অফিস টাইমে মোমিনপুর মোড় পেরতে অতিরিক্ত ১ ঘণ্টা, তিতিবিরক্ত যাত্রীরা, গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা খানাখন্দে ভরা, যানজট সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে পুলিস
বর্তমান | ০৪ আগস্ট ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: ‘সকাল ৯টা ১০। তারাতলা ব্রিজে উঠেই দেখলাম জ্যাম। যানজট ছাড়িয়েছে মাঝেরহাট ব্রিজ। তারপর ব্রিজ, রিমাউন্ট রোড ক্রসিং, মোমিনপুর মোড় পেরিয়ে লালবাতি মোড় যখন পৌঁছলাম তখন ঘড়ির কাঁটা ১০টা বাজতে পাঁচ মিনিট। অফিস শুরু ১০টায়। বিবাদী বাগ কখন পৌঁছব তাই নিয়ে দুশ্চিন্তা শুরু হয়ে গিয়েছে’- বললেন বেহালার বাসিন্দা সৌমেন্দ্র চক্রবর্তী।
তিনি গাড়ি নিয়েও সময়ে পৌঁছতে পারেননি। ভোগান্তি চরমে উঠেছিল। বেহালা থেকে তারাতলা হয়ে মোমিনপুর মোড় পার করতে এই পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে এই ব্যক্তির। তিনি একা নন, এ জ্যামে ভুগতে হচ্ছে এ রাস্তার সব নিত্যযাত্রীকে। খানাখন্দে ভরা ডায়মন্ড হারবার রোডের এই অংশের হাল বেহাল। গর্তের গভীরতা অন্তত ৬-৮ ইঞ্চি। বৃষ্টি পড়লে জল ভর্তি গর্তের গভীরতা বোঝা দায়। গাড়ির চাকা পড়লে দুর্ঘটনার প্রবল আশঙ্কা। এর সঙ্গে পথজুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পিচ, স্টোন চিপ। বাইক দুর্ঘটনায় পড়ছে। মানুষের বক্তব্য, শহরের এই গুরুত্বপূর্ণ মোড় পার করতে অতিরিক্ত এক ঘণ্টা হাতে নিয়ে বেরতে হচ্ছে।
ইতিমধ্যেই মাঝেরহাট ব্রিজ ভাঙতে শুরু করেছে। আলিপুরের বর্ধমান রোড সংলগ্ন এই ব্রিজের পিচ ক্ষয়ে গিয়েছে। ভারী যান চলাচলের জেরে ভেঙেছে একাংশ। সেখান থেকেই রাস্তার দুর্বিষহ অবস্থা শুরু। অর্ডিন্যান্স ফ্যাক্টরির সামনেও একাধিক জায়গা ভগ্নপ্রায়। রাস্তার বেহাল অবস্থা রিমাউন্ট রোড মোড় পার করলেই মেলে। পেন্ডুলামের মতো একপাশ থেকে আর এক পাশে দুলতে হয় বাসযাত্রীদের। ছোট গাড়ির চালকদের মনে ভয়, ঢেউ খেলানো রাস্তা গাড়ির বাম্পারে ধাক্কা খাবে না তো? মোমিনপুর মোড় পেরিয়ে ডানদিকে হাজরামুখী রাস্তায় ঢুকলেও নিস্তার নেই। সেখানেও বড় আকারের গর্ত। সুস্মিতা ঘোষ দস্তিদার নামে স্থানীয় এক বাসিন্দার দাবি, এই বর্ষার মধ্যে একবার রাস্তা মেরামত করা হয়েছিল। রিমাউন্ট রোড থেকে মোমিনপুর মোড় এবং সেখান থেকে ডান দিকে আর্মি ক্যাম্পের গেট পর্যন্ত পিচ দিয়ে রাস্তা সারাই হয়। কিন্তু এক মাসের মধ্যে পিচের রাস্তা ভেঙে গিয়ে কঙ্কালসার অবস্থা তৈরি হয়েছে। এই কথাই বলছেন অন্যান্য বাসিন্দারা, নিত্যযাত্রীরা। ভাঙা রাস্তায় তীব্র যানজট হচ্ছে। সমস্যায় পড়ছে পুলিসও। ট্রাফিক সামলাতে কালঘাম ছুটে যাচ্ছে ট্রাফিক বিভাগের। অফিস টাইমের চাপ সামলাতে ডায়মন্ড হারবার রোডের দু’দিক (আপ ও ডাউন লেন) ব্যবহার করতে বাধ্য হচ্ছে পুলিস। তবে তাতেও কাটছে না যানজট।