কোন্নগরে তৃণমূল নেতা খুনে এখনও রহস্য ধন্দে তদন্তকারীরা, পুলিসের জালে চার দুষ্কৃতী
বর্তমান | ০৪ আগস্ট ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, চুঁচুড়া: কুখ্যাত অপরাধী সহ দুই সুপারি কিলারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কিন্তু কোন্নগরের কানাইপুরের তৃণমূল নেতা পিন্টু চক্রবর্তী খুনের কিনারা এখনও হয়নি। রহস্যের জাল গুটিয়ে আনতে গিয়ে ধন্দে পড়েছেন পুলিস অফিসাররা। পুলিসের একাংশের দাবি, একের পর এক অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হলেও আরও কয়েকজনের জড়িত থাকার ইঙ্গিত মিলেছে। যদিও তা সন্দেহের বশেই। এই সন্দেহ দূর করতেই তদন্ত চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এদিকে, ওই খুনের ঘটনায় সমস্ত অপরাধীকে প্রকাশ্যে আনা এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে রবিবার বিকেলে কানাইপুরে মিছিল করে তৃণমূল। সেখানে মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী, কোন্নগর পুরসভার চেয়ারম্যান স্বপন দাস সহ নেতৃত্ব উপস্থিত ছিলেন।
তৃণমূল নেতা খুনের ঘটনায় আগেই কুখ্যাত দুষ্কৃতী বিশ্বনাথ দাস ওরফে বিশাকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিস। রবিবার তার দাদা ভোলানাথ দাস ওরফে বাঘাকে গ্রেপ্তার করা হয়। বাঁকুড়ার সোনামুখী থেকে তাকে ধরে আনা হয়েছে। ষাট পেরনো এই দুষ্কৃতী ফের সক্রিয় হয়ে ওঠায় সাধারণ মানুষের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। পুলিসের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, একদা হুব্বা শ্যামল নামে আরেক দুষ্কৃতীর সঙ্গে সংঘাতের আবহে কিছুটা নিষ্ক্রিয় হয়ে গিয়েছিল বাঘা। পরে কলকাতা লাগোয়া একটি এলাকায় দীর্ঘ বছর বাস করে সে। কয়েকবছর আগে সে বাঁকুড়ায় ঘাঁটি তৈরি করেছিল। তার ভাই বিশা কোন্নগরেই থাকত। পুলিসের দাবি, জিজ্ঞাসাবাদে বিশা দাবি করে যে, দাদা বাঘাই তাকে সুপারি কিলার দিয়ে পিন্টুবাবুকে খুনের দায়িত্ব দিয়েছিল। কিন্তু এতবছর ‘শীতঘুমে’ থাকার পর বাঘা বা বিশা হঠাৎ সক্রিয় হয়ে উঠল কেন? সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে ধন্দ পড়েছেন পুলিস অফিসার তেকে সাধারণ মানুষ।
জমি সংক্রান্ত বিবাদেই পিন্টুবাবু খুন হয়েছেন বলে পুলিস দাবি করেছে। কিন্তু ঠিক কী ধরনের বিবাদ, তা এখনও স্পষ্ট হয়নি। চন্দননগর কমিশনারেটের এক কর্তা বলেন, তদন্ত চলছে। খুনের ঘটনায় যাদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ যোগ মিলেছে, ইতিমধ্যেই তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের জেরা করে ঘটনার মূলে পৌঁছনোর চেষ্টা চলছে। কোন্নগর পুরসভার চেয়ারম্যান তৃণমূল নেতা স্বপন দাস বলেন, বাঘা ও বিশা’র মতো দুষ্কৃতীদের সক্রিয় হওয়ার ঘটনা উদ্বেগজনক। আমরা এদিন মিছিল করেছি। সমস্ত অপরাধীকে প্রকাশ্যে আনা ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানানো হয়েছে।
গত বুধবার কোন্নগর কানাইপুরের অটোস্ট্যান্ডের কাছে নৃশংসভাবে কুপিয়ে খুন করা হয় স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য তথা তৃণমূল নেতা পিন্টু চক্রবর্তীকে। তদন্তে নেমে পুলিস শনিবার দুই সুপারি কিলার বিশ্বজিৎ প্রামাণিক ও দীপক মণ্ডলকে বারাসত থেকে পাকড়াও করে। তাদের জেরা করে কানাইপুরের কুখ্যাত দুষ্কৃতী বিশার হদিশ মেলে। রবিবার তিনজনকে আদালতে তুলে বিশাকে হেফাজতে নিয়েছে পুলিস। অন্যদিকে, দুই সুপারি কিলারকে জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। এরই মাঝে রবিবার সকালে বিশার দাদা আরেক কুখ্যাত দুষ্কৃতী বাঘা ধরা পড়ায় তদন্ত নতুন দিকে