বাড়ি থেকে অ্যান্টিক ল্যাম্পশেড, দুর্মূল্য বাসন চুরি শ্যামপুকুরের ঘটনায় পাঁচ মাস পর গ্রেপ্তার ২ অভিযুক্ত
বর্তমান | ০৮ আগস্ট ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: বাড়িতে একাই থাকেন মালকিন। সম্প্রতি তিনি বাইরে ঘুরতে গিয়েছিলেন। সেই সুযোগে উত্তর কলকাতার অভিজাত বাড়ি থেকে অ্যান্টিক ল্যাম্পশেড, দামি বাসনপত্র সহ একাধিক দুর্মূল্য সামগ্রী খোয়া যায়। মালকিনের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে পাঁচ মাস পর অভিযুক্তদের সন্ধান পেল পুলিস। শ্যামপুকুর থানার হাত থেকে লালবাজারের ওয়াচ শাখা তদন্তের ভার নেওয়ার পরেই মেলে সাফল্য। বুধবার কাঁকুড়গাছি মোড় থেকে দুই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিস। তারা জানিয়েছে, ধৃতদের নাম মহম্মদ রাজ ও শিবশঙ্কর ঘোষ। দু’জনেই মাঝবয়সি। বৃহস্পতিবার ধৃতদের আদালতে পেশ করা হলে বিচারক পুলিস হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।
ঘটনা হল, শ্যামপুকুর থানা এলাকার রামকান্ত বোস স্ট্রিটের বাসিন্দা ইশিতা সেন। গত মার্চ মাসে তিনি বেড়াতে গিয়েছিলেন। বাড়ি ফাঁকাই ছিল। সেই সুযোগে বাড়ির পিছনের জানালার গ্রিল কেটে ভিতরে ঢোকে দুই দুষ্কৃতী। ঘরে ছিল ১০০ বছরের বেশি পুরনো একটি ‘অ্যান্টিক’ ল্যাম্পশেড। যার বর্তমান বাজারদর লক্ষাধিক টাকা। সেটি ছাড়াও ২০ কেজি ওজনের কাঁসার বাসনপত্র, ঠাকুরের সিংহাসন থেকে অষ্টধাতুর গণেশ মূর্তি, পুরনো কয়েন সহ নানা জিনিসপত্র চুরি করে চম্পট দেয় তারা। পরের দিনই সেগুলি তারা বিক্রি করে দেয়। ২৯ মার্চ বাড়ি ফেরেন ইশিতাদেবী। গোটা বাড়ির লণ্ডভণ্ড পরিস্থিতি দেখে হতবাক হয়ে যান। দেখেন, সমস্ত পুরনো ও দুর্মূল্য জিনিসপত্র গায়েব। তখন শ্যামপুকুর থানার দ্বারস্থ হন তিনি। তারপর প্রায় চার মাস কেটে গেলেও দুষ্কৃতীদের পাকড়াও করতে ব্যর্থ হয় থানা। এরপরেই লালবাজারের নির্দেশে তদন্তভার নেয় গোয়েন্দা বিভাগ। শহরের অ্যান্টিক জিনিসপত্র কেনাবেচার দোকানগুলিতে খোঁজখবর নিতে শুরু করে ওয়াচ শাখা। সেই সঙ্গে ঘটনাস্থলের সিসি ক্যামেরার ফুটেজও সংগ্রহ করা হয়। অ্যান্টিকের দোকান ও ঘটনাস্থলের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ মিলিয়ে দু’জনকে চিহ্নিত করে পুলিস। তারপর গোপন সূত্রে খবর পেয়ে বুধবার রাতে রাজ ও শিবশঙ্করকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা বিভাগ। যদিও ধৃতদের থেকে চুরি যাওয়া কোনও সামগ্রী এখনও উদ্ধার করা যায়নি। লালবাজরের অনুমান, অভিযোগকারিণীর বাড়িতে যে বহু দুষ্প্রাপ্য ও অ্যান্টিক জিনিসপত্র রয়েছে, এই খবর আগে থেকেই ছিল দুষ্কৃতীদের কাছে। কে বা কারা দিল সেই খবর? ধৃতদের জেরা করে সেটাই জানতে চাইছেন তদন্তকারীরা। চুরি যাওয়া জিনিস উদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিস।