি গোরু ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। অথচ তাঁদের কাছে গোরু নিয়ে যাওয়ার বৈধ কাগজ ছিল। এ ঘটনায় দীপক দাস ও অনীশ ভট্টাচার্য নামে দুই যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মূল অভিযুক্ত পারিজাত গঙ্গোপাধ্যায়ের খোঁজে তল্লাশি চলছে। এই ঘটনায় ১৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে।’

    বৃহস্পতিবার দুপুরে ডুমুরতলায় একটি ছোট ট্রাক আটক করেন পারিজাত ও তাঁর অনুগামীরা। ট্রাকে প্রায় ২২টি গোরু ছিল। গোরুগুলি পাচার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলে পারিজাত ও তাঁর অনুগামীরা ওই ট্রাকে থাকা কয়েকজনকে টেনে–হিঁচড়ে গাড়ি থেকে নামিয়ে রাস্তার উপর বসায়। এর পরে তাঁদের হাতে ও গলায় দড়ি বেঁধে লাঠি দিয়ে মারধর করেন। পরে কান ধরে ওঠবস করার নিদান দেন। তার পরে তাঁদের কান ধরে রাস্তায় হাঁটানো হয়। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

    ঘটনার খবর পেয়ে কোক-ওভেন থানায় আসেন তৃণমূল বিধায়ক নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী। তিনি বলেন, ‘যারা অত্যাচার করেছে প্রত্যেকে বিজেপি কর্মী। তাদের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। যাদের মারধর করা হয়েছে তারা পাণ্ডবেশ্বর বিধানসভা কেন্দ্রের জেমুয়া গ্রামের বাসিন্দা। বাঁকুড়া জেলার বড়জোড়া ব্লকে হাট আশুড়িয়ার পশু হাট থেকে গোরু কিনে আনছিল। তাদের কাছে হাটের রসিদ ছিল। তা সত্ত্বেও গোরু পাচারকারী বলে মারধর করা হয়েছে। টাকা পয়সা কেড়ে নিয়েছে।’

    ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন দুর্গাপুর মহকুমা আদালতের আইনজীবী আয়ুব আনসারি। তিনি বলেন, ‘এ কোন দুর্গাপুর! লুম্পেনদের দল বয়স্ক মানুষগুলোর উপর যে অত্যাচার করেছে তা কখনও মেনে নেওয়া যায় না।’

    এই প্রথম নয়। মাস কয়েক আগে বাঁশকোপা টোলপ্লাজ়ায় একই ভাবে গোরু বোঝাই ছোট ট্রাক আটক করে গোরুপাচারকারী বলে কয়েকজনকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছিল পারিজাতের বিরুদ্ধে। দল এই ঘটনাকে সমর্থন করেনি। বিজেপি বিধায়ক লক্ষ্মণ ঘোড়ুই বলেন, ‘বয়স্ক লোকেদের দড়ি বেঁধে মারধর করা সমর্থন করি না। আইন হাতে তুলে নিয়ে ঠিক করেনি।’

  • Link to this news (এই সময়)