• প্রবল বর্ষণে বেহাল কলকাতার রাস্তা, এবড়োখেবড়ো রাস্তায় প্রাণহাতে চলছে যানবাহন, দ্রুত সারাইয়ের আশ্বাস
    আনন্দবাজার | ০২ আগস্ট ২০২৫
  • গত কয়েক সপ্তাহে কলকাতা শহরের রাস্তার হাল ক্রমশ বেহাল হয়েছে। কোথাও রাস্তায় পিচের আস্তরণ উঠে গিয়েছে। কোথাও আবার বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। সব মিলিয়ে সমস্যা তৈরি হয়েছে রাস্তায় যান চলাচলে। শহরের উড়ালপুলগুলির দশাও বেশ খারাপ বলেই অভিযোগ। কলকাতা শহরের রাস্তার ধারাবাহিক বৃষ্টির কারণে তা খারাপ হয়েছে বলেই দাবি কলকাতা পুরসভার। গত পাঁচ বছরে কলকাতা শহরে এমন প্রবল বৃষ্টি হয়নি। কখনও রাতভর, কখনও আবার দিনের বেলাতেই বারিধারা ক্ষতিগ্রস্ত করেছে শহরের পিচের রাস্তার। তা ছাড়া ধারাবাহিক বৃষ্টির কারণে রাস্তা সারানোর সময়টুকুও পাওয়া যায়নি।

    কলকাতা শহরের বিভিন্ন রাস্তার দায়িত্বে বিভিন্ন সংস্থা। যেমন শহরের অলিগলি তথা ভিতরের রাস্তার দায়িত্বে কলকাতা পুরসভা। তেমনই বেশ কিছু বড় রাস্তার দায়িত্বে পূর্ত দফতর। আবার ইস্টার্ন মেট্রোপলিটন বাইপাস-সহ শহরের উড়ালপুলগুলির দায়িত্বে রয়েছে কলকাতা মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন (কেএমডিএ)। কলকাতা বন্দর এলাকার রাস্তার দায়িত্ব কেন্দ্রীয় জাহাজ মন্ত্রকের। তাই সম্মিলিত ভাবে রাস্তা সারিয়ে তোলার দায়িত্বও ভিন্ন ভিন্ন দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থার।

    কলকাতা পুরসভার এক আধিকারিক বলেন, “শহরের যে রাস্তার দায়িত্বে যে সংস্থাই হোক না কেন, বৃষ্টি না থামলে কারও পক্ষেই রাস্তা সারানো সম্ভব নয়। বৃষ্টি বন্ধ থাকলে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই আমরা শহরের বেশির ভাগ রাস্তা সারিয়ে তুলতে পারি।’’ তিনি আরও বলেন, “রাস্তা সারানো নিয়ে সমস্যা অন্য জায়গায়। শহরের বেশির ভাগ রাস্তাই তৈরি হয়েছে পিচ দিয়ে। পিচের রাস্তার সবচেয়ে বড় শত্রু হচ্ছে বৃষ্টির জল। বৃষ্টির জল পিচ রাস্তায় পড়লে রাস্তা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাই এ ক্ষেত্রে বৃষ্টি না কমলে আমরা রাস্তা সারাইয়ের কাজে হাত দিতে পারি না।”

    শুক্রবার ‘টক টু মেয়র’ কর্মসূচি শেষে কলকাতার বেহাল রাস্তা নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়েছিলেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। তিনি বলেছিলেন, “১০ দিন বৃষ্টি না হলে কলকাতার কোনও রাস্তায় খানাখন্দ থাকবে না। রাস্তাগুলিতে কংক্রিট ব্লক বসানো হবে বলে পুরসভার তরফে পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। এত দিন ম্যাস্টিক অথবা পিচ দিয়ে তৈরি হত। কিন্তু ভারী বৃষ্টি হলেই সেই রাস্তা বেহাল হয়ে পড়ছে। কংক্রিট ব্লক বসানো হলে সেই রাস্তা অন্তত ৫ বছর ঠিক থাকবে। প্রতি বছর সংশ্লিষ্ট রাস্তা রক্ষণাবেক্ষণের প্রয়োজন হবে না। যে হেতু কংক্রিট ব্লক স্থাপন ব্যয়বহুল তাই পিচের রাস্তার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে কংক্রিট ব্লক দিয়ে রাস্তা তৈরি করা হবে। ভারী বৃষ্টির জেরে সমস্যা দেখা দিচ্ছে। এ বার ঘণ্টায় ১৮৫-২০০ মিলিলিটার পর্যন্ত বৃষ্টিপাত হয়েছে কলকাতায়। যা এর আগে কলকাতায় খুবই কম দেখা দিয়েছে।’’

    তবে শুক্রবার রাত থেকে ইএম বাইপাসের রাস্তা সারানোর কাজে হাত লাগিয়েছে কেএমডিএ। কলকাতা পুরসভাও অলিতেগলিতে থাকা রাস্তায় কাজ শুরু করেছে। পুর ও নগোরন্নয়ন দফতর সূত্রে খবর, কলকাতা বন্দর এলাকার রাস্তা সারাইয়ের কাজ শুরু করতে বলা হয়েছে জাহাজ মন্ত্রকের কলকাতার আধিকারিকদের।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)