আইএসএল নিয়ে চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে সোমবার প্রথম দলের ফুটবলার-সহ অন্যান্য কর্মীদের বেতন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বেঙ্গালুরু এফসি। তার আগে ক্লাবের কাজকর্ম বন্ধ রাখার কথা জানিয়েছিল ওড়িশা এফসিও। এ বারে সেই তালিকায় নাম লেখাল দু’বারের আইএসএল জয়ী ক্লাব চেন্নাইয়িন এফসি। আইএসএল নিয়ে ধোঁয়াশার জেরে ক্লাবের সমস্ত কাজকর্ম স্থগিত রাখার কথা সমাজমাধ্যমে ঘোষণা করেছে চেন্নাইয়িন এফসি।
সমাজমাধ্যমে ক্লাবের কাজকর্ম বন্ধ হওয়া নিয়ে চেন্নাইয়িন এফসি লিখেছে, “আইএসএলের ভবিষ্যৎ নিয়ে চরম অনিশ্চয়তার জেরে চেন্নাইয়িন এফসির পক্ষে ক্লাবের স্বাভাবিক কর্মকাণ্ড চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে। ফলে সাময়িক ভাবে ক্লাবের তরফে সব কাজ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।” আরও বলা হয়েছে, “চেন্নাইয়িন এফসি শুধু একটি ফুটবল ক্লাবই নয়, এখানে সকলেই এক পরিবারের মতো। আমরা এই কঠিন সময়ে ফুটবলার, কোচ, সাপোর্ট স্টাফদের পরিবারের পাশে রয়েছি। সবসময় যোগাযোগ রেখে চলেছি।” আরও জানা গিয়েছে, এখনও জুলাই মাসের বেতন পাননি চেন্নাইয়িন এফসির ফুটবলাররা।
তার আগে আইএসএলের অনিশ্চয়তা প্রসঙ্গে বেঙ্গালুরু এফসির তরফে সমাজমাধ্যমে জানানো জানিয়েছিল, তারা প্রথম দলের ফুটবলার ও কর্মীদের বেতন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তার আগে ওড়িশা এফসিও জানিয়েছিল, ক্লাবের সমস্ত কাজকর্ম তারা স্থগিত করছে।
আজ বৃহস্পতিবার আইএসএলের ক্লাবগুলির সঙ্গে বৈঠকে বসবেন ফেডারেশনের সভাপতি কল্যাণ চৌবে। আগেই চিঠি দিয়ে আটটি ক্লাবের প্রতিনিধিরা আইএসএল সম্পর্কে ফেডারেশনের প্রকৃত অবস্থান জানার কথা বলেছিলেন। সেই ক্লাবরা হল- বেঙ্গালুরু এফসি, জামশেদপুর এফসি, এফসি গোয়া, হায়দরাবাদ এফসি, কেরল ব্লাস্টার্স এফসি, নর্থ ইস্ট ইউনাইটেড এফসি, ওড়িশা এফসি এবং পঞ্জাব এফসি। এখন এই ক্লাবদের দিকে তাকিয়ে ফেডারেশন।
কলকাতার তিন প্রধানের অবস্থান কী? জানা গিয়েছে মহমেডান স্পোর্টিংয়ের সিইও সৌগত ভট্টাচার্য ইতিমধ্যেই দিল্লিতে পৌঁছে গিয়েছেন। তিনি বাকি ক্লাবগুলির সঙ্গে সশরীরে বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন। বাকি দুই প্রধান অর্থাৎ মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট ও ইস্টবেঙ্গলের প্রতিনিধিরা ভার্চুয়ালি উপস্থিত থাকতে পারেন।
মোহনবাগান সুপার জায়ান্টের সিইও এই মুহূর্তে দেশের বাইরে রয়েছেন। ফলে তিনি সশরীরে উপস্থিত থাকতে পারবেন না। কিন্তু ভার্চুয়ালি বৈঠকে যোগ দেবেন। ইস্টবেঙ্গলের এক কর্তা বুধবার বললেন, “আমাদের প্রতিনিধিও দিল্লিতে সশরীরে থাকবেন না। সম্ভবত ভার্চুয়ালি যোগ দেবেন।”
গত মাসে ফেডারেশনের সভাপতি জানিয়েছিলেন, আইএসএল হবেই। তবে কবে থেকে এই প্রতিযোগিতা শুরু হবে তা তিনি বলতে পারেননি। কারণ সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ না আসায় ফেডারেশনের নতুন গঠনতন্ত্র এখনও চূড়ান্ত হয়নি। এই গঠনতন্ত্র মেনেই তৈরি হবে নতুন কমিটি, যারা আইএসএলের আয়োজক ফুটবল স্পোর্টস ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড (এফএসডিএল)-এর সঙ্গে নতুন মাস্টার রাইটস এগ্রিমেন্টে (এমআরএ) স্বাক্ষর করবে।
প্রসঙ্গত ২০১০ সালে এফএসডিএল এবং সর্বভারতীয় ফুটবলর ফেডারেশনের মধ্যে ১৫ বছরের জন্য এমআরএ স্বাক্ষরিত হয়েছিল। যা শেষ হয়ে যাচ্ছে আগামী ১৮ ডিসেম্বর। এই চুক্তির নবীকরণ নিয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও নিশ্চয়তা পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে এই পর্যায়ে সেপ্টেম্বর থেকে আইএসএল শুরু হলেও ডিসেম্বরের পরে কী ভাবে চলবে তা নিয়ে বিভিন্ন মহল থেকেপ্রশ্ন উঠছে।
ফলে এখন দেখার দিল্লিতে ফেডারেশনের বৈঠকে আইএসএল নিয়ে জট কাটে কি না।