• কানে হেডফোন দিয়ে রেললাইন পেরনোই কাল, বারাসতে ট্রেনের ধাক্কায় মৃত্যু বধূর
    প্রতিদিন | ০৮ আগস্ট ২০২৫
  • অর্ণব দাস, বারাসত: শত সতর্কতা প্রচার সত্ত্বেও কোনওমতেই এড়ানো যাচ্ছে না বিপদ। কানে হেডফোন লাগিয়ে রেললাইন পেরনোর সময় ট্রেনের ধাক্কায় প্রাণ হারালেন গৃহবধূ। বৃহস্পতিবার বারাসত ১২ নম্বর রেলগেট সংলগ্ন এলাকায় দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। আর তারপর আন্ডারপাসের সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে ফের প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, আন্ডারপাসটি ব্যবহার করা গেলে কাউকে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার করতে হতো না এবং প্রাণহানিও ঘটত না।

    স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার আনুমানিক সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ ১২ নম্বর রেলগেটের দক্ষিণ অংশে রেললাইন পেরচ্ছিলেন এলাকার বাসিন্দা ঝুমা মজুমদার। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, তাঁর কানে ছিল হেডফোন। লাইন পেরনোর সময়েই ডাউন দত্তপুকুর-শিয়ালদহ লোকাল দ্রুতগতিতে এসে ধাক্কা দেয়। ট্রেনের সামনে কাউ-ক্যাচারে আটকে গিয়ে কিছুটা যাওয়ার পরেই ছিটকে যান গৃহবধূ ঝুমা। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে মৃত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে বারাসত জিআরপি। রেল পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত গৃহবধূর বাপেরবাড়ি মধ্যমগ্রামে। তাঁর বিয়ে হয়েছিল বারাসতে। মৃতদেহের কাছ থেকেই একটি মোবাইল উদ্ধার করা হয়েছে। তবে ঘটনাস্থল থেকে কোনও হেডফোন পায়নি জিআরপি। মৃতের বাবা এবং স্বামী এসে দেহ শনাক্ত করেছেন বলে জানা গিয়েছে। ঘটনার পরপরই স্থানীয়রা আন্ডারপাস সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণের দাবি তুলেছেন।

    প্রসঙ্গত, বারাসতের কলোনিমোড়, চাঁপাডালিমোড় সংযোগকারী ফ্লাইওভার তৈরির পর পায়ে হেঁটে ১২ নম্বর রেলগেট পারাপারের জন্য তৈরি হয়েছিল আন্ডারপাস। কিন্তু নিকাশি ব্যবস্থা ঠিক না থাকায় প্রতি বর্ষায় জল জমে এই আন্ডারপাসের অবস্থা বেহাল হয়ে পড়ে। ফলে রেলগেট পারাপার দুর্বিসহ হয়ে পড়ে সেখানকার বাসিন্দাদের কাছে। একইসঙ্গে এখানে নেই আলো ও সিসিটিভি ক্যামেরার নজরদারি। ফলে সন্ধ্যার পর থেকে আন্ডারপাস পারাপার করতে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে হয় সকলকে। সম্প্রতি ঝুঁকি নিয়ে রেল লাইন পারাপার করতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছিলেন এক মহিলা আইনজীবী। কলেজ পড়ুয়া এক তরুণীও কয়েকদিন আগে এই এলাকায় শ্লীলতাহানির স্বীকার হয়েছিলেন বলে অভিযোগ। এই পরিস্থিতিতে নাগরিকদের এই সমস্যা মেটাতে রেলের আধিকারিকের সঙ্গে দেখা করে ডেপুটেশন জমা দিয়েছিলেন ১০নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর দেবব্রত পাল। কিন্তু সমাধান যে হয়নি, আজকের দুর্ঘটনাই তার প্রমাণ।
  • Link to this news (প্রতিদিন)