• গরুপাচারের অভিযোগ দুর্গাপুরে চাষিদের উপর ‘অত্যাচার’, গ্রেপ্তার ২ বিজেপি কর্মী
    প্রতিদিন | ০২ আগস্ট ২০২৫
  • সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: গরু পাচারের অভিযোগে নিরীহ চাষিদের মারধর, টাকা কেড়ে নেওয়ার অভিযোগে দুই বিজেপি কর্মীকে গ্রেপ্তার করল পুলিশ। ঘটনায় পলাতক বাকি অভিযুক্তদেরও বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থার হুঁশিয়ারি দিয়েছে আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনার। এদিকে আজ, শনিবার আক্রান্ত চাষিদের এলাকা জেমুয়া গ্রামে গিয়ে আক্রান্তদের পাশে থাকার বার্তা দেন আইএসএফের বিধায়ক নৌশাদ সিদ্দিকী।

    গত বৃহস্পতিবার দুর্গাপুরের কোকওভেন থানার গ্যামন ব্রিজ এলাকায় বাঁকুড়ার হাট আশুড়িয়া থেকে গরু কিনে ফিরছিলেন ব্যবসায়ীরা। সেসময় বিজেপি কর্মীদের হাতে আক্রান্ত হন জেমুয়া এলাকার পাঁচ প্রবীণ চাষি। অভিযোগ, বিজেপির রাজ্য যুব কমিটির সদস্য পারিজাত গঙ্গোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে বিজেপি কর্মীরা ওই চাষিদের পথ আটকান। গরুপাচার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তোলা হয়। তাঁদের অবৈধ পাচারকারী বলে নির্মম অত্যাচার করা হয়। হাত বেঁধে মারধর, কান ধরে রাস্তায় হাঁটানো, এমনকী তাঁদের কাছে থাকা টাকাও কেড়ে নেন বিজেপি কর্মীরা বলে অভিযোগ। ঘটনাকে ঘিরে চরম রাজনৈতিক উত্তেজনা ছড়ায় দুর্গাপুরে।

    তৃণমূলের জেলা সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী ঘটনার দিন বিকেলে কোকওভেন থানায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। সন্ধ্যায় সিপিএমের তরফেও থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। পুলিশ তদন্তে নেমে শুক্রবার রাতে দুই অভিযুক্ত অনীশ ভট্টাচার্য ও দীপক দাসকে গ্রেপ্তার করে। বাকিরা পলাতক বলে খবর। আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশের কমিশনার সুনীল চৌধুরী বলেন, “এসব ঘটনাকে কোনওভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। মূল অভিযুক্ত পারিজাত গঙ্গোপাধ্যায় বিজেপি করেন। তাঁকেও গ্রেপ্তার করা হবে।” তিনি আরও বলেন, “আক্রান্তরা কৃষিকাজের জন্যে গরু কিনে নিয়ে যাচ্ছিলেন। তাঁদের মারধর করে টাকা কেড়ে নেওয়া হয়। পুলিশ কড়া করে পদক্ষেপ নেবে।”

    গতকাল, শুক্রবার রাতে মূল অভিযুক্ত পারিজাত গঙ্গোপাধ্যায়ের দুর্গাপুরের বাড়ি ঘেরাও করেন জেমুয়ার বাসিন্দাদের একাংশ। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের দাবিতে দুর্গাপুর ও কোকওভেন থানাও রাতে ঘেরাও করা হয়। দুর্গাপুর পশ্চিমের বিজেপি বিধায়ক লক্ষ্মণচন্দ্র ঘোড়ুই বলেন, “প্রবীণ চাষীদের মারধরের ঘটনা সমর্থন করি না। তবে অযথা রাজনীতিকরণের চেষ্টা হলে বিজেপিও পাল্টা আন্দোলনে নামবে।” শনিবার জেমুয়ায় আক্রান্তদের সঙ্গে দেখা করেন আইএসএফের বিধায়ক নৌশাদ সিদ্দিকী। তিনি বলেন, “ওদের পাতা ফাঁদে পা দেবেন না। আমরা সবাই প্রতিবেশী। সৌভাতৃত্ব বজায় রাখাই বাংলার সংস্কৃতি।” ধৃতদের এদিন দুর্গাপুর আদালতে তোলা হয়।
  • Link to this news (প্রতিদিন)