দাদা ঘরজামাই, আইজির কাছে মিথ্যা অভিযোগে শ্রীঘরে যুবক
বর্তমান | ০৩ আগস্ট ২০২৫
সংবাদদাতা, বিষ্ণুপুর: দাদা নিজের বাড়ি ছেড়ে শ্বশুরবাড়িতে ঘরজামাই হয়ে রয়েছে। এটা মেনে নিতে পারেনি ভাই। তাই দাদার সই জাল করে তাঁকে শ্বশুরবাড়িতে আটকে রাখার একের পর এক অভিযোগ পুলিসের বিভিন্ন মহলে করে সে। পাত্রসায়র থানা থেকে শুরু করে এসডিপিও, এসপি এমনকী পুলিসের ডিআইজির কাছেও অভিযোগ জমা পড়ে। এতে পুলিস কর্তারা নড়েচড়ে বসেন। ঘটনার তদন্ত করতে গিয়ে পুলিস আধিকারিকরা কার্যত হতবাক। কারণ, যিনি অভিযোগ জানিয়েছেন, তিনি তো পাত্রসায়রের পানপুকুর গ্রামে শ্বশুরবাড়িতে ঘরজামাই হয়ে দিব্যি রয়েছেন। পুলিস তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানাতে পারে, তিনি কোনও অভিযোগই জানাননি। এরপরেই অভিযুক্তের পরিবর্তে অভিযোগকারীকে খুঁজতে পুলিসকে হিমশিম খেতে হয়। শেষমেশ জানা যায় অভিযোগকারী আর কেউ নয়, যাকে শ্বশুরবাড়িতে জোর করে আটকে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ হয়েছে, তাঁরই ভাই মুন্সি আমির হোসেন। শনিবার পাত্রসায়র থানার পুলিস তাকে গ্রেপ্তার করেছে। তার বাড়ি পূর্ব বর্ধমানের খণ্ডঘোষ থানার শ্যামাডাঙা গ্রামে।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশ কিছুদিন আগে পূর্ব বর্ধমানের খণ্ডঘোষ থানার শ্যামাডাঙা গ্রামের এক বাসিন্দার নামে পাত্রসায়র থানায় একটি অভিযোগপত্র জমা পড়ে। অভিযোগের বয়ানে তিনি জানান, তাঁকে পাত্রসায়র থানার পানপুকুরে শ্বশুরবাড়িতে জোরপূর্বক আটকে রাখা হয়েছে। অভিযোগ পাওয়ার পর পুলিস তদন্তে নামে। কিন্তু, অভিযোগের স্বপক্ষে তেমন কোনও তথ্য হাতে পায়নি। তাই কোনও ব্যবস্থা পুলিস নেয়নি। কিন্তু, পাত্রসায়র থানার পুলিস কোনও পদক্ষেপ না নেওয়ায় একই অভিযোগ মহকুমা পুলিস অফিসার এবং জেলা পুলিস সুপারের কাছে জমা পড়ে। সেবারেও তদন্তে নেমে পুলিস তেমন কোনও তথ্য উদ্ধার করতে পারেনি। এরপরেই জেলাপুলিসের নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে পুলিসের আইজিকে ডাকযোগে একই অভিযোগপত্র পাঠানো হয়। এরপরেই পুলিস নড়েচড়ে বসে। পানপুকুরে গিয়ে পুলিস আধিকারিকরা ওই ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। তখনই তাঁরা জানতে পারেন, শ্বশুরবাড়িতে ঘরজামাই থাকা নিয়ে তাঁর ভাইয়ের আপত্তি রয়েছে। এরপরেই পুলিস ছ’খানা অভিযোগপত্র তাঁর সামনে তুলে ধরতেই তিনি ভাইয়ের হাতের লেখা চিনতে পারেন। তাঁর সই নকল করে তাঁরই ভাই মুন্সি আমির হোসেনই যে এমন কাণ্ড ঘটিয়েছে, সে ব্যাপারে তিনি নিশ্চিত হন। এরপরেই পুলিস মুন্সি আমির হোসেনকে খণ্ডঘোষের শ্যামাডাঙা থেকে গ্রেপ্তার করে।