যোগীরাজ্যে বাংলাদেশি সন্দেহে বাংলার শ্রমিককে বেধড়ক মার পুলিশের! ভর্তি হাসপাতালে
প্রতিদিন | ০৮ আগস্ট ২০২৫
বিক্রম রায়, কোচবিহার: ফের ভিন রাজ্যে বাঙালি পরিযায়ী শ্রমিককে বাংলাদেশি বলে পুলিশি অত্যাচারের অভিযোগ। এবার ঘটনাস্থল যোগী রাজ্যের উত্তরপ্রদেশ। গুরুত্বর অসুস্থ কোচবিহারের ওই শ্রমিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ঘটনায় বাঙালি হেনস্তা নিয়ে সরব তৃণমূল।
আক্রান্ত শ্রমিকের নাম মোমিন মিঞা। তিনি শীতলকুচির লালবাজারের বাসিন্দা। গত চারবছর ধরে ভিন রাজ্যে রাজমিস্ত্রী হিসাবে কাজ করেন। ওই শ্রমিক ও তাঁর সতীর্থদের অভিযোগ, গত রবিবার সকালে কাজে যাওয়ার সময় পুলিশের পোষাক পরিহিত বেশ কয়েকজন তুলে নিয়ে যায়। বলা হয় বাংলাদেশি সন্দেহে থানায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এই ঘটনার প্রতিবাদ করেন শ্রমিক। বলেন, বাংলায় কথা বললেই কি বাংলাদেশি?
অভিযোগ এরপরই তাঁকে থানার বদলে অন্য জায়গায় নিয়ে গিয়ে ব্যাপক মারধর করা হয়। ১০ হাজার টাকা নেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ। তারপর তাঁকে দিল্লির সীমান্ত এলাকায় ফেলে যাওয়া বলে অভিযোগ। তারপর তাঁর সতীর্থরা মোমিনকে উদ্ধার করে কোচবিহারের ট্রেনে চেপে বাড়ি ফিরে আসেন। বুধবার রাতে শীতলকুচিতে নিজের বাড়িতে ফেরে।
তারপর অসুস্থ বোধ করায় ওই শ্রমিককে এমজেএন মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। মোমিনের এক শ্রমিক বলেন, “রবিবার ও একটু তাডাতাড়ি কাজে বেরিয়েছিল। রাস্তা থেকে পুলিশের পোশাক পরিহিত চারজন ওকে তুলে নিয়ে যায়। ১০টা নাগাদ আমাকে ফোন করে মোমিন বিষয়টি জানায়। পরিচয়পত্র ছবি তুলে পাঠিয়ে দিই। পরে ১০ হাজার টাকাও পাঠাই। ওকে মারধর করে দিল্লির সীমান্ত এলাকায় ফেলে দিয়ে যায়। উদ্ধার করে আমরা শীতলকুচি ফিরে আসি।”
এই ঘটনার পর ভিন রাজ্যে বাঙালি শ্রমিকদের উপর অত্যাচারের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। ‘আক্রান্ত’ শ্রমিকের সঙ্গে দেখা করেছেন জেলা তৃণমূলের সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক। হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে তিনি বলেন, “চারবছর ধরে ও কাজ করে। বাংলা বলায় ওকে তুলে নিয়ে অত্যাচার চালানো হয়েছে। পরিবারের পাশে আছি। পুলিশের বিরুদ্ধে স্থানীয় থানায় অভিযোগ দায়ের করব।”
অন্যদিকে, মালদহের কালিয়াচকের বাসিন্দা আমির শেখকে বিজেপি শাসিত রাজস্থানের পুলিশ বেআইনিভাবে আটক করে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয় বলে অভিযোগ উঠেছিল। এবার সেই ঘটনার বিরুদ্ধে কলকাতা হাই কোর্টে মামলা দায়ের করেছে তাঁর বাবা জিয়েম শেখ। সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করে একথা জানিয়েছেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সামিরুল ইসলাম।