নিজস্ব প্রতিনিধি, আসানসোল: দুই বালকের মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ অণ্ডাল থানার উখরা। রবিবার গভীর রাতে শ্যামসুন্দর কোলিয়ারি এলাকার একটি জলাশয় থেকে তাদের মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। পুলিস জানিয়েছে, মৃতদের নাম রোহন পাসোয়ান(১১) ও আদর্শ হরিজন(৮)। রবিবার বিকেলে বন্ধুদের সঙ্গে ওই কোলিয়ারি এলাকার স্নানে গিয়েছিল তারা। রোহন ও আদর্শ ডুবে গেলেও তাদের তিন বন্ধু বিষয়টি কাউকে জানায়নি। রাতেও দুই নাবালক বাড়ি না ফেরায় পুলিসে খবর দেওয়া হয়। নাবালকের সঙ্গীদের জেরা করে পুলিস প্রকৃত ঘটনা জানতে পারে। এরপর পুলিস দুই বালকের দেহ উদ্ধার করে। এদিকে, আসানসোল উত্তর থানা এলাকায় নুনিয়া নদীতে স্নানে নেমে মহম্মদ রেহান নামে এক নবম শ্রেণির পড়ুয়া তলিয়ে গিয়েছে। এখনও তার হদিস মেলেনি। উখরার মর্মান্তিক ঘটনায় রেল ও ইসিএলকে দায়ী করেছেন এক মৃত বালকের বাবা ও শ্রমিক নেতারা। শ্যামসুন্দরপুর কোলিয়ারির কয়লা খাদান শ্রমিক কংগ্রেসের সম্পাদক সৌমিক মজুমদার বলেন, বাঙ্কোলা থেকে ঝাঁঝরা অবধি কয়লা পরিবহণ করতে রেললাইন পাতা হচ্ছে। সেজন্য ইসিএলের জমি থেকে মাটি কেটে গর্ত করা হয়েছে। সেখানে পড়েই দুই নাবালকের মৃত্যু হয়েছে। বিধায়কের নেতৃত্বে আমরা এনিয়ে ধারাবাহিক আন্দোলন করি। মৃত রোহনের বাবা রোহিত পাসোয়ান বলেন, এতদিন এলাকার গবাদি পশু ওই গর্তে পড়ে মারা যাচ্ছিল। এবার দুই বালকের প্রাণ গেল। যদিও স্থানীয় উখরা ফাঁড়ির পুলিসের দাবি, কুমারখোল পুকুর থেকে দু’টি দেহ উদ্ধার হয়েছে। গর্তটি তার পাশে রয়েছে। ইসিএলের স্থানীয় জেনারেল ম্যানেজার এবং সংস্থার ডিরেক্টর(টেকনিক্যাল) নীলাদ্রি রায়ের সঙ্গে যোগাযোগ সম্ভব হয়নি। রেলের এক আধিকারিক বলেন, ইসিএলের জমিতে কী হয়েছে, আমার জানা নেই।
পুলিস জানিয়েছে, ডুবে যাওয়া বালকদের সঙ্গীরা ভয় পেয়ে গিয়েছিল। তাই প্রথমে তারা দুই বন্ধুর ডুবে যাওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে। তারা অন্য একটি ডোবার নাম বলে। প্রথমে সেখানে উদ্ধারকাজ চালানো হয়। পরে এই জলাশয়ের হদিস মেলে। সোমবার দুপুরে স্কুল ফাঁকি দিয়ে আসানসোল উত্তর থানার নুনিয়া বুড়ির ঘাটে গিয়েছিল কয়েকজন ছাত্র। নদীতে নামতেই মহম্মদ রেহান নামে এক ছাত্র তলিয়ে যায়। তার বন্ধুরা সেই ঘটনা দেখেই এলাকা থেকে পালিয়ে যায়। বিষয়টি নিয়ে পুলিস একজনকে জিজ্ঞাসাবাদও করে। সন্ধ্যা পর্যন্ত নদীতে নৌকা নামিয়ে রেহানের খোঁজে তল্লাশি চালানো হয়েছে। কিন্তু তার সন্ধান মেলেনি।